প্রকাশ: শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২, ৭:০৩ পিএম আপডেট: ২০.০৮.২০২২ ৭:০৫ PM

শ্রম অধিপ্তর ও সরকারের সাথে বৈঠকের পর ১৪৫ টাকা মজুরির আশ্বাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সম্মান দেখিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন চা শ্রমিক নেতারা। তবে সাধারণ শ্রমিকরা এর সাথে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন।
শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে বৈঠকের পর চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা আমাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি। আমাদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা নির্দারন করা হয়েছে, এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে এসে আমাদের সাথে বসবেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে আমাদের দাবিদাওয়া তাকে জানানো হবে। তাই তার আশ্বাসে আমরা আপাতত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলাম। তিনি বলেন আগামীকাল রোববার থেকে সব শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে।
এদিকে, নেতাদের এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ সাধারণ শ্রমিকরা। শ্রম দপ্তরের সামনেই তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মবিরতী চালিয়ে যাওয়ারও কথা জানান তারা। এসময় সমিতির নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ চা-শ্রমিকরা। তারা বলেন, আমরা ৩০০ টাকা মজুরির দাবি জানিয়েছি। এখন মাত্র ২৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধি করলে কিভাবে আমাদেও আন্দোলন প্রত্যাহার করবো। এই বাজারে ১৪৫ টাকায় কিভাবে চলবো। নেতারা আপোষ করতে পারেন, কিন্তু আমরা আপোস করবো না। এসময় আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দেন সাধারণ শ্রমিকরা।
চা-শ্রমিকদের সাথে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো: আব্দুস শহীদসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা। সংসদ সদস্য মো: আব্দুস শহীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের প্রতি খুবই আন্তরিক। তারই নির্দেশে আমি আজকে এখানে এসেছি। মালিকপক্ষ ২০ টাকা মজুরি বাড়াতে চেয়েছিলেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিজে আরও ৫টাকা বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে এসে চা শ্রমিকদের সাথে তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে বসবেন।
এদিকে বৈঠক শেষে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ পরিচালক নাহিদুল ইসলাম জানান,চা শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কাল থেকে তারা কাজে যোগ দেবেন।
প্রসঙ্গত, দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির আন্দোলন শুরু করেন মৌলভীবাজার জেলার ৯২টিসহ দেশের সব চা বাগানের শ্রমিকরা।দাবি আদায়ে এর আগে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সব চা বাগানে টানা চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। কিন্তু এতে সাড়া না মেলায় পরবর্তীতে একযোগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল।