প্রকাশ: শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩৩ AM

বরগুনায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। জেলা পর্যায়ে এ কার্যালয়টি ফ্যাসিবাদের আঁতুড়ঘর এবং এখান থেকে হামলা ও গুমের নির্দেশ দেওয়া হতো দাবি করে কার্যালয়টিকে ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বরগুনা পৌরসভার শের-ই বাংলা রোডের ফার্মেসি পট্টি নামক এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের এ কার্যালয়টিতে ভাঙচুর করা হয়।
সরেজমিনে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও জনতা একত্রিত হয়ে তালাবদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টিতে ভাঙচুর চালাচ্ছেন। তবে কার্যালয়টির ঘর টিনের তৈরি হওয়ায় কোনো প্রকার ভারী যন্ত্রপাতির ব্যবহার করা হয়নি। বিভিন্ন ধরনের লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুর চালান তারা। এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ সরকারের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগানও দিতে থাকেন।
জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর বিষয়ে বরগুনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের মধ্যে মুঈদ হাসান নিলয় ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সবাই জানি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এটি ছিল আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের একটি আঁতুড়ঘর। এখান থেকেই জেলাভিত্তিক নির্দেশনা দেওয়া হতো কার কার বাসায় হামলা করা হবে, কাকে কাকে গুম করা হবে। তাই মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদকে কবর দেওয়ার জন্য এ মুখ্য ঘরগুলোকে আগে ধ্বংস করছি। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আওয়ামী লীগের যত চেম্বার ঘড় রয়েছে তা ধ্বংস করার জন্যই এসেছি। এর মানে এর ভেতর দিয়ে মুজিববাদকে কবর দিচ্ছি এবং ফ্যাসিবাদের সর্বশেষ চিহ্নটুকু নিশ্চিহ্ন করতে আমরা এসেছি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা যেভাবে নেমে এসেছিল আজকেও ঠিক একইভাবে একত্রিত হয়ে নেমেছি আমরা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আরেক সমন্বয়কারী মীর রিজন মাহমুদ নিলয় ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৫ আগস্টের আগে আমাদের ছাত্রদের নির্বিচারে হত্যা করেছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসররা। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এতগুলো মানুষকে হত্যার পরে তারা আবার কীভাবে বাংলাদেশে বক্তব্য দেয়। তাদের বিচার হয়নি, তারা কীভাবে এখন আবার রাজনৈতিক কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। তাদের মধ্যে সামান্যতম জ্ঞান নেই নির্মমভাবে ছাত্রদের হত্যার পরে তারা আবারও কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। বাংলাদেশে আবারও তারা রাজনীতি শুরু করতে চায়। আমরা এর প্রতিবাদেই মুজিববাদের কবর রচনা করব। সব জায়গা থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনাকে বয়কট করে দেব। এবং মুজিববাদের কোনো কিছু আর বাংলার মাটিতে আমরা রাখব না।
উল্লেখ্য, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের ওই কার্যালয়টি ভাড়ার চুক্তিতে ৫৫২ স্কয়ার ফিট আয়তনের সরকারি জমি বরাদ্দ নিয়ে একটি টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। তবে ২০০৯ সালের পর থেকে কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা ওই ঘরের কোনো ভাড়া পরিশোধ করেনি জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে দীর্ঘ ১৬ বছরের ভাড়া বকেয়া থাকায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রশাসন ভাড়া আদায়ের একটি নোটিশ দিয়ে ঘরটিকে তালাবদ্ধ করে দেয়।