টাঙ্গাইলে ছাত্র প্রতিনিধি তথা সমন্বয়ক পরিচয়ে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের ছয়তলা বিশিষ্ট ভবন দখল করার অভিযোগ উঠেছে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি নামের এক তরুণীর বিরুদ্ধে।
শনিবার দুপুরে শহরের ছোটকালীবাড়ি এলাকায় জোয়াহেরুল ইসলামের বাসার তালা ভেঙে ২০ জন পাগল নিয়ে ভবনে প্রবেশ করেন মিস্টি।
নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি জানান, ফেসবুকে পূর্বঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সকল নেতাদের বাড়িতে পাগলদের জন্য ‘আশ্রম’ গড়ে তোলা হবে। তারই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে তালা ভেঙে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের ছয়তলা ভবনে প্রবেশ করা হয়েছে।
ওই বাসায় আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের ২০ জন পাগল রাখা হয়েছে বলে জানান মিস্টি। তিনি জানান, এটাকে জবরদখল বলা যাবে না, কারণ কোনো ব্যক্তি বিশেষের ব্যবহারের জন্য ভবনটি নেওয়া হয়নি। সমাজের অবহেলিত পাগলদের জন্য আশ্রম করা হচ্ছে। এটাকে অন্য সমন্বয়করা তাকে সমর্থন দিয়েছেন বলেও জানান মিস্টি।
মিস্টি আরও জানান, জেয়াহেরুল ইসলামের পক্ষ থেকে একজন লোক এসে জানায় ‘বাসা না ভেঙে সেখানে যেন আশ্রম করা হয়’। তার প্রস্তাব অনুযায়ী পাগলদের আশ্রমই তৈরি করা হয়েছে।
তবে এ কথা কে বলেছে তার নাম-পরিচয় বলতে পারেননি মিস্টি। আবাসিক এলাকায় পাগলের আশ্রম তৈরি করায় স্থানীয়রা অস্বস্তি প্রকাশ করলেও তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে মিস্টি বলেন, ‘আবাসিক এলাকার মানুষের জীবনযাত্রায় যদি পাগলদের কোনো প্রভাব পড়ে তাহলে যারা বেশি পাগল তাদেরকে অন্য কোনো আওয়ামী লীগের নেতার বাসায় স্থানান্তর করে কম পাগলদের এখানে রাখা হবে।’
জোয়াহেরুল ইসলামের মেয়ে জাকিয়া ইসলামের দাবি, তাদের কাছে ১০ কোটি টাকা চাঁদা চাওয়া হয়েছিল। সেই টাকা না দেওয়ায় বাড়িটি জবরদখল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে টাঙ্গাইলের সমন্বয়ক আল আমিন জানান মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি নামক একজন নারী ছাত্র প্রতিনিধি তথা সমন্বয়ক পরিচয়ে জনৈক আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় পাগলের আশ্রম করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। তারা এটাকে কোনোভাবেই সমর্থন করেন না। তাছাড়া মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছিল—তাই বলে তিনি বিশেষ সুবিধা নেবেন এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের মূল স্পিরিটের সঙ্গে যায় না।
আল আমিন আরও জানান, বর্তমানে কেউ সমন্বয়ক পরিচয় দিতে পারবে না। কারো বাড়ি দখল করার কোনো কার্যক্রম তারা হাতে নেননি। যে কেউ এরকম কাজ করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহম্মেদ জানান, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। যেহেতু ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীরা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে ফেলেছেন, সেখানে ছাত্র প্রতিনিধি বা সমন্বয়ক বলতে আর কিছু থাকে বলে তার মনে হয় না। এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের বাসায় ঢুকে লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম সপরিবারে আত্মগোপনে রয়েছেন। এর আগেও মিস্টির নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরনের বাসা ভাঙচুর করা হয়।
আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ: জামায়াত আমির
খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়ার আয়োজন রাষ্ট্রপতির
খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে জার্মানি থেকে আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স 
নতুন পে স্কেলের গ্যাজেট প্রকাশ নিয়ে সুখবর
দেশব্যাপী কলেজ শ্রেণিবিন্যাস: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয় কলেজ ‘সি’ ক্যাটাগরিতে
আগামী জুলাই থেকে সব প্রতিষ্ঠানে ক্যাশলেস লেনদেন: গভর্নর
