#জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন শেখ হাসিনা: অ্যাড. মশিউর মালেক। #বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নধারায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ: ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন।

বিশ্বের মুক্তিকামী নিপীড়িত মেহনতি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন, সাম্য, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। আজ সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে অদম্য গতিতে; বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে উদার-অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বমঞ্চে সম্মানের আসনে আসীন হয়েছে বাংলাদেশ।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭৯১তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি অ্যাড. মশিউর মালেক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
অ্যাড. মশিউর মালেক বলেন, আজকের ভোরের পাতা সংলাপে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতে চাচ্ছি। বিশ্বের মুক্তিকামী নিপীড়িত মেহনতি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন, সাম্য, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম, তাদের অধিকার আদায়ে সহ্য করেছেন জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতনের স্টিমরোলার। শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের সকল নিপীড়িত মানুষের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন তিনি। বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সুদূর পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ষড়যন্ত্রকারীরা সপরিবারে হত্যা করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে সংঘটিত হয়েছিল ইতিহাসের এক কলঙ্কিত বর্বরোচিত অধ্যায়। আমরা হারিয়েছি বাঙালির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান, বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের মহাকাব্যিক বীর নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। হারিয়েছি তার দুই কন্যা ব্যতিরেকে পুরো পরিবারকে। যা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট খুনিচক্র কেবল ব্যক্তি মুজিবকেই হত্যা করেনি। তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তির ওপর আঘাত হানে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে পিছিয়ে নিয়ে যায়। আগস্ট মাস বাঙালির জন্য একটি বেদনাবিধুর মাস। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হালার ঘটনা ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, ষড়যন্ত্র এবং দেশি-বিদেশি চক্রান্তের ভয়াবহ, অমানবিক প্রকাশ। কিন্তু আজ সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে অদম্য গতিতে; বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে উদার-অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বমঞ্চে সম্মানের আসনে আসীন হয়েছে বাংলাদেশ।
অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন বলেন, আগস্ট মাস আমাদের শোকাহত মাস। এই মাস আসলেই আমাদের মধ্যে একটি চাপা কান্না অনুভব করি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানো বেদনাবিধূর মাস এটি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু, প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকচক্রের হাতে বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, বিশ্বের লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের মহান নেতা, বাংলা ও বাঙালির হাজার বছরের আরাধ্য পুরুষ, বাঙালির নিরন্তন প্রেরণার চিরন্তন উৎস, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এ সময় বঙ্গবন্ধু ছাড়াও হত্যা করা হয় তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, নবপরিণীতা পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসেরকে। এছাড়া বেইলি রোডে সরকারি বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নীপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবি সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত ও আবদুল নঈম খান রিন্টুকে। আরেক বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণিকে। সেদিন দেশে না থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। তারা সে সময় বিদেশে অবস্থান করছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর এই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নরপিচাশ রূপি খুনিরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্কের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। ১৯৯৬ সালে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে এ বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের কয়েকজনের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন শেখ হাসিনা। একইভাবে বাঙালির আত্মঘাতী চরিত্রের অপবাদেরও অবসান ঘটেছে।