প্রকাশ: সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪:০০ পিএম আপডেট: ০৯.১২.২০২৫ ৪:০২ এএম

আজ ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনেই মৌলভীবাজার পুরোপুরি হানাদারমুক্ত হয়। এদিন তৎকালীন মহকুমা হাকিমের কার্যালয় (বর্তমান জর্জ কোর্ট ভবনে) মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনসাধারণকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ৪নং সেক্টরের অধীনে, সেক্টর কমান্ডার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চৌকস মেজর সি আর দত্ত’র নেতৃতে মৌলভীবাজারে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
তৎকালিণ ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটতে শুরু করলে প্রতিদিনই এ জেলায় বিজয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতে থাকে। জেলা শহরে প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর ব্রিগেড হেড কোয়ার্টার। যুদ্ধকালীন হানাদার বাহিনীর টর্চার শেল হিসেবে পরিচিত এ বাংকারটিতে নিরীহ মানুষদের ধরে এনে হত্যা, নির্যাতন চালানো হতো, যা আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে। জুড়ি, কমলগঞ্জ, রাজনগর, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, বড়লেখা উপজেলাকে হানাদারমুক্ত ঘোষণার পর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী তিনদিক থেকে আক্রমণের জন্য মৌলভীবাজার শহরের দিকে অগ্রসর হয়। ৭ ডিসেম্বর যুদ্ধের একপর্যায়ে হানাদার বাহিনী পর্যুদস্ত হয়ে সিলেটের দিকে পালিয়ে যায়। ফলে ৮ ডিসেম্বর পুরোপুরি মুক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে মৌলভীবাজার, জেলার সর্বত্র আকাশে উড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা।
এ উপলক্ষে যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ মৌলভীবাজারে উদযাপিত হচ্ছে পাক-হানাদার মুক্ত দিবস। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও শহরের গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, জেলা পরিষদ, মৌলভীবাজার পৌরসভা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মৌলভীবাজার জেলা ইউনিট ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
পরে জেলা প্রশাসক তৌহিদুজ্জামান পাভেল এর সভাপতিত্বে প্রশাসকের হলরুমে আলোচনা সভা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তানভীর হোসেনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। সভায় কালের স্বাক্ষী এ জেলার একমাত্র ব্যাংকার, বধ্যভূমি ও তালিকাভুক্ত গণকবরের স্থানগুলো সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবী জানানো হয়।