বুধবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
পত্রিকা বিক্রেতা ভুট্টো এখন ভাপা বিক্রেতা!
আব্দুল মালেক, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২, ৯:১৮ পিএম আপডেট: ২৬.১১.২০২২ ৯:২৫ PM

পত্রিকা বিক্রেতা ভুট্টো এক সময় কাঠফাটা রোদ, গরম ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে উচ্চ কন্ঠস্বরে পত্রিকার আকর্ষণীয় শিরোনাম বলে গ্রাহকদের কাছে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা পৌছে দিতো। এরপর সামাজিক যোগাযোগের কারণে পত্রিকার কদর কমে যায়। যার কারণে পত্রিকা বিক্রি করে তার সংসার চলছিলনা। বাধ্য হয়ে এ পেশা ছেড়ে দেন। এখন সে ফুটপাতের ভাপা পিঠা বিক্রেতা। 

তাঁর আপন চাচা পায়ে হেঁটে ২২ দেশ ভ্রমনকারি ওসমান গনি শখ করে নাম রেখেছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। বাবা-মায়ের রাখা নাম আবু মুত্তালিব। তাকে সবাই চিনে ভুট্টো নামে। ভুট্টোর বর্তমান বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার নারিকেল বাড়ি বুড়ি তিস্তা নদীর পাড়ে। জন্মস্থান জেলার চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের বৈলমনদিয়ার খাতা গ্রামে। পিতা-মাতার ৬ সন্তানের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ ভুট্টো। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাক সেনারা তাদের পৈত্রিক বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়। পরে পিতার হাত ধরেই উলিপুরে আসেন। এরপর ব্রহ্মপুত্র নদ বুকে ধারণ করে নেয় শেষ আশ্রয়টুকু। 

যৌবনের সিড়িতে পা দিয়ে পিতা-মাতার মতেই বিয়ে করেন ভুট্টো। এরপর তিন সন্তানের জনক হন তিনি। দীর্ঘ ৬০ বছরের জীবনে কর্ম হিসেবে শুরু করেছিলেন বাইসাইকেলের মেকারি দিয়ে। খুব বেশিদিন সে পেশায় টিকে থাকতে পারেননি। এরপর চায়ের দোকানে মিচিয়ার, মাইক, ভিসিআর অপারেটর হিসেবে কাজ করে সংসার চালান। 

যুগের চাহিদায় পাল্টাচ্ছিলেন কর্ম আর কর্মক্ষেত্র। রমজান মাস আসলে মুসলিমদের ভোরের পাখি হিসেবে নিজেকে বিলিয়ে দেন। মধ্যরাত থেকে তার মোটা গলার আওয়াজে জেগে যায় প্রিয় রোজাদার ভাই-বোনেরা। পুরো মাস শেষে বাড়ি বাড়ি ঘুরে মুষ্টির চাল অথবা টাকা তুলে চলে যায় কিছুদিন। বর্ষার মৌসুমে পুকুর মালিকের সাথে চুক্তি করে মাছ শিকার করে বাজারে বিক্রি করেও সংসার চালান অদম্য এই মানুষটি। ৯০’র দশকে শুরু করেন পত্রিকা বিক্রি। এ পেশায় জীবনের ১৫ বছর চলে যায়। 

প্রযুক্তির উত্থানে পত্রিকা পড়ার মানুষের সংকট বাড়তে থাকে এবং বিক্রিতে ভাটা পড়ে। ওই সময় উলিপুরে স্থানীয় এক নেতার বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ হয় পত্রিকায়। ভুট্টো সেই খবরের শিরোনাম ধরে পত্রিকা বিক্রির সময় ওই নেতার লোকজনের রোষানলে পরে নির্যাতনের শিকারও হন। আস্তে আস্তে থেমে যায় পত্রিকা বিক্রি, বদলাতে থাকে কর্ম আর কর্মক্ষেত্র। কখনো রাজমিস্ত্রির যোগালি দিয়েও পরিবার চালিয়েছেন। চেষ্টা করেছেন নিজ সন্তানদের সুশিক্ষিত করার। ইতোমধ্যে তার বড় সন্তান ডিগ্রি পাশ করে চট্রগ্রামের একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, আরেক মেয়ে ২০২২ সালে এসএসসি পরিক্ষা দিয়েছে। 

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাত ১০টা ফুটপাতে দেখা হয় ভুট্টোর সাথে তখন তিনি জানান, পত্রিকা বিক্রির দিনগুলোতেই বেস ভালোই ছিলাম, পত্রিকার বাজারে ধস নামায় আমি এখন পথে বসেই ভাপা পিঠা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com