জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা এলাকাবাসীর ঝিকরগাছার গঙ্গানন্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শতকোটি টাকার সম্পত্তি বেদখল!

যশোরের ঝিকরগাছার প্রায় শতাব্দীকাল প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ গঙ্গানন্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে ১৮বিঘা সম্পত্তির মধ্যে প্রায় ১২বিঘা সম্পত্তি বেদখল হওয়ার উপক্রম ঘটেছে। এসব সম্পত্তির আনুমানিক বাজার মূল্য শতকোটি টাকা। মালিকানা হাতছাড়া হওয়ার মতো এমন ঘটনাটি চরম উদ্বেগের হলেও দেখার যেন কেউ নেই! সচেতন এলাকাবাসী যশোর জেলা প্রশাসকের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, গঙ্গানন্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিজস্ব এই সম্পত্তিতে ২১৪টি পাকাস্থাপনা ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে।
কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে এসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থাপনার বেশিরভাগ কংক্রিটের গ্রেডবিম ব্যবহার ও দীর্ঘস্থায়ী টেকসই ছাদ নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের নিজস্ব সম্পত্তিতে গার্মেন্ট, ফার্মেসি, বস্ত্রবিতান,হার্ডওয়ার, মুদি দোকান, হোটেল রেস্তোরাঁ, রড সিমেন্ট প্রভৃতি দোকানপাট গড়ে উঠেছে।
জানাগেছে, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে খালি জায়গা নাম সর্বস্বমূল্যে ভাড়া নেয়া হয়। এরপর গড়ে তোলা হয় বাণিজ্যিক এসব পাকাভবন।
ভাড়ার টাকাও অনাদায় থাকে মাসের পর মাস এমনকি বছর ধরে। বাজারমূল্যের তুলনায় কখনো ভাড়ার টাকা বাড়েনি একটি টাকাও! বলার সাহস নেই কর্তৃপক্ষের!
অভিযোগ রয়েছে, পানির দামে ভাড়া নেয়া একসময়ের খালি জায়গা পাকা দোকানপাট গড়ে তুলে লাখ লাখ টাকার চড়াদামে বিক্রি,হস্তান্তর,ভাড়া ও একাধিক হাত বদলের অসংখ্য নজির রয়েছে।স্বার্থান্ধ জোটবদ্ধ সব রাজনৈতিক দলের ছাত্রছায়ায় থাকা এসব সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী শ্রেণির কাছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন এক প্রকার অসহায়-জিম্মি! স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের অনেকেই নাকি সুবিধাভোগী!
চাপে পড়ার ভয়ে এসব দোকানী-ব্যবসায়ীদের কেউ মুখ খুলতে চাননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই জানিয়েছেন, অনেক আগে থেকেই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রতিটি দোকানের প্রতি হাত জায়গার মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয় মাত্র ৩টাকা। ধরা যাক, দৈর্ঘ্য ১০হাত, প্রস্থ ১০হাত। ক্ষেত্রফল ১'শ হাত।মোট ২২৫ বর্গফুট। সেই হিসাবে প্রতিটি দোকানের মাসিক গড়ভাড়ার পরিমাণ দাঁড়াই ৩'শ থেকে ৪'শ টাকা মাত্র । সেই হিসাবে ২১৪টি ছোট বড় দোকান মিলিয়ে ঘর ভাড়ার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রতিমাসে ৭-৮ হাজার টাকা মাত্র।বর্তমান বাজারমূল্য হিসেবে তা কল্পনা করা যায়? প্রশ্ন স্থানীয় সচেতন মহলের। ঘর ভাড়ার টাকা আদায়ে ভাড়াটিয়ার প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সিলস্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু প্রতিষ্ঠানের নিজ নামীয় প্যাডসহ সীলস্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়না এমন স্বীকারোক্তি দিয়ে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, ঘরভাড়া আদায়ে প্রতিষ্ঠানের নামীয় প্যাড ছাপাতে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোনের সংযোগ পাওয়া যায়নি।