বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ২৮ কার্তিক ১৪৩১

শিরোনাম: আকস্মিকভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবের অতিরিক্ত সাধারণ সভা আহ্বানে গভীর উদ্বেগ   নির্বাহী কমিটি করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, থাকবেন যারা   দেড় লাখ টাকায় মালয়েশিয়ায় ‘শ্রমিক পাঠানো সম্ভব’   জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় নতুন অর্থনৈতিক কাঠামোর আহ্বান ড. ইউনূসের   কাকরাইল মসজিদ নিয়ে আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন জুবায়েরপন্থিরা   জনগণই বিচার করবে আমাদের কার্যক্রম: মাহফুজ আলম   পঞ্চদশ সংশোধনীর রুলে পক্ষভুক্ত হলেন সুপ্রিম কোর্টের ৪ আইনজীবী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বিশ্ববিখ্যাত রয়্যাল এনফিল্ড ৩৫০ সিসি বাইক বাজারে, দাম জানুন
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪, ৬:২১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

বিশ্বে মোটরসাইকেলের বাজারে রাজকীয় এক মডেলের নাম বিখ্যাত রয়্যাল এনফিল্ড। জনপ্রিয় এই বাইকের প্রতি বাংলাদেশের বাইকপ্রেমীদেরও রয়েছে তুমুল আগ্রহ। এতদিন বাংলাদেশে এই বাইকটি চালানোর অনুমতি ছিল না। 

তবে তাদের আফসোসের দিন এবার শেষ হয়েছে। সুখবর হলো বাংলাদেশের বাজারে এসেছে রয়্যাল এনফিল্ডের বিলাসবহুল এ বাইক।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দেশের বাজারে উন্মুক্ত হয়েছে প্রাচীনতম ব্রিটিশ টু-হুইলার ব্র্যান্ড ‘রয়্যাল এনফিল্ড’-এর ৩৫০ সিসির মোটরসাইকেল।

দাম জানুন

রয়্যাল এনফিল্ড মোটরসাইকেলের স্থানীয় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ইফাদ মোটরস জানিয়েছে, বাইকটি উৎপাদনের জন্য কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একটি সর্বাধুনিক উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে; যা বিশ্বমানের মোটরসাইকেল উৎপাদন করতে সক্ষম।

জানা গেছে, বিশ্ববাজারে রয়্যাল এনফিল্ডের চারিটি মডেল আছে। বাংলাদেশি টাকায় রয়্যাল এনফিল্ড হান্টার ৩৫০ সিসির দাম পড়বে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০ সিসির দাম পড়বে ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা। রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট ৩৫০ সিসির দাম পড়বে পড়বে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। রয়্যাল এনফিল্ড মিটিওর ৩৫০-এর দাম পড়বে ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

বাংলাদেশে বিশ্ববিখ্যাত রয়্যাল এনফিল্ড

মূলত বাংলাদেশে এতদিন ১৬৫ সিসির অধিক সিসির মোটরসাইকেল চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে গত বছর দেশে ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি দেয় সরকার।

রয়্যাল এনফিল্ডকে অনেকেই মনে করেন ভারতের ব্রান্ড। ভারতীয় বাইকারদের সঙ্গে এটি এমনভাবে জড়িয়ে গেছে তাতে, এটির উৎপত্তি যে ভারতে নয়, তা অনেকেরই অজানা। 
 
রয়্যাল এনফিল্ডের মূল শিকড় হচ্ছে যুক্তরাজ্যে। ১৯০১ সালে যাত্রা শুরু হয় রয়্যাল এনফিল্ডের। দুই ব্রিটিশ উদ্যোক্তা বব ওয়াকার স্মিথ এবং অ্যালবার্ট এডি এই মোটরসাইকেল তৈরি করেন। ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের মাদ্রাজ মোটরসের সঙ্গে চেন্নাইয়ে সংযোজন কারখানা স্থাপন করে। এরপর থেকেই ভারতের বাইকপ্রেমীদের মনে স্থান করে নেয় রয়্যাল এনফিল্ড।
 
