শনিবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পরে ওসমান হাদিকে গুলি করায় সাদিক কায়েমের ক্ষোভ   ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান   “বেঁচে থাকুন, ফিরে আসুন” হাদির জন্য কাঁদছে বাংলাদেশ   ধর্মান্ধদের চক্রান্তে না পড়ে ধানেরশীষে ভোট দিয়ে উন্নয়ন করার সুযোগ দিন: সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন    মওলানা ভাসানীর ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত   মতলব উত্তরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় খতমে কুরআন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত   মোংলায় ৮ দলীয় ভলিবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন    
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিপাকে কৃষক
মহাপরিকল্পনা জরুরি
মো. সাজেদুল হক সাজু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ৪:৫২ পিএম আপডেট: ০৭.০১.২০২৫ ৪:৫৪ PM

চাঁপাইনবাবগঞ্জে  জেলার নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলায় প্রতি বছর পানির স্তর নামছে। এতে আগামীতে খাদ্য উৎপাদনে চরম অনিশ্চয়তার শঙ্কা করছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। তাই ইরি ধান চাষে নিরুৎসাহিত করছেন তারা।

বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানি স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় রবি ফসলের দিকে ঝুকতে কৃষকদের উৎসাহিত করছেন কৃষি বিভাগ ও বি এম ডি এ। 

নাচোল উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে উঠে এসেছে এইসব  জরুরি তথ্য। কৃষকেরা জানান, আমন ধান ঘরে তোলার কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। এরমধ্যেই ইরি ধানের বীজতলা প্রস্তুত করতে হচ্ছে।  বি এম ডি এ ইরি ধান চাষ না করতে ডিপের অপারেটর নির্দেশ দিয়েছেম। তবে গম বিভিন্ন ডাল সরিষাসহ বিভিন্ন রবি ফসল চাষে উত্সাহিত করছেন। বি এম ডি এ  নির্দেশ অমান্য করে ধান চাষ করলে বেধে দেওয়া সময়ের বেশি বিদ্যুৎ না দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

নাচোল-চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়কের পাশে ধান শুকাচ্ছেন মো. আশরাফুল  ইসলাম । তিনি বলেন, আমন ধান এখনো ঘরে তুলতে পারিনি। কেটে এনে রোদে দিয়েছি। আর ইরি ধানের বীজতলা প্রায় প্রস্তুত। হঠাৎ জানতে পারলাম বিএমডিএ ডিপে (স্কিমে) জমি কম করে আবাদ করতে হবে। আগে আমি প্রতিবছর ধান চাষ করতাম ৮ বিঘা, এবার করতে হবে ৩ বিঘাতে। অন্য চার বিঘাতে রবি  ফসল চাষ করতে উত্সাহিত করছেন।  এ বিষয়ে কৃষক মতিউর রহমান বলেন পেঁয়াজ আলু গম সরিষা সহ বিভিন্ন রবি ফসল চাষ করলে দেশবাসী উপকৃত হবে। এসব ফসলে একবার বা দুবার পানি দিলে আমরা জনমানুষ উপকৃত হবো।

নাচোল উপজেলার কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সারাজীবন ইরি ধান চাষ করে এসেছি। আর এই অঞ্চলে ধান ছাড়া লাভজনক তেমন অন্য কোনো ফসল উৎপাদন হয়নি। ধানই আমাদের প্রধান ফসল। যা উৎপাদন করে চলে আমাদের সংসার। আমরা বছরে তিনবার পর্যন্ত ধান চাষ করে থাকি। কিন্তু পানির সঙ্কট বলে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ধান চাষ করতে নিষেধ করেছে। ফলে বাধ্য হয়ে অন্য মৌসুমি ফসল উৎপাদনের জন্য জমি প্রস্তুত করছি।

বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন এর  কৃষক মোঃ সালাউদ্দিন  বলেন, মৌসুমি ফসল উৎপাদনে খরচ কম, লাভও কম। ধানের মতো কোনো ফসলেই লাভ হয় না। প্রচুর কষ্ট করে পরিচর্যা করেও অন্য ফসলের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদনও হয় না এসব জমিতে। ইরি ধানের আবাদ কমে গেলে আমাদের কাজ কমে যাবে। তাতে অসুবিধা হবে। এতে চালের সংকট দেখা দিতে পারে।

নাচোলের খলসি এলাকার কৃষক  আলি হোসেন  জানান, আগে ৫ বিঘা জমিতে ইরি ধান চাষ করতাম। এখন পানি সংকটের কারণে ২ বিঘা করতে হবে বলছে বিএমডিএ’র লোকজন। এখন সমস্যা হচ্ছে আমাদের মালিকপক্ষ এসব জমিতে ধান চাষ না করলে জমি ফিরিয়ে নেবে বলছেন। এখন আমি কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, দিন দিন ভূগর্ভস্থ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাই এই এলাকাগুলোতে ইরি ধান না চাষ করাই ভালো। বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ চাষিদের ধান চাষে নিরুৎসাহিত করে খুব ভালো করেছেন। এ জমিগুলোতে গম, ভুট্টাসহ জাতীয় ফসল চাষ করলে পানি কম লাগবে। ভালো ফলনও হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএমডিএ’র সহকারী প্রকৌশলী মো. মুসাইদ মাসরুর বলেন, জেলার বরেন্দ্র অঞ্চলগুলোতে দিন দিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। সে পানি ধরে রাখতে এবং আগামীতে সেচ নিশ্চিত করতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমানোর জন্য নেওয়া হয়েছে এ ব্যবস্থা। মূলত ইরি ধান চাষ করতে ১০-১৫টা সেচ লাগে। কিন্তু অন্য ফসল চাষ করলে ১টি সেচ দিলেই হয়ে যাবে। তাই কৃষকদের অন্য ফসল উৎপাদনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।  বিশেষজ্ঞদের মতে পানির স্তর যে ভাবে নিচে নামছে তাতে করে ভূমিকম্প, ভুমিধস সহ প্রকৃতির  বিভিন্ন  দুর্যোগ মানুষ কে ভোগ করতে হবে।এমনিতেই প্রকৃতির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমরা রিতিমত সংকটের  আবর্তের মুখোমুখি। চলতি বছর মহানন্দা নদীতে রাবার ড্যাম চালু হওয়ায় এমনিতেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ভোলাহাট পর্যন্ত পানির উচ্চতা অনেকটাই বেড়ে গেছে। বর্তমানে মহানন্দার পানি কৃষি জমিতে  ব্যাবহার জরুরি হয়ে পড়েছে।  

এই এলাকায় প্রতিবছর বৃষ্টির মাধ্যমে ভূগর্ভে পানি জমা হয় প্রায় ৯০০ মিলিমিটার, কিন্তু ফসল চাষে পানি প্রয়োজন ১৩০০ মিলিমিটার।

উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগার বরেন্দ্র অন্চলের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল নদীর সাথে বরেন্দ্র অন্চলের  সংযুক্ত করে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা উপকৃত হবে,পাশাপাশি পানির স্তর আর নিচে নামবে না এবং দেশ ধানসহ সকল ফসল সহজেই কৃষকেরা  উতপাদন করতে পারবেন। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com