প্রকাশ: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫:৫০ পিএম

বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ভোটের দায়িত্বে রাখা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) দশম কমিশন সভা শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৩ নভেম্বর নির্বাচনে ইসলামী ব্যাংক বা সমমনা প্রতিষ্ঠানের কাউকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্ব না দিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) লিখিত দাবি জানায় বিএনপি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপি নেতারা লিখিত প্রস্তাবে এই দাবি জানান।
জানা যায়, ৩৬ দফার একটি প্রস্তাবনা সিইসির কাছে দেয় দলটি। সেখানে বলা হয়েছে- নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বা পোলিং পারসোন্যাল তথা প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বমহলের নিকট চিহ্নিত এমন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিয়োগ প্রদান করা যাবে না। যেমন: ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনা ইত্যাদি। উল্লেখযোগ্য যে, ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংকে সারাদেশে প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিয়োগ বাতিল করেছে এবং এসব শূন্য পদে তড়িঘড়ি করে দলীয় লোকজন নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে মর্মে জনশ্রুতি রয়েছে।
বিএনপির এই প্রস্তাবের তিন দিন পর ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব না দিতে ‘বিএনপির আহ্বান’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বিএনপির এই দাবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অযৌক্তিক এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে অরাজনৈতিক ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে দেশের সব শ্রেণির মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহণ করে সন্তুষ্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন, তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।
এদিকে সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালকসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদের একটি জুম মিটিংয়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে নির্বাচনে জামায়াতের পক্ষে কীভাবে কাজ করবেন সেটার নির্দেশনা দিতে দেখা যায় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদকে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। অবশেষে নির্বাচন কমিশন সব বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নিলো।