বুধবার ২১ মে ২০২৫ ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শিরোনাম: ইশরাকের মেয়র পদ নিয়ে রিটের আদেশ কাল   সামিট গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরের চেষ্টা, আজিজ খানের সহযোগীর এনআইডি ব্লক   জাফলংয়ে হঠাৎ পাহাড়ি ঢল   স্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার   কত টাকার সম্পদ জব্দ করেছে সরকার, জানালেন প্রেস সচিব   নুসরাত ফারিয়া গ্রেপ্তার: ফারুকীর মন্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া   গৃহবন্দি লেকশোর হোটেল মালিককে হাজির করতে সন্তানদের রিট   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে পাকা আম
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ৪:০৬ পিএম

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগন্জে মুকুলের ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে সুমিষ্ট কাটিমন জাতের পাঁকা  আম।  সারি সারি আমগাছে  পরিপক্ব আম ও মুকুলের ভারে ভেঙে পড়ছে গাছের ডালপালা। 

এদিকে , পরিপক্ব আমকে রক্ষায় চলছে নানা পরিচর্যা। আগামী ঈদুল ফিতর কে সামনে রেখে সুমিষ্ট ফল আমের চাহিদাকে বিবেচনায় এনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা ব্যাপকভাবে কাটিমন জাতের আম চাষ করেছেন। চাষিরা পরিপক্ক আম রেখে  নতুন  আমের মুকুল কেটে ফেলছেন।
 
সাধারণত মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত চার মাসকে আমের মৌসুম ধরা হয়। তবে এই সময়ের বাইরেও এখন আমের রাজধানীখ্যাত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে বছরজুড়ে উৎপাদন হচ্ছে আম। চলতি রমজান মাসে চাহিদা থাকায় কৃষকরা কাটিমন জাতের আম চাষে মনোযোগী হয়েছেন। গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবার চাষ দ্বিগুণ বেড়েছে।
 
জেলায় কাটিমন জাতের বিভিন্ন আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে ফলন এসেছে বাম্পার। তবে রমজান মাসে ফলন পেতে গত তিন মাস ধরে গাছের পরিচর্যা করেছেন আমচাষিরা। ফলন ধরে রাখতে সঠিকভাবে সার, কীটনাশক ও সেচ প্রয়োগ করা হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় বাগান থেকেই আম কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। কৃষকেরা জানান, ইচ্ছেমতো সময়ে গাছে ফলন নেয়ার সুবিধা থাকায় রমজানে আম বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তারা।
 
অন্যান্য কৃষকদের মতো গত তিন বছর ধরে রমজান মাসে কাটিমন জাতের আম উৎপাদন করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের আমচাষি রুবেল হোসেন। অসময়ের কাটিমন জাতের আম চাষ করে তাক লাগিয়েছেন তিনি। চলতি মৌসুমে প্রায় ২৫ বিঘা আমবাগান থেকে ২৫০ মণ আম বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা তার। প্রতি মণ ১৩ থেকে ১৬ হাজার টাকা দরে তিনি ২০-২৫ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।
 
রুবেল হোসেন জানান, প্রথমে ইউটিউবে কাটিমন জাতের আমের বছরব্যাপী ফলন পাওয়ার ভিডিও দেখে তিনি এই চাষ শুরু করেন। এই জাতটি চাষের জন্য খুবই উপযোগী, কারণ মৌসুমের সময়ে প্রচুর আম উৎপাদন হলেও দাম পাওয়া যায় না। কিন্তু কাটিমন জাতের আম অসময়ে চাষ করা যায় এবং তখন বাজারে তেমন আমও থাকে না, ফলে দাম ভালো পাওয়া যায়। 
 
আম চাষি শফিকুল ইসলাম জানান, এখন কাটিমন জাতের গাছে একইসঙ্গে ফল ও মুকুল রয়েছে। তবে শুধু আম রেখে অতিরিক্ত মুকুল ফেলে দেয়া হচ্ছে, কারণ মৌসুমের সময় অন্যান্য দেশীয় জাতের আমও আসবে, ফলে তখন এই আম রেখে লাভ হবে না। রমজানে বিক্রি শেষ করে আবারও অক্টোবর-নভেম্বরে নতুন ফলন নেয়া হবে।
 
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, এক সময় রমজান মাসে আমের চাহিদা মেটাতে আমদানি করতে হতো। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেশে কাটিমন জাতের আমের চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। অন্যদিকে, কৃষকেরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছর ধরে রমজানে আমের চাহিদা ও বাজার দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে জেলার কৃষকেরা তাদের দেশীয় জাতের আমগাছগুলোকে কাটিমন জাতের আমগাছে রূপান্তর করছেন। ফলে চাষিরা বাজার ও দামের চিন্তা ছাড়াই সহজেই বাগান থেকে আম বিক্রি করতে পারছেন।
 
অসময়ে সরবরাহ কম থাকায় এবং চাহিদা বেশি থাকায় কাটিমন জাতের আমের ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকেরা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, পরিকল্পিতভাবে কাটিমন জাতের আম চাষ বেড়ে চলেছে।
 
নাচোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সলেহ আকরাম বলেন, নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নে কৃষি উদ্যোক্তা ও আমচাষী  রুবেল হোসেন ২৫ বিঘা জমিতে কাটিমন আমের বাগান করেছেন। এই জাতটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি বছরে দুইটি বা তিনটি ফলন দেয়। বর্তমানে এখন একটি ফলনের হারভেস্টের কাজ চলছে। এই জাতটির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো কৃষক যখন মনে করে তখন ফলন পেতে পারে। সেদিক থেকে আমরা চাষি ভাইদেরকে পরামর্শ দিচ্ছি তিনি যেন এই জাতটির ফলন অফ সিজনে নেয়। অফ সিজনে নিলে বাজার মূল্য বেশি থাকবে। কারণ কাটিমন আমের পরিচর্যা খরচ বেশি। সেক্ষেত্রে তারা অধিক মূল্যে বিক্রি করতে পারলে কাটিমন আম চাষ লাভজনক হবে। 
 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, রমজান উপলক্ষে নিরাপদ আম উৎপাদনের জন্য কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে। আমচাষিরাও গতানুগতিক আমচাষ ছেড়ে অসময়ের জাতের আম চাষে ঝুঁকছেন। 

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, গত বছর ৮৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯ মেট্রিক টন কাটিমন আম উৎপাদন হয়েছিল। চলতি বছর চাষ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৯২ হেক্টরে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com