মূলত অধিক সিসির শক্তিশালী ইঞ্জিন ও স্টাইলিশ লুকের কারণেই ভারতের বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় এই বাইক। বলিউডের জনপ্রিয় অনেক তারকা এবং ভারতের খেলোয়াড়দের পছন্দের তালিকায় রয়েছে রয়্যাল এনফিল্ড।

একনজরে রয়্যাল এনফিল্ড

১৮৯৬ সালে অ্যালবার্ট এডি মিডলসেক্সের এনফিল্ড শহরে রয়েল স্মল আর্মস ফ্যাক্টরির জন্য যন্ত্রপাতি তৈরির অর্ডার পান। এখান থেকেই রয়েল এনফিল্ড নামের জন্ম। এ বছরই নিউ এনফিল্ড সাইকেল কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি কিনে নেয় তারা। এখান থেকে ১৮৯৭ সালে সাইকেলের সব ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি শুরু করে রয়্যাল এনফিল্ড। ধীরে ধীরে যখন মোটরচালিত সাইকেল ইংল্যান্ডে জনপ্রিয় হয়, তখন এনফিল্ড কোম্পানিও মোটরসাইকেল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়।
 
দুই বছর চেষ্টার পর ১৯০১ সালে নিজেদের প্রথম মোটরবাইক বাজারে আনে রয়্যাল এনফিল্ড। ২৩৯ সিসির এই মোটরবাইক ছিল ১১ দশমিক ২ হর্সপাওয়ার (এইচপি) ক্ষমতাসম্পন্ন। তবে রয়্যাল এনফিল্ডকে সাফল্য এনে দিয়েছিল ১৯০৯ সালে তৈরি তাদের ভি টুইন ২৯৭ সিসি ইঞ্জিনের মোটরসাইকেল।
 
এরপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয় মোটরসাইকেলের। সে সময় যুদ্ধক্ষেত্রের উপযোগী বেশ বড় আকারের মোটরসাইকেল বাজারে আনে রয়্যাল এনফিল্ড। এটি ছিল ৭৭০ সিসির ও ৬ এইচপি ভি ভি-টুইন মোটরসাইকেল। যুদ্ধের সময় শুধু ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীই নয়, মিত্র শক্তির অন্যান্য পক্ষ যেমন বেলজিয়াম, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সেনাবাহিনীকেও এই মোটরসাইকেল সরবরাহ করে রয়্যাল এনফিল্ড।
 
শক্ত কাঠামো এবং যান্ত্রিক বিশ্বস্ততার জন্য বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনীর কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিল এই মোটরবাইকগুলো। 

শুধু প্রথম বিশ্বযুদ্ধই নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও যুদ্ধক্ষেত্রে জনপ্রিয় ছিল রয়্যাল এনফিল্ডের মোটরবাইক। ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী মিলিটারি গ্রেড মোটরসাইকেল উৎপাদন শুরু করে রয়্যাল এনফিল্ড কোম্পানি। এ সময় তারা ২৫০ সিসি, ৩৫০ সিসি এবং ৫৭০ সিসি ইঞ্জিনের মোটরসাইকেল তৈরি করে। এদের মধ্যে রয়্যাল এনফিল্ড ডব্লিউডি/আরই মডেলটিকে প্লেন থেকে প্যারাস্যুটের মাধ্যমে আকাশ থেকে নিচে ফেলা যেত।
 
যুদ্ধপরবর্তী সময়ে নতুন নতুন মডেলের বাইক আনে রয়্যাল এনফিল্ড। এ সময়ই বাজারে আসে বিখ্যাত মডেল ‘বুলেট’। খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ৩৫০ এবং ৫০০ সিসির বুলেট। এরপর আসে আকারে বড় রয়্যাল এনফিল্ড সুপার মিটিয়র এবং সুপার মিটিয়র কন্সটেলেশন। এগুলোর প্রত্যেকটি ছিলো ৭০০ সিসির।
 
