
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার রাজারামপুরে এক পাঁ না থেকেও পরিবার বাঁচাতে লড়াই ও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোরহুম নজরুল ইসলামের সন্তান রাকিবুল ইসলাম। এ শূন্যতায় কাঁদছে পরিবার সাথে প্রতিবেশীরাও।
এক নিম্নবিত্ত পরিবারে স্বাভাবিক শিশুর মতো জন্মগ্রহণ করেন রাকিবুল ইসলাম। আস্তে আস্তে বড় হয়ে পরিবারের দায়িত্ব নেন তিনি। সুখে শান্তিতে বসবাস করছিলেন তিনি।
হঠাৎ করে ১৯৯৮ সালে তার জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। বরেন্দ্র অঞ্চলে কাজ করার সময় কোদালের আঘাতে ডান পাঁ কেটে যায় এবং ফুলে ইনফেকশন হয়ে। দীর্ঘ দিন যাবত চিকিৎসা শেষে ডান পাঁয়ের হাঁটুর চার ইঞ্চি পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়।
পরে ডা. ভুল চিকিৎসায় একই সময় বাম পাও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাম পায়ের বুড় আঙুলসহ পাশের আঙুলটাও পঙ্গু হাসপাতালে অপারেশন করেন তিনি। বাড়ি ফিরে এসে অন্ধকার দেখতে শুরু করেন। কি করবেন, কিভাবে ছয় সদস্যের সংসার পরিচালনা করবেন।
এমতাবস্থায় এগিয়ে আসেন বিদেশে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী। তিনি তার চলাচলের জন্য একটা হুইল চেয়ার ও কিছু পুজি দেন বাড়িতে দোকান করার জন্য। এভাবেই চলছে রাকিব এর সংসার।
বাবা মুক্তিযোদ্ধা হবার সুবাদে ২০১৬ সালে সরকার একটা বাড়ি নির্মাণ করে দেন। তার মা বেঁচে থাকায় একসাথে বসবাস করেন তিনি। সমস্যা হোল বাড়ির ল্যাট্রিন দূরে থাকায় সাংঘাতিক কষ্ট করছেন তিনি। বর্তমানে তার যে শারীরিক অবস্থা চলাফেরা করা ভীষণ কষ্টকর। তার দাবি সরকারিভাবে ঘর সংলগ্ন একটা ল্যাট্রিনের।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এই সন্তানের কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা রওশন আরা বেগম। তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধার যে ভাতা পান তিনি, এর ভিতর খুব সামান্য অংশ দু’ছেলেকে দিয়ে নিজে চলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারিভাবে রাকিবের জন্য জরুরি ভিত্তিতে একটা ঘর সংলগ্ন ল্যাট্রিনের নির্মাণের আবেদন করেন এ প্রতিবেদকের কাছে।
সিটি প্রেসক্লাব চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, রাকিবের বেঁচে থাকার অধিকার যেমন আছে তেমনি রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব রয়েছে। তিনি সাংবাদিক সুশীল সমাজসহ ধনাঢ্য ব্যবসায়িদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোসা. তাছমিনা বেগম বলেন ,তিনি খোঁজ-খবর নিয়েছেন বিষয়টি আসলেই কষ্টের। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রকার সহযোগিতাসহ তার পাশে থাকবে।
তার বড় মেয়ে সুমাইয়া রাজারামপুর হাসিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। সে জানায় তার পিতা রাকিবুল ইসলামকে যারা সাহায্য করতে চান তার বিকাশ নম্বর ০১৯৭৬০৮৮৯২৬ যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।