
চুয়াডাঙ্গা জেলার রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতা শরীফুজ্জামান শরীফ আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-০১ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন। বর্তমানে তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক সময়ে সমীকরণ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষিনির্ভর জেলা চুয়াডাঙ্গার রাজনীতিতে বিএনপির ঐতিহ্য সুদীর্ঘ। এই আসন (চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া, মোমিনপুর, কুতুবপুর, শংকরচন্দ্র, পদ্মবিলা ইউনিয়ন ও পুরো আলমডাঙ্গা উপজেলা) থেকে ১৯৯১, ১৯৯৬ (দুইবার) এবং ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা জয় পেয়েছিলেন। বর্তমানে এই আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৯ জন—যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ৭০৫।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন শরীফুজ্জামান শরীফ। সে সময় দলীয় প্রার্থীদের ওপর হামলা, মামলা ও নানা বাধা থাকা সত্ত্বেও তিনি ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যান। আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন তার গাড়ি বহরও, কিন্তু মাঠ ছাড়েননি।
ছাত্র রাজনীতি দিয়ে তার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু। একসময় তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। পরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে প্রবাসে যেতে বাধ্য হন। প্রবাস থেকে ফিরে তিনি পুনরায় সক্রিয় হন বিএনপির কঠিন সময়ের রাজনীতিতে।
২০১৪ সালের সরকারবিরোধী আন্দোলন ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে সাহসী ভূমিকার পর ২০২১ সালে তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব নির্বাচিত হন। পরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরাসরি ভোটে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হন।
শরীফুজ্জামান শরীফ শুধু রাজনীতিবিদ নন, সামাজিক কর্মকাণ্ডেও রেখেছেন দৃষ্টান্ত। করোনাকালে তিনি ত্রাণের পরিবর্তে ‘উপহার সামগ্রী’ দিয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন সাহায্য। হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে গিয়ে তাদের সুখ-দুঃখের খবর নিয়েছেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সঙ্গে সামাজিক বন্ধন বজায় রেখেছেন।
তার পরিবারের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঁচ কমলাপুর দারুল উলুম হাফিজিয়া কওমিয়া মাদ্রাসা চুয়াডাঙ্গার অন্যতম আধুনিক মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত। পরিবারের দান করা ‘শাহেদ প্যালেস’ নামের থ্রি-স্টার হোটেলের আয়ের পুরোটা মাদ্রাসার কাজে ব্যয় হয়।
কর্মীদের কাছে সহজপ্রাপ্য এই নেতার সঙ্গে কথা বলতে কারও মাধ্যম লাগে না। দরজায় কড়া নাড়লেই কর্মীরা পান তাকে। বিপদে-আপদে তাৎক্ষণিক সাহায্য করেন তিনি। এজন্য সাধারণ মানুষ তাকে ডাকে ‘চুয়াডাঙ্গার রাখাল রাজা’ নামে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দলীয় ত্যাগ, সাহসী নেতৃত্ব ও জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে শরীফুজ্জামান শরীফ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-০১ আসনের বিএনপির যোগ্য মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থী হিসেবে শীর্ষে রয়েছেন।