
মহিলা ও শিশু এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ বলেন, দেশের ইতিহাসে এই প্রথমবার জুলাই আন্দোলনে ১১ মেয়ে ও ১৩৫ শিশু শহীদ হয়েছে। তাদের পরিবারের চোখের জল মুছতে চাই আমরা।
রবিবার (৬ জুলাই) সকালে নারায়ণগঞ্জের শহরের নয়ামাটি এলাকায় ছয় বছর বয়সী শহীদ শিশু রিয়া গোপের পরিবারের খোঁজখবর নিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ বলেন, ‘যে বাচ্চাগুলো শহীদ হয়েছে আমরা মনের ভেতর তাদেরকে এই একটা বছরের প্রতিটি মুহূর্ত ধারণ করেছি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার দুটি বড় আগ্রহের জায়গা—এক, শহীদ নারীযোদ্ধারা যেন রাষ্ট্র নির্ধারিত অধিকার পূর্ণভাবে পান; দুই, তাদের পরিবারগুলো এখন কেমন আছে, সেই সংকটগুলো বোঝা এবং সহায়তা করা।’
শারমিন মুরশিদ বলেন, ‘১১টি শহীদ নারীযোদ্ধার পরিবার রয়েছে। তাদের জীবন ও আত্মত্যাগ নিয়ে আমরা একটি গবেষণা ও পাবলিকেশন প্রকাশ করতে চাই। মেয়েরা অনেক গল্প বয়ে বেড়ায়, অনেক সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে, যা সামনে আসে না। আমরা চাই না, তারা হারিয়ে যাক। তাদের গল্পগুলো বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই শহীদ পরিবারের সন্তানদের যারা যত্ন করে বড় করবে, তাদের জন্য বিশেষ সহায়তা বা রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকার থাকা উচিত। এটি শুধু দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের মানবিক দায়।’
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিজেদের ট্রাইব্যুনাল গঠন করে কাজ শুরু করেছি, যা সাধারণত এত তাড়াতাড়ি সম্ভব হয় না। তবে বিচার দ্রুত করতে গিয়ে অবিচার যেন না হয়, সেটিও মাথায় রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র কারও সঙ্গে অন্যায় করবে না। আর যদি কোনো ভুল হয়, তা সংশোধনের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আমরা উন্মুক্ত সরকার চালাই—ত্রুটি ধরিয়ে দিতে পারেন, গালও দিতে পারেন, কিন্তু সেই গালের সঙ্গে সমাধানের পরামর্শটাও থাকুক—এটাই কাম্য।’
ঢালাও মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ভুল হয়েছে। দ্রুত কাজ করতে গিয়েই কিছু ত্রুটি হয়েছে। তবে ডিসি সাহেবরা এখন এসব ভুল সংশোধনের কাজ করছেন।’
সাক্ষাতের সময় উপদেষ্টা শহীদ পরিবারের প্রতি সরকারের অবিচল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সকল স্তরে সহানুভূতি ও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।