প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাটির প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, গত প্রায় তিন বছর যাবৎ সারা পৃথিবীতে করোনা অতিমারির দুর্যোগ ও বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে গোটা বিশ্বে খাদ্য সংকট প্রকট হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। এর সাথে রয়েছে পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক জলবায়ুর সমস্যা। বর্তমান সময়ের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। আর খাদ্য উৎপাদনের মূল উপাদান মাটি। তাই মাটির প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ২০২২’ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ২০২২’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘মাটি : খাদ্যের সূচনা যেখানে’ বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের মাটি অত্যন্ত উর্বর। বাংলাদেশের মাটিকে খাঁটি সোনার সঙ্গে তুলনা করা হয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন ‘আমাদের দেশের জমি এত উর্বর যে, ‘বীজ ফেললেই গাছ হয়, গাছ হলে ফল হয়। সে দেশের মানুষ কেন ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট পাবে।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন ছিল ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন সমবায় ভিত্তিতে চাষাবাদ হচ্ছে, যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে। সারসহ কৃষিতে দেয়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ আর্থিক উন্নয়ন সহায়তা। পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য নেয়া হয়েছে নানা প্রকল্প। এ সকল কার্যক্রমের সাফল্য নির্ভর করবে মাটির সুস্বাস্থ্যের ওপর। যেহেতু ক্রমাগতভাবে আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে এবং আবাদি জমির পরিমাণ কমছে, তাই উন্নত জাত ও ফসল নিবিড়তা বৃদ্ধির মাধ্যমে অধিক খাদ্য উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, মাটির প্রতি যত্নশীল না হলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। মাটির উর্বরতা ও উৎপাদনশীলতা বজায় রেখে অধিক ফসল উৎপাদন করতে হবে। মাটিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার পরিহার করে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগের মাধ্যমে মাটির সুস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব যে পরিস্থিতি অতিক্রম করছে, তা উন্নত-অনুন্নত নির্বিশেষে সকল দেশের অর্থনীতির জন্য এক বিরাট হুমকি। এই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। মাটির উর্বরতা বজায় রেখে অধিক খাদ্য উৎপাদন সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে।
‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস-২০২২’- এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। খবর: বাসস