প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ৬:২৪ পিএম

৩০ বছর আগে স্বামী তমসের আলী ২ ছেলেকে রেখে মারা যায়। এক ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী উমর আলী আর এক ছেলে দিনমজুর রহমত আলী। দিনমজুর রহমত আলী বিয়ে করে আলাদা বসবাস করেন। আর মানসিক প্রতিবন্ধী উমর আলীকে নিয়ে না খেয়ে ঝুপড়ি ঘরে শতবয়সী বৃদ্ধা তরিপন বসবাস করছেন।
বয়সের ভারে চোখে ঝাপসা দেখা। সকাল হলেই কেউ খাবার নিয়ে আসবে সেই আশায় পথ চেয়ে বসে থাকেন। এলাকাবাসীর কেউ খাবার দিলে দু'মুঠো খেতে পারেন তিনি। তবে অনাহারেই থাকতে হয় বেশি সময় বৃদ্ধা তরিপন।
এ নিয়ে গত ১২ জানুয়ারি ‘প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন শতবয়সী বৃদ্ধ তরিপন’ এই শিরোনামে দৈনিক ভোরের পাতায় একটা সংবাদ প্রকাশ হয়।
সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পরপরই মুহূর্তেই সেটি হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনওর দৃষ্টিগোচর হয়। আর্থিক সহায়তা নিয়ে সেই বৃদ্ধ তরিপনের বাড়িতে ছুটে যান (ভারপ্রাপ্ত) ইউএনও দুলাল হোসেন।
বৃদ্ধ তরিপন বেগমের বাড়ি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারি ইউনিয়নের ৮ ওয়ার্ডের সীমান্তপাড়া এলাকায়। সিমান্ত ঘেঁষা এলাকায় প্রতিবেশীর দেওয়া টিন আর পরিত্যক্ত পাটের লাকড়ি দিয়ে তৈরি ঘরে কোনরকম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
সরকার গৃহহীনদের বসবাসের জন্য ঘর বরাদ্দ দিলেও বৃদ্ধা কপালে জোটেনি একটি ঘর। এলাকার সবার ঘরে বিদ্যুতের বাতি জ্বললেও রহিমার ঘরে জ্বলে পুরনো কেরোসিন তেলের কুপি। একটু বাতাস হলেই নিভে যায় কুপির সেই আলো৷ ঠান্ডায় রাতে ঘুমাতে পারেন না। বয়সের ভারে একা চলতে পারেন না। তাইতো একটি বাশের লাঠির উপর ভর করে কোনরকম চলাফেরা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে বৃদ্ধা তরিপন বলেন, বাবা তোর জন্য মুই,চাইল পানু টাকা পানু, আল্লাহ তোর ভাল করবি,বাবা যদি একনা ডাক্তার দেখের পানু হয় তাইলে মনটায় কয় আর কয়টা দিন বাচনু হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইউএনও দুলাল হোসেন ভোরের পাতাকে বলেন, দৈনিক ভোরের পাতায় খবরটি দেখে আমি প্রাথমিকভাবে কিছু টাকা আর বাজার খরচসহ কম্বল দিয়ে এসেছি। তার থাকার জন্য ঘরসহ চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হবে।