প্রকাশ: সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ৬:৩২ পিএম

মোংলা বন্দরে নিলামে উঠেছে শুল্কমুক্ত কোটায় আনা সংসদ সদস্যদের (এমপি) ল্যান্ড ক্রুজার ব্রান্ডের ৩টি বিলাসবহল গাড়ি। এর মধ্যে একটির জন্য দরপত্র বা বিট দাখিল হলেও বাকি দুটি গাড়ির জন্য দরপত্রই জমা দেয়নি কেউ। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংসদ ভেঙে যাওয়ায় বন্দর থেকে এসব গাড়ি ছাড়িয়ে তা ব্যবহারের সুযোগ পাননি এমপিরা।
এর আগে গেল বছরের ১৭ জুলাই গাড়ি তিনটি মোংলা বন্দরে আমদনি করেন টাঙ্গাইল-৮ আসনের অনুপম শাহজাহান জয়, দিনাজপুর-১ আসনের মুহাম্মদ জাকারিয়া ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাসিমা জামান ববি। তারা এখন পলাতক।
তথ্য বলছে, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে গত ৬ আগষ্ট সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। কপাল পোড়ে দ্বাদশ সংসদের সদস্যদের। আরও অনেক কিছুর মতো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়ি হাতছাড়া হয় তাদের। এভাবে মোংলা বন্দরে পড়ে থাকে সাবেক এমপিদের ল্যান্ডক্রুজার ব্রান্ডের ৩টি প্রাডো গাড়ি। যার একটির বাজার মূল্যে ১০ কোটি টাকা। এসব গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় গেল বছরের ১৭ জুলাই মোংলা বন্দরে আমদানি করে টাঙ্গাইল-৮ আসনের অনুপম শাহজাহান জয়, দিনাজপুর-১ আসনের মুহাম্মদ জাকারিয়া ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাসিমা জামান ববি। এই তিনটিসহ দীর্ঘদিন অনেক গাড়ি বন্দর শেডে পড়ে থাকায় বিড়াম্বনার শিকার হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন এই তিনটিসহ ৩০০টি মোংলা বন্দরে পড়ে আছে। বারবার নিলামে তুললেও এসব গাড়ি বিক্রি হয় না। ফলে বছরের পর বছর এই বন্দরের শেড ও ইয়ার্ডে গাড়িগুলো পড়ে অকেজো বা বিকল হচ্ছে। তার আশা দ্রুত আমদানিকারকরা এই সমস্যার সমাধান করবেন।
এদিকে আত্মগোপন বা বিদেশে পালিয়ে যাওয়া সংসদ সদস্যের গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে আমদানিকারকদের আইনি নোটিশ দেওয়ার পর তা নিলামে তোলে মোংলা কাস্টমস হাউস। তবে গত বছরের ২৫ নভেম্বর নিলামে তোলা এসব গাড়ির মধ্যে একটির বিপরীতে দরপত্র জমা পড়লেও বাকি দুটির বিপরীতে দরপত্রই জমা দেয়নি নিলামে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা।
মোংলা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার মো. রুবেল হাসান ভোরের পাতাকে বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই সাবেক এমপিদের তিনটি ল্যান্ড ক্রুজার ব্রান্ডের তিনটি প্রাডো গাড়ি আমদানি হয়। এরপর এই গাড়ি তিনটি সময়মতো কেউ ছাড়িয়ে না নেওয়ায় গাড়ি তিনটি নিজেদের অধীন নেয়।
এরপর তা গত বছরের ২৫ নভেম্বর নিলামে তোলা হয়। তবে এখনও বিক্রয় আদেশ হয়নি বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, তৎকালীন সামরিক সরকার এইচ এম এরশাদ এমপিদের খুশি করতে ১৯৮৭ সালে প্রথম শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা দেন। ২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকার বিধানটি বাতিল করলে ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে বিধানটি আবার চালু করে। এতে গেল ১৫ বছরে সরকার রাজস্ব হারায় কয়েক হাজার কোটি টাকা।