
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনে রাজনৈতিক সমীকরণ দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনে সক্রিয় জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু তাহের তালুকদারকে মনোনয়ন দেওয়ার পর দলটির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তৃণমূলে বহু বছর পর এমন সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানাচ্ছেন।
বর্তমানে তিনি নেত্রকোনা–৫ আসনে বিএনপির রাজনীতি সংগঠিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। গণসংযোগ, পথসভা, কর্মীসভা ও তৃণমূল পর্যায়ের সংগঠন শক্তিশালী করার মাধ্যমে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। স্থানীয় রাজনীতিতে তাকে ঘিরে সাধারণ মানুষের আগ্রহ ও প্রত্যাশাও দিন দিন বাড়ছে।
জানা যায়, স্থানীয় রাজনীতিতে পরিচিত নাম আবু তাহের তালুকদার। আন্দোলন-সংগ্রাম, সাংগঠনিক পুনর্গঠন থেকে শুরু করে মাঠে কর্মী ধরে রাখা—সব দিকেই দীর্ঘদিন ধরে সামনে থেকেছেন তিনি। দলের নেতাদের ভাষ্য, পূর্বধলায় যারা রাজনীতি করেন, তারা সবাই জানেন—তাহের ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত অভিযোগ নেই। দলের চাপ, মামলা, হামলা—সবসময় কর্মীদের পাশে ছিলেন।”
নির্বাচনী বিশ্লেষকদের মতে, নেত্রকোনা-৫ আসনের ভোটাররা সাধারণত জনপ্রিয়তা, ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি ও তৃণমূল যোগাযোগকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। সেই জায়গায় আবু তাহের তালুকদারকে ‘গ্রহণযোগ্য’ প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই ইউনিয়নভিত্তিক গণসংযোগ, পথসভা এবং কর্মীসভা শুরু করেছেন তিনি। ধানের শীষের প্রচারণায় এখন ইউনিয়নগুলোর অলিতে-গলিতে নতুন সাড়া দেখা যাচ্ছে।
পূর্বধলা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে বিএনপির তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে সংগঠক হিসেবে আবু তাহের তালুকদার নেত্রকোনার পরিচত মুখ।
দীর্ঘদিন পরে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় হওয়ায় বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে।
তবে মাঠের চ্যালেঞ্জ কম নয়। গত দুই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী এখানে শক্ত অবস্থানে ছিলেন। সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প, স্থানীয় রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক এবং প্রশাসনিক সুবিধা—এসবই প্রতিদ্বন্দ্বিতার সমীকরণ কঠিন করে তুলেছে।
তবে বিএনপির স্থানীয় নেতাদের দাবি, এবারের নির্বাচনে অনেক কিছুই নতুন ইস্যু হয়ে উঠতে পারে। সেগুলোকে সামনে রেখে মাঠে প্রচারণার পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাহের তালুকদার।
পূর্বধলা একটি কৃষিপ্রধান ও অপেক্ষাকৃত দরিদ্র এলাকা। এখানে কর্মসংস্থান, সড়ক-সংযোগ, ফসলের ন্যায্যমূল্য এবং যুবকদের ভবিষ্যৎ—এগুলোই ভোটারদের প্রধান প্রত্যাশা। স্থানীয় কৃষক আবদুল বারেকের মন্তব্য—আমরা কাকে ভোট দেব সেটা দেখবো কে কথা রাখবে। এলাকায় থাকেন, মানুষের খোঁজ নেন—এমন মানুষ চাই। আবু তাহের তালুকদার সবসময় এলাকার মানুষের পাশে ছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আবু তাহের তালুকদারের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো—তার দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক যোগাযোগ ও পরিষ্কার ভাবমূর্তি। এগুলো যদি কার্যকরভাবে ভোটে পরিণত করতে পারেন, তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবেন তিনি।