বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ৩ মাঘ ১৪৩১

শিরোনাম: নববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা   বাণিজ্য মেলা শুরু বুধবার, যা থাকছে এবার   থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি ফোটানো বন্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ   সংবিধান বাতিল না করে সংশোধন করা যেতে পারে   মনমোহন সিংয়ের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা   সোহেল তাজের সঙ্গে বাগদান, পাত্রীর পরিচয়   নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়ে যা বলছেন সিইসি   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
গুরুর মাংসের অভ্যন্তরে অন্যপ্রাণীর মাংস বিক্রি!
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪, ৫:৩৮ পিএম

কক্সবাজারে বেপরোয়া ভাবেই চলছে অধিকাংশ গরু মাংস ব্যবসায়ী(কসাই)। সরকারের বেঁধে দেওয়া দরদামের তোয়াক্কা-তু দূরের কথা, অভিযোগ রয়েছে ওসব কসাইরা মহিষের মাংস গরুর মাংস বলে বিক্রি, দীর্ঘ দিনের ফ্রিজিং এর বাসি মাংস বিক্রি, ওজনে কম দেওয়া,দামের ক্ষেত্রে কোথাও ৭০০, কোথাও ৭৫০ আবার কোথাও ৮০০টাকা, অত্যাধিক হাড় দেওয়া,দাম বেশি রাখা এসব প্রতারনা কসাইদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এমনকি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী (কসাই) ভয়াবহ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে গরুর মাংসের অভ্যন্তরে ঘোড়া কিংবা অন্যন্য প্রাণীর মাংস মিশ্রিত করে চালিয়ে দেওয়া দৃষ্টান্তও রয়েছে কক্সবাজারে। এতে একদিকে যেমন মানবদেহে নানান জটিল রোগের জন্ম নিচ্ছে তেমনি আর্থিক ভাবেই প্রতিনিয়ত ঠকছে ক্রেতা সাধারণ। তবে প্রশাসনের তদারকি ও দায়সারাভাবে চলার কারনে ওসব অসাধু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া ও লাগামহীন হয়ে পড়েছে বললেন অভিযোগ  ভোক্তা সাধারণ এর। 

অন্যদিকে কসাইদের প্রতারণা বন্ধে, ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। কক্সবাজার সিটি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শফিক জানান,"শুক্রবার (২৪ মে) সকালের দিকে 'কক্সবাজার সদর উপজেলা বাজারের কসাই আব্দুল মালেক,সাবধান এর দোকান থেকে মাংস ক্রয় করি।  দোকানি বললোই দেশি গরু এবং এর পাশেরটা মহিষের মাংস। আমিও সরল মনে দরদাম করে আকৃষ্ট হয়ে রানের মাংস থেকে আড়াই কেজি মাংস নিলাম। তখন দেখতে মনে হয়েছিলো মাংস টাটকা ও স্বাভাবিক। কিন্তু বাড়িতে রান্না করার পর সাধারণ গরুর মাংসের কোন স্বাদ ও প্লেবারের অস্তিত্ব নেই। পেলাম অন্য কোন প্রাণীর অস্বাভাবিক পঁচা বিশ্রী গন্ধ, যা অসহনীয়। রান্নার প্রথমে এক টুকরো মাংস মুখে তুলতেই মা বমি করে দিলো, অন্য সদস্যদেরও একই অবস্থা। পরে রান্না করা প্রমাণ স্বরূপ অল্প মাংস রেখে দিয়ে বাদবাকি সাংস ফেলে দিতে বাধ্য হলাম। তাহলে কি ভয়াবহ প্রতারনার আশ্রয়ে তাঁরা ক্রেতা সাধারণকে গরুর মাংস বলে ঘোড়া কিংবা অন্য কোন প্রাণীর মাংস ধরিয়ে দিচ্ছে?? না দীর্ঘ দিনের ফ্রিজিংয়ের মাংসকে নানা প্রক্রিয়াজাত করে সঠিক দাম নিয়ে ক্রেতা ঠকাচ্ছে??। তা নিয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার  (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসক এর হস্তক্ষেপ কামনা করছি"। 

