শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যেতে হবে: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২, ১০:১৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আগস্ট মাস শোকের মাস, আগস্ট মাস নানা অঘটনের মাস। ১৫ই আগস্টের পর ২১শে আগস্টের মতো ভয়ঙ্কর ঘটনার ইতিহাস রচিত হয়েছে এই আগস্ট মাসেই। এই মাসটি আসলে বাঙালি জাতির সেই কলঙ্কতম অধ্যায়টি আমাদের সামনে উঠে আসে। আগস্টের প্রায় শেষপ্রান্তে আমরা চলে এসেছি। প্রতি বছরে ঘুরে ফিরে আগস্ট আসে এবং আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই কিভাবে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়। আগস্টের খুনিদের বিচারের আওতায় আনার জন্য কমিশন গঠনের যে দাবি সেটা আসলে সময়ের দাবি।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৮১২তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আগস্টের প্রায় শেষপ্রান্তে আমরা চলে এসেছি। প্রতি বছরে ঘুরে ফিরে আগস্ট আসে এবং আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই কিভাবে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়। আগস্টের খুনিদের বিচারের আওতায় আনার জন্য কমিশন গঠনের যে দাবি সেটা আসলে সময়ের দাবি। বঙ্গবন্ধু হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুতের ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় ছিল এবং ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্য যাবতীয় যা কিছু প্রয়োজন ছিল তা আগে থেকেই তৈরি করা হয়েছিল। মূলত জাতির পিতাকে হত্যার এই ষড়যন্ত্র বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে শুরু হয়েছিল। যাতে করে বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া পর তিনি জীবিত অবস্থায় আর বাংলাদেশে ফিরে আসতে না পারেন। ভাষা আন্দোলন থেকেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করেছিলেন এবং এ বিষয়ে তিনি কখনোই আপোষ করেননি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলতে নানামুখী পরিকল্পনা নিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একদিকে খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে দেশি-বিদেশি অপশক্তির ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা। এরমধ্যেই লক্ষ্যে ছিলেন অবিচল ছিলেন বঙ্গবন্ধু। যেসব দেশি-বিদেশি চক্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা ভেবেছিল, বাংলাদেশ কখনো স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ তিন কোটি গৃহহারা মানুষকে পুনর্বাসন করে পোড়ামাটির ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ৭.৪ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে সমৃদ্ধির পথে এগোতে শুরু করল, তখন সেই সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নির্মমভাবে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়। পৈশাচিক এই হত্যাকাণ্ডের সুদীর্ঘ ২১ বছর পর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। কিন্তু ইতিহাসের জঘন্যতম ওই হত্যাযজ্ঞের নেপথ্যে মদদদাতা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে পরিবার-পরিজনসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল, সেই ষড়যন্ত্র এখনো অজানা।