
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে টানা আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) তারা রেলপথ ও মহাসড়কে সর্বাত্মক অবরোধ, বাঁশ দিয়ে সড়ক অবরোধ এবং কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
এ সময় তাদের আমার ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে, শাহবাগ না মহাখালী, মহাখালী মহাখালীসহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
রাস্তা অবরোধের কারণে মহাখালী-গুলশান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী বহনকারী যানবাহন ছেড়ে দেওয়া হয়। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি।
অন্যদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাইকে বলত শোনা যায়, যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। অবরোধ চলাকালীন সময়ে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী পরিবহনের গাড়ি ছাড়া অন্য গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। এখন আমরা লিংক রোড অবরোধ করেছি। কিছু সময় পর অন্যান্য জায়গাগুলোও অবরোধ করে দেওয়া হবে।
অবরোধের পাশাপাশি তিতুমীর কলেজের সামনে শিক্ষার্থীদের ষষ্ঠ দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচিও চলছে।
এর আগে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি ও কলেজ শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
রাত ১১টায় কলেজের মূল ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করে তিতুমীর ঐক্যের উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান মুক্তার বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আন্দোলন করছি। কিন্তু রাষ্ট্র বারবার আমাদের সঙ্গে দ্বিচারিতা করছে। সেজন্য আমরা সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তিতুমীর কলেজ শাটডাউন ঘোষণা করছি। এ সময়ের মধ্যে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা কিংবা অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম হবে না। তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার পরেই তিতুমীরের গেটের তালা খোলা হবে।
এ সময় তিনি আরও জানান, সোমবার সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মহাখালী রেল ক্রসিংয়ে রেলপথ, আমতলী মোড়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, মহাখালী-গুলশান সড়ক এবং গুলশান লিংক রোডে সর্বাত্মক অবরোধ করবেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার রাতের মধ্যে যদি দাবির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা না হয় কিংবা দাবি মেনে নেওয়া না হয় তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এ সময় তিনি ৩ দফা দাবিও তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করে যোগ্যতা বিবেচনায় নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে।
৩. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আইন উপদেষ্টার চাপ সৃষ্টি করার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টির দায়ভার মাথায় নিয়ে আইন উপদেষ্টাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
এদিকে মহাখালী এলাকায় বিজিবির সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। আমতলীতে পুলিশের একটি জলকামানও দেখা গেছে।