
নির্বাচনী উত্তাপে কাঁপছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে স্মরণকালের সবচেয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট হচ্ছে এবার। সারাবিশ্বও তাকিয়ে আছে সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির ভোটের দিকে। এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস প্রবল চাপের মধ্যে পড়েছেন। তবে একদম শেষ প্রান্তে এসে অপ্রত্যাশিতভাবে সুখবর পেলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রায় ৩০ বছর ধরে আইওয়াকে রণক্ষেত্র রাজ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। গত দুটি নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এখানে বড় ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। এবারও এ রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষ ধরে নিয়েছিলেন, এ রাজ্যে ট্রাম্পই বিজয়ী হবেন।
সাধারণত এ রাজ্যে ভোটের প্রাক্কালে চূড়ান্ত জরিপ প্রকাশ করে ডেস মইনেস রেজিস্টার নামে একটি সংবাদপত্র। তাদের পক্ষে জরিপটি পরিচালনা করে থাকে খ্যাতিমান সংস্থা সেলজার। এ সংস্থাটি ফলাফলের পূর্বাভাস দেওয়ার অনন্য ক্ষমতার জন্য ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত।
তবে এবার সেলজারের নতুন জরিপে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিস ট্রাম্পকে নিরাপদ ব্যবধানে পেছনে ফেলেছেন। কমলার ৪৭ শতাংশ সমর্থনের বিপরীতে ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ৪৪ শতাংশ নাগরিক। গত শনিবার রাতে রেজিস্ট্রারের ওয়েবসাইটে ফলাফল পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই চারদিকে হইচই পড়ে যায়।
দেশটিতে সাড়ে ৭ কোটির বেশি মানুষ ইতোমধ্যে ভোট দিয়েছেন বলে ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী ল্যাব জানিয়েছে। তাদের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় ৪.১ কোটি ভোটার সশরীরে উপস্থিত হয়ে এবং ৩.৪ কোটিরও বেশি নাগরিক পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়েছেন।
আগাম ভোটে একমাত্র অ্যারিজোনায় এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে ভোটারদের মধ্যে ৪৬ শতাংশ বলেছেন, তারা ইতোমধ্যেই ভোট দিয়েছেন এবং ট্রাম্প ৫০ শতাংশের সমর্থন পেয়েছেন। এখানে কমলা পেয়েছেন ৪৬ শতাংশ ভোট।
এদিকে ৫৩৮/এবিসি নিউজের সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, কমলা জাতীয়ভাবে জরিপে গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। কমলা ৪৮ শতাংশ আর ট্রাম্প ৪৭ শতাংশ সমর্থন পাচ্ছেন।
সারাদেশে একজন প্রার্থী কতটা জনপ্রিয়, তা বোঝার জন্য জাতীয় জরিপগুলো একটি দরকারি নির্দেশিকা। তবে নির্বাচনের ফলাফলের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য এটি সেরা উপায় নয়। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে জনগণের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। এ ক্ষেত্রে ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবস্থা রয়েছে।
তবে ভোট ও কারচুপি সম্পর্কে গুজব, বিভ্রান্তিকর অভিযোগ এবং সরাসরি মিথ্যা নির্বাচনের আগে অভূতপূর্ব সংখ্যায় অনলাইন মাধ্যমকে প্লাবিত করছে। ব্যক্তি পর্যায়ের পাশাপাশি নিরপেক্ষ এবং রিপাবলিকান সমর্থকরা ভোটে কথিত কারচুপির শত শত ঘটনা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকেও এ ধরনের সামান্য সংখ্যক পোস্ট আসছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন, ডেমোক্র্যাটরা এ জরিপ নিয়ে যাতে বেশি মাতামাতি না করেন। কারণ, শনিবার আইওয়াতে আরেকটি জরিপের ফল প্রকাশিত হয়, যাতে ট্রাম্প এখনও এগিয়ে রয়েছেন। এমারসনের সেই জরিপে দেখা যায়, কমলার তুলনায় এ রাজ্যে ৯ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সূত্র : বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস ও গার্ডিয়ান