কক্সবাজারের সিনিয়র বিজ্ঞ আইনজীবী সাজ্জাদুল করিম তাঁর ফেইসবুক ওয়ালে লিখেন, 'মহিষের মাংস গরুর মাংস বলে বিক্রি, বাসি মাংস বিক্রি, ওজনে কম দেওয়া, অত্যাধিক হাড় দেওয়া,দাম বেশি রাখা কসাইদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কুরবানির মাংস সিদ্ধ হয় মিনিট দশকে। আর কসাই এর মাংস সারা দিনেও সিদ্ধ হতে চাই না। ফলে অনেককেই গিন্নির কটু বাক্যবাণে বিদ্ধ হতে হয়। কসাইখানা নিয়ন্ত্রণে যেন এদেশে কতৃপক্ষ নেই। একজন মৌলভী টাইপের লোক সাইকেল নিয়ে গরু,মহিষ জবাইয়ের অনেক পরে সীল মারতে আসেন। শুনেছি তিনি পৌরসভার লোক। তিনি না দেখে সীল দিলে চলে যান। তার কাজ হচ্ছে প্রাণীটি গরু,মহিষ না অন্য কিছু। অথবা প্রাণীটি রোগাক্রান্ত কিনা? কিন্তু না দেখেই তিনি সার্টিফিকেট দিয়ে দিচ্ছেন।  এভাবেই চলছে দিনের পর দিন। বছরের পর পর। ভোক্তার স্বার্থ দেখার কেউ নেই। যেন উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ!' অন্য দিকে--আর ফুটপাত দখল করে দোকানেই গরুর মহিষ জবাই করে সেই রক্ত আর নারী ভুড়ি ড্রেনে ফেলতে দেখা যায়। এতে পরিবেশ হচ্ছে দুষণ। এছাড়া ফুটপাত দখল হয়ে সাধারণ মানুষ চলাচলে হচ্ছে বিঘ্ন। শহরজুড়ে অধিকাংশ কসাইরা আইন কানুন তোয়াক্কা না করেই নিজেদের ইচ্ছা স্বাধীন মত কাজ করছে। বেপরোয়া এসব পশুর মাংস অসাধু বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান জরুরি। বাকী মাংসের দোকানের (অধিকাংশ) জলিল সদর, তার ভাই, জলিল সদর এদের  চিত্র ঠিক একই রকম। অভিযোগ  সাধারণ ভোক্তা হারুন উর রশিদ, কামাল হোসেন, আরফাত সানি, মুজিবুর রহমান, রশিদ মিয়া, মিজানুর রহমান মিজানসহ অনেকর।

একইভাবে লাকী আক্তার তাঁর ফেইসবুক ওয়ালে লিখেন, 'গত কিছুদিন আগে আমার হাজব্যান্ড একই সন্দেহ করছিল। ওরা ৫০০/- কেজি বিক্রি করে আর সারা দিন ই রানের অংশ ঝুলানো থাকে তাহলে বিক্রি করে কোন গুলো? সকালে অফিসে আসার সময় যে অংশ ঝুলানো দেখি সন্ধ্যায় যাওয়ার পথে তা ই ঝুলানো থাকে বিষয়টি কদিন আমাকে ভাবিয়েছে। যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার'।

জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম  জানান, 'এটি ঘোড়ার মাংস কি না তা সন্দেহ রয়েছে ,তবে দীর্ঘ দিনের ফ্রিজিং এর মাংস হতে পারে। তবে ওই মাংসের নমুনা সংগ্রহ করে আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো'। 

কক্সবাজার জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসান আল জানান, 'আমরা সদর উপজেলা বাজারের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে, যে অসংগতি রয়েছে তা নিয়ে মাঠে নামবো। তবে উপরে উল্লেখিত বিষয়ে নিয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ এর সাথে একটু যোগাযোগ করার জন্য। যেহেতু আমাদের নমুনা পরিক্ষার যন্ত্রটি দুর্বল'। 

কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারাজানা রহমান জানান, এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতেছি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, 'ওসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়া হবে'।

উল্লেখ যে, এর আগে কক্সবাজার সৈকতে ঘোড়া জবাই করে তা গরুর মাংস বলে বিক্রি করার অভিযোগে উখিয়ার মাহবুবুল আলম ওরফে কসাই মাহাবুব (৩৪) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১৫)।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com