শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: বাংলাদেশে এলো তারেক রহমানের বুলেটপ্রুফ গাড়ি, দাম কত?   হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর যাবেন খালেদা, মধ্যরাতে আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স   নড়াইল-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মনিরুল ইসলাম   লাবিব গ্রুপের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আলমগীরের সঙ্গে ইউএই রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ    পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন   কেরাণীগঞ্জে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া   খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সেক্রেটারিয়েট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন'র দোয়া মাহফিল    
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
স্বচ্ছতা, কার্যকারিতা এবং জবাবদিহিতার মানদণ্ড: সুপ্রিম অডিট ইনস্টিটিউশনের সংস্কারের একটি প্রস্তাবনা
প্রকাশ: রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ৩:০৩ পিএম









১০৬৬ সালের দিকে অ্যাংলো-স্যাক্সন (Anglo-Saxon) সভ্যতার শেষ দিকে রাজা কর তোলা, তা ব্যয় করা এবং সেই ব্যয়ের যথার্থতা বিচার করার জন্য একটি সংস্থার কথা ভাবেন। তিনি দেখতে পান, বিচারকের কার্যালয়ের মতো এখানেও একটি নিরপেক্ষ ব্যক্তি বা সংস্থাকে এই দায়িত্ব দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে। কারণ বিচারপদ্ধতিতে কোনো বাদী বা বিবাদী বিচারক হতে পারেন না। ফলে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বিচারক বাদী ও বিবাদীর প্রতি সম্পূর্ণ নির্মোহ ও নিরপেক্ষ হয়ে আনীত অভিযোগের সত্য-মিথ্যা যাচাই করে ন্যায়ের পক্ষে রায় দিতে পারেন।

জনগণের কাছ থেকে কর আদায়, বিদেশ থেকে সাহায্য ও ঋণ আনা এবং অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে উচ্চমূল্যে ঋণ গ্রহণ করে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। তাই নৈতিক দিক থেকেই জনগণের এটি জানার অধিকার আছে যে তাদের এই সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার হয়েছে এবং এর বিচ্যুতি শাস্তির আওতায় আনার মতো আইন রাষ্ট্রের রয়েছে। জনগণের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার না করার কারণে ফৌজদারি মামলা ও দণ্ডবিধির আওতায় জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে। এই দিক থেকেই ব্রিটিশ শাসক ভারত শাসন শুরু করলে বিচার বিভাগকে তাদের কার্যাবলি সম্পাদনে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়।

তার কিছু পরেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল এবং দিল্লিতে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের কার্যালয় স্থাপনের সময়ে এই বিভাগকে তারা Quasi-Judicial তথা আধাবিচারিক বিভাগের মর্যাদা ও স্বাধীনতা দেয়। বিশ্বে বিভিন্ন অডিট থাকা সত্ত্বেও সব দেশেই সরকারি হিসাব ও নিরীক্ষা পরিচালনার জন্য যে কার্যালয় রয়েছে, তার নাম সুপ্রিম অডিট ইনস্টিটিউশন, যা জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত একটি প্রতিষ্ঠান। কনিষ্ঠতম বিচারক মুনসেফকেও তারা প্রশাসন ও সমাজ থেকে একেবারে দূরে এবং সম্পর্কহীন করে রাখার আইন প্রণয়ন করে, যাতে তিনি কারো প্রতি পক্ষপাত না করে নিরপেক্ষভাবে বিচার করে প্রয়োজন অনুযায়ী দ্বন্দ্বের নিষ্পত্তি বা অব্যাহতি প্রদান করতে পারেন। অর্থ তথা সম্পদ এবং রাষ্ট্রের একমাত্র মালিক জনগণ বলে বিশ্বের বিভিন্ন শাসনতন্ত্রসহ আমাদের ১৯৭২ সালের শাসনতন্ত্রেও উল্লেখ করা আছে।

