
গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ এ ২য় প্রজ্ঞাপন থেকে বাদ পড়া ২২৭ জনের আবারও পুনতদন্ত হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে তালিকা প্রস্তুত করে সিনিয়র সচিবের স্বাক্ষর শেষে ফাইল প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পাঠানো হয় গত রবিবার (১৯ জানুয়ারি)। উপদেষ্টা মহোদয়ের ব্যস্ততার কারণে সুইজারল্যান্ড সফরের আগে স্বাক্ষর করে যেতে পারেন নি।
গত ১৫ জানুয়ারি ১৮৯৬ জন যোগদান করেছে, সবার সাথেই ২২৭ জনের যোগদানের কথা। এই ২২৭ জন ও তাদের পরিবার মানসিক পীড়ার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।
তারা গত সপ্তাহে প্রজ্ঞাপন আশা করেছিল। প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় দেশে ফিরে স্বাক্ষর করে দিবেন এবং আগামী রবিবার ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ একটা প্রজ্ঞাপন হয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যোগদান করতে পারবে বলে ৪৩তম বিসিএস এ বাদ পড়া ২২৭ জন এবং তাদের পরিবার আশা ব্যক্ত করেছেন।
গত ১৫ অক্টোবর, ২০২৪- ৪৩তম বিসিএস এর প্রথম গেজেট প্রকাশ (গেজেট থেকে বাদ পড়েন ৫৯ জন ) এই গেজেট মোতাবেক তাদের জয়নিং তারিখ নির্ধারণ হয়ছিল ১৭ নভেম্বর, ২০২৪।
এদিকে গত ২৮ অক্টোবর, ২০২৪- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নোটিশ এর মাধ্যমে জইনিং ডেট পিছিয়ে ১ জনুয়ারি, ২০২৫ নির্ধারণ করে। ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪- ৪৩ তম বিসিএস যখন তারা জইন এর অপেক্ষায় তখন ঠিক ২ দিন আগে আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে যেখানে ২২৭ জন এর গেজেট বাতিল করা হয়।
৪৩ তম বিসিএস বাদ পড়া ক্যাডারা বলেন ,২২৭ জন এর মাঝে ২০৮ জন প্রথম গেজেট এ ছিলেন এবং আগের গেজেট এ বাতিল করা ৫৯ জন এর মাঝে ৪১ জন নতুন গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করে।
১ জানুয়ারী দ্বিতীয় গেজেটে বাদ পড়া ২২৭ জন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক পুনর্মূল্যায়ন এর আবেদন করেন তারা।
অন্যদিকে বাদ পড়া ৪৩ তম বিসিএস ক্যাডাররা আরও বলেন ৯ জানুয়ারি, ২০২৫- NSI, DGFI প্রতিনিধি এর সাথে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বৈঠক এবং মিটিং শেষে সিনিওর সচিব স্যার মিডিয়ার কাছে বক্তব্য পেশ করেন যে, 1. ফৌজদারি অপরাধ 2. রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ এবং 3. একাডেমিক জীবনে বহিষ্কারাদেশ এই তিন অপরাধ না থাকলে ২-৩ কর্মদিবস এর মাঝে নিরপরাধ যারা তাদের সবার গেজেট হবে এবং মেজরিটি সংখ্যক হবে বলেও আশ্বাস দেন তাদের। পুনরায় যাচাই বাছাই শেষে সংস্থা কতৃক মন্ত্রণালয় এ আবার ২২৭ জন এর তথ্য প্রেরণ করা হয় এবং মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশের উদ্দেশ্যে নতুন করে ১ টি তালিকা প্রস্তুত করে।
৪৩তম বিসিএস বাদ পড়া ক্যাডারদের প্রাপ্ত তথ্য মতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতকৃত তালিকা প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয় (১৯ জানুয়ারি প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী)
ধারণা করা হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের বিদেশ সফরের কারণে অদ্যাবধি ফাইলটি অনুমোদন করা হয় নি।
এদিকে ২৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরছেন। তারা আশাবাদী তাদের ফাইলটি প্রধান উপদেষ্টা দপ্তরের অনুমোদনের মাধ্যমে গেজেট প্রকাশ করা হবে।
দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদপড়া কয়েকজন তাদের হতাশা ও আশার কথা ব্যক্ত করে বলেছেন, আমাদের ফাইল গত ১৯ জানুয়ারি রবিবার থেকে প্রধান উপদেষ্টা দপ্তরে আছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সিনিয়র সচিব ড মোখলেসুর রহমান স্যার স্বাক্ষর করে আমাদের প্রজ্ঞাপনের সামারি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পাঠিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা স্যার এর ব্যস্ততার কারণে স্বাক্ষর করে যেতে পারেন নি, উনি দেশে ফিরবেন ২৪ জানুয়ারি, আমরা আশা করছিলাম গত রবিবার ২৬ জানুয়ারি আমরা প্রজ্ঞাপন পাব।
আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনুস স্যার এবং তরুণ উপদেষ্টা মাহফুজ আলম স্যার এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে রবিবার ফাইল স্বাক্ষর হয়ে আমরা প্রজ্ঞাপন পেতে পারি।
৪৩ তম বিসিএসের গেজেট বঞ্চিত হওয়া আরও একজন বলেন শুধু একটা কথাই মনে হয় এই দিন দেখার আগে মরে যাওয়া ভালো ছিল।৫ বছরের কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে আজ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছি ।হায়রে নিয়তির খেলা!!!
আরও একজন বলেন, ৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়ে যাওয়া আমাদের এই ২২৭ জনের সুখের দুয়ারে এমন দুঃখের অনল আজ আমাদের বাস্তুহারা করেছে, স্যার। আপনার দেয়া আশ্বাসে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি, কিন্তু আজও ঘরে ফিরতে পারিনি৷ দয়া করে আপনার দেয়া আশ্বাস দ্রুত বাস্তবায়ন করে আমাদের চাকরিটি ফিরিয়ে দিবেন, স্যার। আমরা ঘরে ফিরতে চাই।
৪৩ তম বিসিএস বাদ পড়া ট্যাক্সের একজন বলেছেন, আমার কাছের মানুষজন ট্যাক্সের প্রায় ৯০ জন জয়েন করেছেন, পদায়ন পেয়েছেন, ফেসবুকে দেখছি, বিষয়টা সুখকর। পরক্ষণেই বুকটা মোচড় দিয়ে উঠছে আমারও তো সেখানে থাকার কথা, অথচ আমি নেই। আমার কোন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ক্যাম্পাসে/ এলাকায় কোথাও নেই, কারো সাথে কখনো কোন অন্যায় করেছি এমন কেউ বলতে পারবেনা আশা করি। আমি দ্রুত প্রজ্ঞাপন চাই, আর ফেব্রুয়ারির শুরুতেই নিয়োগ চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা ড মো: ইউনুস স্যারের কাছে সকলের পক্ষ থেকে আবেদন করছি দেশে আসার পর পরই যাতে এই বিষয়টা দেখেন। প্রধান উপদেষ্টা দপ্তরে থাকা প্রজ্ঞাপনের ফাইল যাতে স্বাক্ষর হয়ে প্রজ্ঞাপন পাই আমরা।