
দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারো নারায়ণগঞ্জে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব-২০২৫।
আগামী শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
মাসব্যাপী এ লোকজ মেলার দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পসরা সাজানোর অন্যতম স্থান কুটির দোকান প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে।
উৎসবকে ঘিরে ফাউন্ডেশন চত্বরকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। বড় বড় ফেস্টুন, ব্যানার, রঙ-বেরংয়ের কাপড় আর বিভিন্ন ফুলে সজ্জিত ফাউন্ডেশন চত্বর। নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশ, বেত আর ছন দিয়ে গেইট। অতিথিরা যে ময়ুরপঙ্খি স্টেজে বসবেন। স্টেজকে সাজানো হচ্ছে বিভিন্ন সাজে। প্রধান ফটক থেকে বিভিন্ন স্থানে আঁকা হয়েছে আলপনা। যেখানে ফুটে উঠেছে আবহমান বাংলার প্রতিচ্ছবি।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন পণ্য ও তৈজষপত্র সরাসরি তৈরি, সংরক্ষণ, প্রদর্শণ ও বিপণনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘বাংলদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন’ এ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, কারুশিল্পের সাথে জড়িতরা নিজেদের পণ্য প্রদর্শনের জন্য নির্মিত ঘরে আসবাবপত্রের কাজ করছেন। সবাই ব্যস্ত মাত্র দুই দিনের মধ্যে তাদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে। ফুরসত নেই কথা বলার।
তবে কাজের ফাঁকে শিল্পীরা চান সকলে বিদেশি পণ্য বর্জন করে দেশীয় পণ্য ব্যবহারে অভ্যস্ত হওয়ার। মাসব্যাপী এ লোকজ উৎসবে আমন্ত্রণ জানান স্বপরিবারে এসে দেশীয় পণ্য সংগ্রহের। ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে ব্যবসায়ী ও শিল্পী সকলেই সন্তুষ্ট বলে জানান।
লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক এ কে এম আজাদ সরকার ভোরের পাতাকে জানান, মাসব্যাপী এ মেলায় কারুশিল্পের সাথে সম্পৃক্ত কারুশিল্পীদের স্বহস্তে তৈরি পণ্যের প্রদর্শনী, লোকজীবন প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়স্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের তৈরি বাহারি পণ্যসামগ্রী এবং উদ্যোক্তাদের কারুপণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে।
মেলায় সাধারণ স্টল ও কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ৩২টি স্টলসহ সর্বমোট স্টলের সংখ্যা ১০০টি। যাতে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতযশা ৬ ৪জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন।
মাসব্যাপী এ মেলায় সোনারগাঁওয়ের জামদানি, মৌলভীবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, মাগুরা ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি ও মৃৎশিল্প, কক্সবাজারের ঝিনুকশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, কাঁঠের চিত্রিত হাতি-ঘোড়া-পুতুল, কুমিল্লার খাঁদিশিল্প, তামা-কাঁসা-পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি, বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুশিল্প, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, বগুড়ার লোকজ খেলনা ও বাদ্যযন্ত্র কারুশিল্পীরা মেলায় অংশ নিয়ে তাদের পণ্যের প্রদর্শনী করবেন।