কাজেই জনগণের সম্পদ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিরীক্ষা করে তার ওপর প্রতিবেদন পেশ করার কর্তৃত্ব বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলকে (সিএজি) দেওয়া আছে। শাসনতন্ত্রের বিধান মতেই তিনি বা তাঁর কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রজাতন্ত্রের যেকোনো সম্পদসংক্রান্ত রেকর্ডে প্রবেশের ও নিরীক্ষার কর্তৃত্বপ্রাপ্ত। একই সঙ্গে তিনি কী ধরনের পদ্ধতিতে হিসাব সংঘটিত হবে, তা নির্ধারণ করতে পূর্ণ ক্ষমতাপ্রাপ্ত।
বাংলাদেশের হিসাব ও নিরীক্ষা বিভাগ পূর্ণ স্বাধীনতা লাভের ক্ষেত্রে শাসনতন্ত্রে বলা আছে, অডিটরিয়াল ফাংশনে সিএজিকে কেউ কোনো নির্দেশনা দিতে পারবে না। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে তিনি স্বাধীন, তাঁর পদবি কম্পট্রোলার অর্থাৎ হিসাব এবং অডিটর অর্থাৎ নিরীক্ষক—এই দুই দায়িত্ব দিয়ে সংযুক্ত।







হিসাব প্রস্তুত ও সংরক্ষণের জন্য প্রজাতন্ত্রের ফিন্যান্স অ্যাকাউন্টস তৈরি করা হয়। এই বিভাগে কর্মরত জুনিয়র অডিটর, অডিটর, এসএএস অধীক্ষক, নিরীক্ষা ও হিসাব কর্মকর্তা/সহকারী অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল এবং উচ্চতর কর্মকর্তা যে নিয়োগবিধি অনুযায়ী নিয়োজিত হন, তা সিএজির সামগ্রিক তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হয়। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে যে এসএএস পরীক্ষা পরিচালিত হয়, তা-ও সিএজির কার্যালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং প্রয়োগ হয়। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের মাধ্যমে সরাসরি নিয়োজিত অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল ও অডিটর থেকে শুরু করে পরবর্তী ধাপের কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভাগীয় ব্যুৎপত্তিলাভের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং বিভাগীয় পরীক্ষা সিএজির অধীন ফিন্যানশিয়াল ম্যানেজমেন্ট একাডেমি নিয়মিতভাবে পরিচালিত হয়।
আইনানুগভাবে একমাত্র ১২তম গ্রেডের কর্মচারী জুনিয়র অডিটর ও অডিটরদের সরাসরি নিয়োগকর্তা হচ্ছেন সিজিএ ও অন্যান্য বিভাগের প্রধান। 

হিসাব প্রণয়নের ক্ষেত্রে এই দুই শ্রেণির কর্মচারীরা উচ্চতর অধিক্ষক এবং এঅ্যান্ডএও হলেও হিসাব নিরীক্ষার ক্ষেত্রে তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনা ছাড়া তাঁরা স্বাধীনভাবে হিসাব প্রণয়ন বা নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে পারেন না। এমতাবস্থায় হিসাব প্রণয়ন ও নিরীক্ষার কাজে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত সব কর্মচারী বাংলাদেশের সিএজির অধীন। দ্বিতীয়ত, সিজিএ কার্যালয়ে কর্মরত কোনো কর্মচারী দ্বিতীয় শ্রেণির পদে উন্নীত হওয়া মাত্রই তিনি বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে সিএজির নির্দেশে পদায়িত ও দায়িত্ব পালনে বাধ্য। ফলে প্রস্তাবিত হিসাব পৃথক্করণ সিএজির স্বাধীনতাকে শুধু খর্ব করবে না, তাঁর অধীনদের দায়িত্ব পালনে নতুন জটিলতার সৃষ্টি করবে। কারণ অর্থ বিভাগ হিসাব প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনো পেশাগত যোগ্যতার অধিকারী নয়। এই যোগ্যতার অধিকারী হচ্ছেন নিয়োগবিধি অনুযায়ী হিসাব ও নিরীক্ষা বিভাগের জুনিয়র অডিটর থেকে উচ্চতর পদের সবাই। ফলে অর্থ বিভাগের অধীনে হিসাবকে আলাদা করে নিলে তা সম্পূর্ণ হবে অপরিপক্ব কাজ।
সিএজির কার্যালয়কে যেখানে আধাবিচারিক বিভাগ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার বিকাশের কাজ তিন দশক ধরে চলমান, তাকে এগিয়ে নেওয়ার বদলে এই হিসাব পৃথক্করণের পদক্ষেপ জনস্বার্থে ক্ষতিকর হবে। উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালের ডিপার্টমেন্টালাইজেশন অব অ্যাকাউন্টসে প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় (সিএও) প্রতিষ্ঠার সময়ে বলা হয়, যেকোনো মন্ত্রণালয়ে বিভাগের সিএও মন্ত্রণালয়ের অধিক্ষেত্রে কোনো আর্থিক দাবি বা বিল অনুমোদন কিংবা প্রত্যাখ্যানের ক্ষেত্রে তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন, তবে প্রত্যাখ্যানের ক্ষেত্রে তিনি মুখ্য হিসাবদানকারী কর্মকর্তা (পিএও) বা সচিবের কাছে নথি উপস্থাপন করবেন। বস্তুতপক্ষে এ ধরনের প্রত্যাখ্যানকে অনুমোদন করার কোনো আইনসংগত ক্ষমতা সচিবের নেই, বরং পিএও তাঁর অধীন দপ্তরের সব সরকারি তহবিলের সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবহার নিশ্চিত করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত। তা সত্ত্বেও তিনি সিএওর মতামতকে অগ্রাহ্য করে কোনো আর্থিক দাবি অনুমোদনের আদেশ দিলে মাসিক ভিত্তিতে এ ধরনের আইনবহির্ভূত অনুমোদন কেসের তালিকা অর্থ বিভাগে প্রেরণ করতে হবে। এই ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ১৯৮৩ সাল থেকে এসংক্রান্ত রেকর্ডস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে সিএও একটি স্বতন্ত্র কার্যালয় হওয়া সত্ত্বেও পিএও কতসংখ্যক ক্ষেত্রে তাঁর কর্তৃত্বের বাইরে গিয়ে সিএওর মতামতকে অগ্রাহ্য করে অর্থ ব্যয় করেছেন। আর সেই আইনসংগত অবস্থা থেকে এক্ষুনি প্রস্তাবিত হিসাব পৃথক্করণ তথা সিজিএকে অর্থ বিভাগের অধীনে ন্যস্ত করার পদ্ধতি বিধি ও কর্তৃত্বের বাইরে অর্থ ব্যয়ের প্রবণতাকে আরো উৎসাহিত করবে।

