শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিরোনাম: নাইট রাইডার্স পরিবারে ফিরছেন সাকিব    টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব : সাঈদ খোকন    ইসরায়েলগামী অস্ত্রের জাহাজকে নোঙর করার অনুমতি দিল না স্পেন    সম্পর্ক এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন ডোনাল্ড লু : পররাষ্ট্রমন্ত্রী    পুলিশ আইন-শৃঙ্খলার রক্ষার যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত    ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছ স্টেডিয়াম, সিরিজ নিয়ে শঙ্কা     কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে, এটি মিথ্যা প্রচার : ডেপুটি গভর্নর   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
সূর্যমুখী বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়, বিপাকে কৃষক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম আপডেট: ০২.০৩.২০২১ ২:২৬ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ

সূর্যমুখী বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়, বিপাকে কৃষক

সূর্যমুখী বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়, বিপাকে কৃষক

হাজার হাজার বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর কৃষকদের সূর্যমুখী বাগান। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাশের গ্রাম, ইউনিয়ন এমনকি দূর-দূরান্তের মানুষও তৈল বিচ সংগ্রহের জন্য লাগানো সূর্যমুখী ক্ষেতে ছুটে আসছেন উৎসুক জনতা। শুধু এক নজর দেখার জন্য বা একটি সেলফি তোলার জন্য প্রতিদিনই যেসব স্থানে খোঁজ মিলছে সূর্যমুখী বাগানের সেখানেই বাগান ও প্রকৃতি প্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়।

এদিকে, এত মানুষের পদচারণায় ফলন নিয়ে বিপাকে কৃষকরা। দুশ্চিন্তার ভাজ তাদের চোখে মুখে। তাই জমিতে পাহারা বসাতেও বাধ্য হয়েছেন অনেক কৃষক। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ এই দুই উপজেলার সূর্যমুখী নিয়ে প্রতিনিধিদের এসব পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে রিপোর্ট-

কেরানীগঞ্জ : ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার সোনাকান্দা, মুগারচর এবং রসুলপুর গ্রামের দৃশ্যটা ঠিক এমনই। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার হযরতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে এক বিঘা জমিতে সরকারিভাবে পাওয়া সূর্যমুখী বীজ বুনেছেন কৃষক শাহাবুদ্দিন তালুকদার। তেমন কিছু না ভেবেই লাগানো সূর্যমুখীতে এখন তার মুখেও সূর্যের হাসি। তিনি বলেন, ফলন যেমনই পাই কোনো সমস্যা নাই। প্রতিদিন শতশত মানুষ আমার জমিতে আসছে, মানুষ হাসছে, আনন্দ পাচ্ছে এটাই আমার আনন্দ। তবে সবাইকে বলবো ফসলের ক্ষতি না করে সৌন্দর্য উপভোগ করতে। আমার বাগানের জন্য জাতে পাশের কৃষকের কোনো ক্ষতি না হয়, তাই লাগাতার পাহারা দিতে হচ্ছে।

