শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিরোনাম: বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর    কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ৫    শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ    মালয়েশিয়ান শ্রমবাজারে জনশক্তি পাঠানো বন্ধ হবে না     নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের বিশ্বাস জন্মেছে : ইসি     বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী    দেশের ১৫৭টি উপজেলায় আগামী ২১ মে সাধারণ ছুটি   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’
চক্ষুসেবায় যুগান্তকারী উদ্যোগ
ড. কাজী এরতেজা হাসান
প্রকাশ: শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম আপডেট: ১৩.০৩.২০২১ ১:৩৪ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ

চক্ষুসেবায় যুগান্তকারী উদ্যোগ

চক্ষুসেবায় যুগান্তকারী উদ্যোগ

স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে তাহলে অর্থবিত্ত থেকেও মানুষ নিজেকে অসুখী মনে করে। অঢেল অর্থবিত্তের চৌহদ্দির মধ্যে থেকে যদি মানুষ অসুস্থ থাকে, তাহলে তার কাছে এই অর্থবিত্তের কোনো মূল্য নেই। ফলে মানুষের স্বাস্থ্য ব্যাপারটি মোটেই গুরুত্বহীন নয়। অসুখ-বিসুখের সঙ্গে হাসপাতালের সম্পর্কটি বিশেষভাবে জড়িত। যেসব দেশে স্বাস্থ্যসেবার মান ভালো, সেসব দেশের মানুষের অসুখ-ব্যাধি কম। তাদের বেশির ভাগ ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী। কিন্তু বাংলাদেশের চিত্রটি সম্পূর্ণ বিপরীত। তবে একটা বিষয় জোর দিয়ে বলার সময় এসেছে যে, বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যখাতের উন্নতিতে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন।  যার ভিতরে রয়েছে নতুন নতুন হাসপাতাল নির্মাণ, চিকিৎসক সেবা কর্মী নিয়োগ। ফলশ্রুতিতে স্বাস্থ্যসেবার মান বর্তমানে অনেকটাই উন্নত হয়েছে। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সেই সুযোগ পৌঁছে গিয়েছে। এসব এলাকায় সরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যার মাধ্যমে গ্রামের সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। দেশের যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নতি হওয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার ফলশ্রুতিতে এসব কিছু সম্ভব হয়েছে। হাতের কাছে সরকারি হাসপাতাল আর চিকিৎসকদের পোস্টিং হওয়ায় এখন অনেককেই আর শহরে আসতে হয় না।  এবার সরকার প্রতিটি উপজেলায় বিশেষজ্ঞ চক্ষু সেবাও নিশ্চিত করতে কর্মসূচি প্রণয়ন করেছেন। যা খুবই জরুরি ছিল। গ্রামাঞ্চলের মানুষের সীমার মধ্যেই ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তারা কোথায় গেলে চোখের অসুখে সুচিকিৎসা পাবেন এটা তারা জানতে পারবেন। তাদের সব ভাবনার অবসান হয়েছে, ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’। যখন-তখন মন চাইলে এখানে গিয়ে চোখের চিকিৎসা করিয়ে আসতে পারবেন। বিশ্বনেতা-রাষ্ট্রনায়ক-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আর একটি উজ্জ্বলতর দৃষ্টান্ত হলো দেশের প্রতিটি জেলায় ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ। আমার গ্রাম আমার শহর এই নীতি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার পাঁচটি বিভাগের আওতাধীন ২০টি জেলার ৭০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’র কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন এবং এ সময় তিনি বলেন, যা খুবই স্মরণযোগ্য । বিশ্বনেতা-রাষ্ট্রনায়ক-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টারে কর্মরত দুজন সিনিয়র নার্স উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে রোগীর যাবতীয় তথ্য প্রেরণ করবেন।  এবং রোগীর সঙ্গে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসাসেবা  পাওয়ার নিশ্চয়তা নিশ্চিত করবেন। ইতোমধ্যে তার সরকার চক্ষু রোগীদের যেমন চোখে ছানি পড়া, গ্লকোমা বা ডায়বেটিস, রেটিনোপ্যাথি বা শিশুর চোখে আঘাতজনিত চিকিৎসা, পাওয়ার চশমার ব্যবস্থাপনা সরকারিভাবে দেওয়ার উদ্যাগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আধুনিক চক্ষু সেবার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।’


‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ স্থাপনের মধ্যদিয়ে একটি বিষয় প্রতীয়মান হচ্ছে, দেশবাসীর উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ব্যাপারে সরকার প্রধান দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ।  তারপরেও কিছু অঘটন  যা সরকারের আন্তরিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা বরাবরই দেখে আসছি। সরকার  দেশবাসীর উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ব্যাপারে যতটা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, কিন্তু স্বাস্থ্যখাতের কিছু মানুষের চরম অনিয়ম-দুর্নীতি, সরকারের লক্ষ্য অর্জনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে  তা এসব দুর্নীতিবাজের কারণে মাঠে মারা যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে নতুন কয়টি সরকারি মেডিকেল কলেজ নির্মাণ নিয়ে যে অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র জনসম্মুখে এসেছে তা দেখে দেশবাসী  আঁতকে উঠেছে। দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষিত জনেরা যদি এমন ফ্রিস্টাইলে দুর্নীতি করতে পারে তাহলে আমরা আস্থা রাখব কার ওপর? আবার ভয়ঙ্কর খবর হচ্ছে  স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিবাজরা নিজেদের স্বার্থে গড়ে তুলেছে দুর্নীতির সিন্ডিকেট। এদের ভয়ঙ্কর রূপ বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সিন্ডিকেটে কেবল উচ্চশিক্ষিতরাই নেই রয়েছে তাদের গাড়ি চালক পর্যন্ত। আব্দুল মালেকের ঘটনাটি আমরা দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করতে পারি। স্বল্প আয়ের একজন গাড়ির চালক হয়ে সে কোটি কোটি টাকার সম্পদ তৈরি করেছে। দেশপ্রেমিক কোনো মানুষ এতটা নিচে নামতে পারে তা মালেকের ঘটনা সামনে না এলে আমরা জানতে পারতাম না। তবে আশার কথা, সরকার এই শক্তিশালী সিন্ডিকেটের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।
সরকার হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করেছে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জনগণের টাকায় বেতন পান। কিন্তু অনেক চিকিৎসকের মনোভাব নানা প্রশ্নের জš§ দেয়; এসব চিকিৎসক হাসপাতালে ঠিকমতো না থেকে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালকে সময় দেন। এখান থেকে কাড়ি কাড়ি টাকা আসে বলে নিজের হাসপাতালকে যথাযথ সময় দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না। একটা সময় তো বহু চিকিৎসক ঠিকঠাকমতো হাসপাতালে উপস্থিত হতেন না। হাজিরার ব্যাপারে সরকার কঠোর হওয়ায় চিকিৎসকরা ঠিকই হাজিরা দিচ্ছে। এ থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার যে সরকার যদি কোনো ব্যাপারে কড়া অবস্থান নেয়, তাহলে কারোর সাধ্য নেই, সরকারি আইন উপেক্ষা করার। তবে একটি বিষয় কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না যে, রাজধানীর বড় বড় সরকারি হাসপাতালের বাথরুমের যে করুণদশা, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কর্তাব্যক্তিরা সচেতন আছে বলে আমাদের মনে হয় না। প্রতিদিন আগত  রোগীরা হাসাপাতালের বাথরুম ও টয়লেটের  দুরবস্থা  প্রত্যক্ষ করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটি দেখতে পান না। টয়লেট এবং বাথরুম ব্যবস্থাটি পরিছন্ন করা গেলে আগত রোগীদের কষ্টের বোঝা লাঘব হবে বলে আমরা মনে করি।
পরিশেষে বলতে হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দেশবাসীর উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যেভাবে কাজ করছেন, কিন্তু স্বাস্থ্যখাতের কতিপয় দুর্নীতিবাজের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দুর্নীতিবাজরা উৎখাত হোক, কঠোর শাস্তির আওতায় আসুক এটাই কাম্য সবার। তাই আমাদের পরামর্শ সরকারের উচিত, স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। স্বাস্থ্যখাতের সকল অনিয়ম দূর করা না গেলে সরকারের কোনো উদ্যোগই সফলতার মুখ দেখবে না যা বিশ^াস করার অনেক কারণ রয়েছে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা বিষয়টি সরকারকে গভীরভাবে ভেবে দেখার অনুরোধ জানাই।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


আরও সংবাদ   বিষয়:  চক্ষুসেবা   যুগান্তকারী   ড. কাজী এরতেজা হাসান  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]