শাসনতন্ত্রের বিধান থাকা সত্ত্বেও গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সিএজির কর অ্যাসেসমেন্ট অডিট করার ক্ষমতাকে রহিত করা হয়েছে। অথচ সিএজির অধীন বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর কর বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত আয়কর নিরীক্ষা করে, তাতে বিপুলসংখ্যক আন্ডার অ্যাসেসমেন্ট উদঘাটন করে করদাতাকে পুনরায় নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে সেই কর আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছিল, যার তথ্য সিএজির কার্যালয় থেকে তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী অবলোকন করা যেতে পারে।
উন্নত দেশ তো বটেই, এশিয়ার অনেক দেশ; যেমন—ইউনাইটেড আরব এমিরেটস, কুয়েত, কাতার ইত্যাদি দেশে এই আধাবিচারিক ক্ষমতা ও মর্যাদা থেকেই সেখানকার সিএজির কার্যালয়ের নাম হচ্ছে কোর্ট অব অডিট। ফ্রান্সের কার্যালয়টির নাম হচ্ছে কোর্ট অব অডিট। এসব কার্যালয়ের প্রধান আর্থিক শৃঙ্খলা বা দুর্নীতির ক্ষেত্রে কাউকে সন্দেহভাজন মনে করলে সমন জারি করেন এবং তাঁর কর্মকর্তাদের কর্তৃক আদালত বসিয়ে সন্দেহ প্রমাণিত হলে তাঁদের দণ্ড বিধান করতে পারেন এবং এই কাজ তাঁরা নিয়মিত করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল অ্যাকাউন্টেবিলিটি অফিস (GAO) একই পদ্ধতিতে সন্দেহভাজন যে কাউকে সমন জারি করে আদালতের পদ্ধতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করে দ্বণ্ড বিধান করতে পারে। এই হচ্ছে সব দেশের সিএজিদের ক্ষমতা ও স্বাধীনতা। এই অবস্থায় বাংলাদেশের সরকারি নিরীক্ষা ও হিসাবের সর্বোচ্চ কার্যালয়কে অধিকতর স্বাধীনতা এবং বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার পরিবর্তে প্রস্তাবিত পৃথক্করণের পদক্ষেপ নেওয়া ভবিষ্যতে যেকোনো সরকারকে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে আরো স্বেচ্ছাচারী হতে সহায়তা করবে বলে মনে করার যুক্তিযুক্ত কারণ রয়েছে।

