ভারতীয় হাইকমিশনার প্রনয় কুমার ভার্মা বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। তা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকেই চলমান রয়েছে৷ আমাদের এই দুই দেশের সম্পর্ক আত্বত্যাগের সম্পর্ক৷ দুই দেশের নাগরিকদের বন্ধন ব্যক্তিগত সম্পর্কের। যা দুই দেশের নাগরিকদের অটুট সম্পর্কের ধারাবাহিকতার জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ের মতো এমন অটুট সম্পর্ক বজায় থাকলে দুই দেশই বিভিন্ন খাতে আরও এগিয়ে যাবে।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দর পরিদর্শন শেষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রনয় কুমার ভার্মা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক, সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট, রাজস্ব কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি।
এসময় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার আরও বলেন, বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে বর্তমানে ৩৬টি বন্দর চালু রয়েছে। এছাড়াও আরও ৪টি বন্দর চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মহদীপুর-সোনামসজিদ স্থলবন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন করতে কাজ করছে। তবে এসব উন্নয়নকাজ মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর থেকে এসব উন্নয়নকাজ আবারও শুরু হয়েছে।
প্রনয় কুমার ভার্মা বলেন, স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। সড়ক পথ ছাড়াও বিকল্প বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমের উন্নয়ন করা হচ্ছে৷ রেলপথে দুই দেশের যোগাযোগ বাড়াতে কাজ করা হবে। যা দুই দেশের ব্যবসা বানিজ্যের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগামীতে দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্ভাবনার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, দুই দেশের নাগরিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য গতকালকে কুষ্টিয়ায় একটি ভিসা সেন্টার চালু করা হয়েছে। দেশের মানুষের সুবিধা বিবেচনায় নিয়ে বর্তমানে ১৬টি ভিসা সেন্টারের মাধ্যমে ভারতীয় ভিসা প্রদান করা হচ্ছে। এসব ভিসা সেন্টারে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আরও বাড়ানো হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদান কার্যক্রম সহজ করা হচ্ছে৷ এর পাশাপাশি দুই দেশের মধেকার যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করা হচ্ছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রনয় কুমার ভার্মা বলেন, দুই দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা উভয় দেশের সাথে যুক্ত। দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্কের উন্নয়নে আমরা যা প্রত্যাশা করি, সে অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ ও ভারতের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন যাতে আরও অগ্রসর হয়, সেলক্ষ্যে কাজ করছে দুই দেশের সরকার।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রনয় কুমার ভার্মার সহধর্মিণী মানু ভার্মা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. শিমুল আহমেদ শিমুল, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার (রাজশাহী) মনোজ কুমার, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, সোনামসজিদ স্থলবন্দর পোর্ট ম্যানেজার মো. মাইনুল ইসলাম, শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চৌধুরী জোবায়ের আহমেদসহ অন্যান্যরা।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভা শেষে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রনয় কুমার ভার্মা সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ'র সাথে মতবিনিময় করে ফিরে আসেন।