বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫ ১ শ্রাবণ ১৪৩২

শিরোনাম: শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ   হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম   সিরিয়ার সেনা সদর দপ্তরে ইসরায়েলের হামলা   গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষ, নিহত ৩   সারা দেশে ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা   গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ৪ প্লাটুন বিজিবি   পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
‘হয় স্বাক্ষর দেন, নইলে থানায় চলেন’ ইউপি চেয়ারম্যানকে যুবদল নেতার হুমকি
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ৫:০৮ পিএম

‘হয় স্বাক্ষর দেন, নইলে থানায় চলেন’- এমন হুমকি দিয়ে চায়ের দোকানে বসে জোরপূর্বক চেয়ারম্যানের দায়িত্বপত্রে স্বাক্ষর নিলেন বরগুনার আমতলী সদর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ইউপি সদস্য ফিরোজ খান (তাপস)।

বরগুনার আমতলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধার কাছ থেকে এমনভাবে দায়িত্ব নেন ফিরোজ খান।

বৃহস্পতিবার দুপরে আমতলী উপজেলা পরিষদ সড়কের সামনে শ্যামলের চায়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা।

জানা গেছে, আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা গত বছর ২১ আগস্ট দায়িত্ব পান। ওই সময় থেকে তিনি ভালোভাবেই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। গত ১৬ জুন থেকে চেয়ারম্যান মিঠু মৃধাকে পরিষদে যেতে দেন না আমতলী সদর ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী যুবদল আহবায়ক ফিরোজ খান (তাপস)। তিনি চেয়ারম্যানকে অফিস আসতে বারণ করে দেন। অফিসে আসলে তাকে মারধর ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি (তাপস)।

গত তিন দিন যাবত যুবদল আহ্বায়ক ইউপি সদস্য তাপস খানের ভয়ে অফিসে যেতে পারছেন না এমন অভিযোগ চেয়ারম্যান মিঠুর।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু আমতলী উপজেলা পরিষদ সড়কের সামনে শ্যামলের চায়ের দোকানে বসা ছিলেন। ওই সময় যুবদল আহ্বায়ক ইউপি সদস্য তাপন খান, আরও দুই ইউপি সদস্য মাসুদ ও জসিমসহ যুবদল নেতাকর্মী নিয়ে চেয়ারম্যানকে চায়ের দোকানে আটকে রাখেন। পরে তাকে চিঠিতে স্বাক্ষর দিতে বলেন। চেয়ারম্যান স্বাক্ষর দিতে রাজি হয়নি। পরে যুবদল আহবায়ক বলেন- হয় স্বাক্ষর দেন, নইলে থানায় চলেন। পরে যুবদল আহ্বায়ক তাপন খানের লেখা একটি পত্রে জোরপূর্বক চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর রেখে দেন। দায়িত্বপত্রে স্বাক্ষর রেখে দেওয়ার পরে তারা চেয়ারম্যানকে অন্যত্র সরে যেতে নির্দেশ দেন।

ওই চিঠিতে উল্লেখ আছে, চেয়ারম্যান অসুস্থতার কারণে ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফিরোজ খানকে (তাপস) ১৯ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা চায়ের দোকানে বসা ছিলেন। ওই সময় আমতলী সদর ইউনিয়ন যুবদল আহ্বায়ক তাপন খান আরও কিছু লোক নিয়ে এসে চেয়ারম্যানকে একটি কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। চেয়ারম্যান স্বাক্ষর দিতে রাজি ছিল না। তখন যুবদল আহ্বায়ক তাপন হুমকি দেন। চেয়ারম্যান নিরুপায় হয়ে চিঠিতে স্বাক্ষর দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন।

চায়ের দোকানদার শ্যামল বলেন, চেয়ারম্যান আমার দোকানে বসা ছিলেন। পরে তাপন খানসহ বেশ কয়েকজন লোক এসে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারপর কী হয়েছে আমি জানি না? এর বেশি কিছু বলতে পারব না।

আমতলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম মিঠু বলেন, ফিরোজ খান (তাপস) গত ১৬ জুন থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন। আমাকে অফিসে যেতে দেননি। বৃহস্পতিবার দুপুরে আমি শ্যামলের চায়ের দোকানে বসা ছিলাম। ওই সময় তাপস খানসহ যুবদল নেতাকর্মীরা এসে আমাকে তার লেখা একটি পত্রে স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমি স্বাক্ষর দিতে চাইনি। পরে হুমকি দেন- ‘হয় স্বাক্ষর দেন,  নইলে থানায় চলেন’।  আমি নিরুপায় হয়ে স্বাক্ষর দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ওই পত্রে কী লেখা আছে তা আমি জানি না। আমাকে চিঠি পড়তেও দেওয়া হয়নি।

আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ যুবদল আহ্বায়ক ইউপি সদস্য ফিরোজ খান (তাপস) জোরপূর্বক চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান অসুস্থতার কারণে আমাকে ১৯ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছেন।

তবে চেয়ারম্যান কেন আপনাকে চায়ের দোকানে বসে দায়িত্ব দেবে, ইউনিয়ন পরিষদ অফিস ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তা আমি বলতে পারব না। চেয়ারম্যানকে আপনি তিন দিন অফিসে আসতে দেননি, বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছেন- এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।

আমতলী উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক মো. কবির ফকির বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। ফিরোজ খান (তাপস) আমতলী সদর ইউনিয়ন যুবদল আহ্বায়ক। তার বিরুদ্ধে দলের নাম ভাঙিয়ে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িতের অভিযোগ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তিনি (তাপস) সংগঠনবিরোধী কোনো কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকলে জেলা যুবদল আহ্বায়কের সঙ্গে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন,  ফিরোজ খানকে (তাপস) আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কিনা তা আমি জানি না। আমি এমন কোনো চিঠি পাইনি।

তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যানের (মিঠু) কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com