
দেশের মৌলিক আইনগুলোর নির্ভরযোগ্য বাংলা অনুবাদ করতে নির্দেশ দিয়ে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর কমিটিকে ছয় মাস সময় দিয়ে আগামী ২৯ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কমিটি গঠন করেন।
হাইকোর্টের নির্দেশের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, মৌলিক আইনগুলো বাংলা অনুবাদের জন্য কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়।
কমিটিতে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিলেটিভ শাখার একজন, আইন কমিশন, বাংলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও আইন বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি রাখতে বলা হয়েছে।
রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
শিশির মুনির জানান, প্রয়োজনীয় আইনগুলোর নির্ভরযোগ্য বাংলা অনুবাদ না থাকায় একই আইনে বিভিন্ন বাংলা পরিভাষা ব্যবহার হয়।
মৌলিক আইনগুলোর নির্ভরযোগ্য বাংলা অনুবাদ করতে সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর করা একটি রিটের শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১৪ মার্চ রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
ওই রুলে জানতে চাওয়া হয় যে, আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা অর্থবহভাবে বাস্তবায়নে দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন বাংলায় অনুবাদ করে নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রণয়ন ও প্রকাশে কেনো নির্দেশ দেওয়া হবে না।
রিটের ১০ আইনজীবী এক নোটিশে বলেন, আদালতের যাবতীয় কার্যক্রম আইনের আলোকে পরিচালিত হয়। আদালতের কার্যক্রম সংক্রান্ত মৌলিক আইনগুলো হলো– দণ্ডবিধি-১৮৬০, সাক্ষ্য আইন-১৯৭২, চুক্তি আইন-১৮৭২, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন-১৮৭৭, সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট-১৮৮৭, সম্পত্তি হস্তান্তর আইন-১৮৮২, ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮, দেওয়ানি কার্যবিধি-১৯০৮, তামাদি আইন-১৯০৮, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট (আপিল বিভাগ) রুলস-১৯৮৮, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট (হাইকোর্ট বিভাগ) রুলস-১৯৭৩, ক্রিমিনাল রুলস এ- অর্ডারস-২০০৯, সিভিল রুলস এ- অর্ডারস।
তারা নোটিশে বলেন, অধিকাংশ আইন ব্রিটিশ আমলে এবং ইংরেজি ভাষায় প্রণীত। আদালতে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলার বিভিন্ন পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এসব আইনের গুরুত্ব ও ব্যবহার সর্বাধিক।
এ আইনগুলোর বাংলায় অনুবাদ করে নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রণয়ন ও প্রকাশ ছাড়া আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা ব্যবহারের আইনি বিধান সম্পূর্ণ অর্থহীন এবং অযৌক্তিক বলেও উল্লেখ করেন ওই ১০ আইনজীবী।
তারা বলেন, এখন পর্যন্ত এসব মৌলিক আইনের কোনো নির্ভরযোগ্য বাংলা পাঠ প্রণয়ন করা হয়নি। সর্বস্তরে বিশেষত আদালতে বাংলা ভাষা প্রচলনের স্বার্থে ওই মৌলিক আইনগুলোর বাংলায় অনুদিত নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রকাশ অত্যাবশ্যক।
ভোরের পাতা/আরএস