অন্যদিকে অস্ট্রিয়া, জার্মানি ও বুলগেরিয়ার মতো দেশে সিএজির পদমর্যাদা ওই সব দেশের আইন ও বিচার মন্ত্রীর সমান। অথচ প্রস্তাবিত সার্চ কমিটিতে দেখা যাচ্ছে, ভবিষ্যতে এই পদের পদাধিকারীকে বাছাইয়ের জন্য গঠিত সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে ডেপুটি স্পিকারের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি সিএজির পদপর্যাদাকে হ্রাস করবে। এ ক্ষেত্রে মাননীয় স্পিকারের সমতুল্য কাউকে এই কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রাখা যেতে পারে। এটি ঠিক যে বিভিন্ন ব্যক্তি ও কার্যালয়ের পেশকৃত বিভিন্ন আর্থিক দাবিসংক্রান্ত বিল নিষ্পত্তি হতে বিভিন্ন সিএএফও কার্যালয়ে বিলম্ব হয় বলে কোনো কোনো সেবাগ্রহীতার মনে ধারণা আছে। কিন্তু এর সপক্ষে এটিও বিবেচ্য যে অর্থ ও হিসাব সম্পর্কিত আইনগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ কথাও বিবেচ্য যে বিচার বিভাগে একটি মামলা নিষ্পত্তিতে দুই থেকে ১৮ বছর, পুলিশের একটি চার্জশিট প্রণয়নে দুই বছর, ভূমিসংক্রান্ত একটি সেটলমেন্ট করতে এসি ল্যান্ড অফিসে গড়ে সাত থেকে ১০টি শুনানি এবং কয়েক বছর সময় লাগে। তাড়াহুড়া করে এগুলো নিষ্পত্তি করলে সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের প্রতি অন্যায় করা হতে পারে। তেমনি কোনো চিকিৎসাক্ষেত্রে মেডিক্যাল অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও প্রফেসরের জ্ঞান বা রোগ নিদানের দক্ষতা এক হয় না। যেসব ক্ষেত্রে কনিষ্ঠ কর্মকর্তা উচ্চতর পরামর্শ গ্রহণের বা রেফার করার প্রয়োজন বোধ করেন, সে ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ব্যয় করার প্রয়োজন হয়। এখানে উল্লেখ্য, পেশাগত ভুল করার কারণে সব সময় হিসাব ও নিরীক্ষা বিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভিন্ন ফৌজদারি মামলা ও বিভাগীয় মামলায় শাস্তি পাচ্ছেন।
শাসনতন্ত্রের মূলনীতির বাইরে কোনো আইন প্রণয়ন করলে তা এক পর্যায়ে টেকে না। এক দল গঠন এবং বিভিন্ন ইনডেমনিটি আইনে প্রদত্ত অপরাধের রেহাই পরবর্তী সময়ে টেকেনি এবং অপরাধীরা শাস্তির আওতায় এসে দণ্ড ভোগ করেছেন। সিএজির দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বর্তমানে সংস্কার করার আগে এর সঙ্গে শাসনতন্ত্রের মূলনীতি তথা কার্যালয়টির বিচার বিভাগের মর্যাদা ও স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। জুলাই সনদের অন্তর্ভুক্ত এই বিষয়গুলোর যথার্থতা রাজনীতিবিদরা বিবেচনা করবেন বলে আশা করি। একদিকে বিচার বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা ও তার জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত সরকারি নিরীক্ষা ও হিসাব বিভাগের আইনসংগত কর্তৃত্ব ও মর্যাদাকে হ্রাস না করে বরং বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলছেন, ১৯৭১-এর মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কোনো আপস করা সম্ভব না। ১৯৭২ সালের শাসনতন্ত্র ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ব্রিটেনে তৈরি। ভারত শাসনের সময়ে এই বিভাগসংক্রান্ত ধারণা ব্রিটিশ শাসকদের আনা। ঔপনিবেশিক, ঘুণে ধরা এবং পুরনো বলে এমন গুরুত্বপূর্ণ আইনকে হালকাভাবে দেখে সংস্কার করা দীর্ঘ মেয়াদে জনকল্যাণমুখী হবে না। কাজেই অর্থের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো সংস্কার করার আগে সেই শাসনতন্ত্রের মূলনীতির কথা দায়িত্বশীল সবার মনে রাখতে হবে।

লেখক : সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব ও প্রজাতন্ত্রের সাবেক কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com