সোনাকান্দা গ্রামের কৃষক আহসানউল্লাহ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসারের দেয়া বীজ ও পরামর্শে ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ শুরু করেছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশা করছেন ভালো লাভ হবে। পাশাপাশি ফুল দেখতে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ আসছে, দেখছে, সৌন্দর্য উপভোগ করেছে, এতে আমিও খুশি, তবে অনেকে ফুলের ক্ষতিও করছে, ফুল ছিড়ে নিচ্ছে, যা আমাকে কষ্ট দেয়। আগামীতে আরও বেশী করে সূর্যমুখীর চাষ করবো ইনশাআল্লাহ। সবুজের মাঝে হলুদ হাসি দেখতে উপজেলার লংকারচর গ্রাম থেকে আইরিন তার বোন ও বোন জামাইকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যমুখীর বাগান দেখতে এসেছেন রসুলপুরে। অন্যের কাছে শুনে এসে বাগান দেখে খুব খুশি তিনি। উপভোগের পাশাপাশি স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি ও ভিডিও ধারন করে নিয়ে যাচ্ছেন। একই ভাবে সাভারের তাসিব, মনির, ইমরানরাও এসেছে খোলা পরিবেশে কৃষকের জমিতে সুর্যের হাসি দেখতে। এক সাথে এতো ফুল দেখে নানা ভঙ্গিতে ছবি তুলতে ভুল করছেন না কেউই।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল আমিন বলেন, আমরা কেরানীগঞ্জের কৃষকদের মাঝে সূর্যমুখীকে পরিচিত করতে এ বছর ১৫০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ বিতরণ করেছি। কম সময় ও পরিশ্রমে অধিক ফলন ও ভালো দাম পাওয়া যায় বলে আমরা কৃষককে সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। প্রতি বিঘা জমিতে ১ কেজি বীজ দিতে হয়। দেড় ফুট অন্তর অন্তর একটি করে বীজবপণ করতে হয়। একটি সারি থেকে আরেকটি সারির দূরত্ব রাখতে হয় দেড় ফুট। মাত্র ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বীজ বপণ থেকে শুরু করে বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রতিবিঘা সূর্যমুখীতে ফলন হয় ৬ থেকে ৭ মণ। যা অন্য যেকোনো ফসলের তুলনায় ভালো। তবে তৈল সংগ্রহ করতে সবাইকে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এক সাথে বেশি তেল না ভাঙানোই উত্তম।

চাঁদপুর : চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের ৮নং হাটিলা গ্রামে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছেন দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া নামে এক কৃষক। আর এই বাগানটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন হাজার হাজার দর্শনার্থী। ইতোমধ্যে চাঁদপুরের ভ্রমণ-পিপাসু মানুষের পছন্দের স্থানে পরিণত হয়েছে এই বাগানটি। কৃষি অধিদফতর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের দেয়া তথ্যমতে, এ বছর কৃষি পুনর্বাসন প্রণোদনার আওতায় জেলার মোট ১০০ জন কৃষককে ১ কেজি করে সূর্যমুখীর বীজ দেয়া হয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য ১৪০০ টাকা।

এছাড়াও সকল কৃষককে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা এবং সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। মনোমুগ্ধকর এই পরিবেশে একটু সময় কাটানোর জন্য আর হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুলের হাসির ঝিলিক দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক জনতা এসে ভিড় করছেন। সূর্যমুখী ফুল দেখতে আসা দর্শনার্থীদের সংখ্যা এতই বেশি যে তাদের অবাধ বিচরণে হুমকিতে পড়েছে বাগানটি। এতে বিপাকে পড়েছেন মালিক পক্ষ। অনেকেই ছবি তোলার জন্য ঢুকে পড়ছেন বাগানের ভেতর। ফুলের চেয়ে বেশি দর্শনার্থীর সংখ্যা।

দর্শনার্থীদের অবাধ চলাফেরায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গাছ ও ফুল। কেউ কেউ জোর করে ছিঁড়ে নিচ্ছেন ফুল, আবার কেউ নিতে চান আস্ত গাছ। ফসলের মাঠের মাঝখানে সূর্যমুখী ফুলের বাগান। ফুটে আছে হাজার হাজার হলুদ বর্ণের সূর্যমুখী ফুল। যে দৃশ্য প্রকৃতিপ্রেমীদের মন জয় না করার কোনো উপায় নেই। সম্প্রতি এই দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকেই বাগানটি এক নজর দেখতে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

সূর্যমুখী ফুল বাগানের দেখতে আসা দর্শনার্থী মো. ইকবাল হোসেন বলেন, আসলে একসঙ্গে এতগুলো সূর্যমুখী ফুল আগে কখনো দেখা হয়নি। তাছাড়া চাঁদপুরে সূর্যমুখীর বাগান আগে কখনও আমি দেখিনি তাই এখানে ছুটে আসা।



মোরশেদ আলম নামের আরেকজন দর্শনার্থী জানান, আমি ঢাকায় থাকি। কিছুদিন ধরে আমার বন্ধুবান্ধব এখানে এসে ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে। সেটা আমি দেখতে পাই। আর সেখান থেকেই বাগানটি নিজের চোখে দেখার আগ্রহ জন্মে। তাই বাড়িতে আসার সঙ্গে সঙ্গে এখানে চলে আসি।


« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]