প্রকাশ: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৩৬ AM

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাবের (রা.) শাসনামলে মদিনায় একবার ভূমিকম্প হয়েছিল বলে বর্ণনা পাওয়া যায়। ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ ইবনে ওমরের (রা.) স্ত্রী সাফিয়্যা বিনতে আবি ওবায়েদ সাকাফী। তিনি জানান, ভূমিকম্পের পর হজরত ওমর (রা.) মদিনাবাসীর উদ্দেশে এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন।
তিনি বলেন, ওমর (রা.) বলেছিলেন, লোকসকল! কী হলো এটা! কত দ্রুত তোমরা নতুন কিছু নিয়ে এলে? এ রকম কিছু যদি আবার হয়, তাহলে আমাকে আর মদিনায় পাবে না; আমি মদিনা ছেড়ে চলে যাবো। (মুসনাদে আহমদ)
বিবরণে উল্লেখ রয়েছে, নবীজির (সা.) ও আবু বকরের (রা.) শাসনামলে ভূমিকম্প হয়নি। তাই ভূমিকম্পকে তিনি ‘নতুন ঘটনা’ ও সম্ভাব্য সতর্কবার্তা হিসেবে দেখেন। তিনি ধারণা করেন, মদিনাবাসীর কোনো গুনাহ কিংবা অবহেলার কারণেই এ ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য তিনি নিজেও সতর্ক হন এবং মুসলমানদেরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেন।
বিদ্বানদের মতে, তার এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগকে একজন মুমিন আল্লাহ তাআলার সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচনা করবে এবং আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নেক আমল বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
হজরত ওমর (রা.) ছিলেন আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও সম্মানিত সাহাবিদের একজন। আবু বকর (রা.)-এর পর সাহাবিদের মধ্যে তার মর্যাদা সর্বোচ্চ বলে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। ওহব আস-সুয়াই থেকে বর্ণিত একটি ঘটনায় আলী (রা.) বলেন,নবীজির (সা.) পর এই উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি আবু বকর, তারপর ওমর। (মুসনাদে আহমদ)
৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে নবীজির (সা.) ইন্তেকালের পর সাহাবিদের সর্বসম্মতিক্রমে হজরত আবু বকর (রা.) প্রথম খলিফা নিযুক্ত হন। মাত্র দুই বছরের খেলাফতের পর ৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি মৃত্যুশয্যায় হজরত ওমর (রা.)-কে তার উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করেন। পরে ওমর (রা.) ইসলামের প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, রাষ্ট্রনীতি এবং ব্যাপক সামরিক বিজয়ের মাধ্যমে ইতিহাসে এক অনন্য শাসকে পরিণত হন।