১৯৪৯ সালে প্রথম ভারতের বাজারে আসে ৩৫০ সিসির বুলেট। মূলত সেনাবাহিনীতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যেই প্রথম এই বাইকগুলোকে ভারতে আনে দেশটির সামরিক বাহিনী। দেশের সীমান্তে টহল দেয়ার জন্য প্রথম ৮০০ ইউনিট বুলেট ৩৫০ এর অর্ডার দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। 

ভারতের বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ায় ১৯৫৫ সালে মাদ্রাজ মোটরসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চেন্নাইতে একটি সংযোজন কারখানায় উৎপাদন শুরু হয় রয়্যাল এনফিল্ডের। প্রথম দিকে এই কারখানায় মোটরবাইক অ্যাসেম্বলিং করা হতো। তবে ১৯৬২ সাল থেকে ভারতেই তৈরি হওয়া শুরু করে মোটরসাইকেলের পুরোটাই। 

বর্তমানে বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে বিক্রি হচ্ছে রয়্যাল এনফিল্ড। মূলত গুণগত মান ও স্থায়ীত্বের কারণে রয়্যাল এনফিল্ডের বাইকগুলোর খ্যাতি জগৎ জোড়া। সিসি ভেদ মোটরসাইকেলটির বিভিন্ন মডেল বাজারে পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৩৫০ সিসির ইঞ্জিনে বুলেট, ক্লাসিক, মিটিওর ও হান্টার, ৪১১ সিসির স্ক্রাম, ৪৫০ সিসির গুয়েররিল্লা, হিমালয় এবং ৬৫০ সিসির শর্টগান, সুপার মিটিওর, ইন্টারসেপ্টর ৬৫০ এবং কন্টিনেন্টাল জিটি ৬৫০ মডেলগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়। 
 
যেহেতু বাংলাদেশে ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত মোটরবাইক চালানোর অনুমতি রয়েছে, সেহেতু দেশে রয়্যাল এনফিল্ডের বুলেট, ক্লাসিক, মিটিওর এবং হান্টার মডেলগুলো পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ এগুলোর প্রত্যেকটি ৩৫০ সিসির।
 
৩৫০ সিসির শ্রেণিতে রয়্যাল এনফিল্ডের প্রতিটি বাইকের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বুলেট, ক্লাসিক এবং হান্টার মডেলগুলো উন্নত ইএফআই ইঞ্জিন দিয়ে চলবে। ক্লাসিক ৩৫০ মডেলে একটি একক সিলিন্ডার এবং এয়ারকুল্ড ৩৪৯ সিসি ইঞ্জিন রয়েছে। এটি ৬ হাজার ১০০ আরপিএমে ২০.২ বিএইচপির হর্স পাওয়ার এবং ৪ হাজার আরপিএমে ২৭ এনএমের টর্ক উৎপন্ন করে।
 
হান্টার ৩৫০ মডেলের বাইকের সামনে থাকছে গোলাকার হেডলাইট, হ্যান্ডলবারের দুই পাশে দুটি রিয়ার ভিউ মিরর, টার্ন ইন্ডিকেটর এবং কনসোল। সঙ্গে থাকছে রোটারি সুইচ, টিয়ার-ড্রপ শেইপের ফুয়েল ট্যাংক। 

অপরদিকে র‌য়্যাল এনফিল্ড বুলেট ৩৫০ অনেকটা প্রাচীন ধাঁচের মোটরবাইক। বাইকটির বর্তমান সংস্করণে ডুয়েল চ্যানেল এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্রেকিং ব্যবস্থা খারাপ রাস্তাতেও স্থিরভাবে বাইক চালাতে ও থামাতে সাহায্য করে। বাইকটি মূলত দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য জনপ্রিয়। 
 
অপরদিকে রয়্যাল এনফিল্ড মিটিওর ৩৫০ হলো আধুনিক ঘরানার অভিজাত বাইক। এটির ক্লাসিক স্টাইলের কনসোল প্যানেল এবং শক্তিশালী গোলাকার হেডলাইট বেশ আকর্ষণীয়।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]