শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিরোনাম: মালয়েশিয়ান শ্রমবাজারে জনশক্তি পাঠানো বন্ধ হবে না     নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের বিশ্বাস জন্মেছে : ইসি     বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী    দেশের ১৫৭টি উপজেলায় আগামী ২১ মে সাধারণ ছুটি    সিএএ আইনে ১৪ জনকে নাগরিকত্ব দিল বিজেপি সরকার    রাশিয়ার দাপটে পিছু হটছে ইউক্রেন    ১ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী    
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ইসরাইলের পক্ষে থাকা সিএনএন চ্যানেলে ইউনূস কন্যার সাক্ষাৎকার
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৭:৩৯ পিএম আপডেট: ০৬.০২.২০২৪ ৭:৪৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

ইসরায়েলের হয়ে পক্ষপাতমূলক সংবাদ নীতির কারণে নিজেদের কর্মীদের তোপের মুখে পড়েছে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন। সংবাদমাধ্যমটির পক্ষপাতমূলক পলিসি ও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন খোদ প্রতিষ্ঠানটির কর্মী সাংবাদিকরা। ইসরায়েলের হয়ে পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশন করে যাওয়া সেই প্রতিষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ড. ইউনূসের কন্যা ও মার্কিন নাগরিক মনিকা ইউনুস। এ সময় বাংলাদেশের বিচার বিভাগের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তিনি নিজের বাবার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে দেশের সাংবিধানিক কাঠামোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দণ্ড পাওয়া শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শাস্তি থেকে রক্ষা করতে লবিংয়ে নেমেছেন তাঁর কন্যা মনিকা ইউনূস। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এ দেয়া সাক্ষাৎকার সেটিরই অংশ। যেখানে তিনি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

মনিকা এমন এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছে যা গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের হয়ে পক্ষপাতমূলক খবর প্রকাশ করায় নিজেদের কর্মীদের তোপের মুখে পড়েছে। সংবাদমাধ্যমটির কর্মীরাই এই হীন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে ও সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়েছে। সিএননের নিউজরুম থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও অভ্যন্তরীণ এক ডজন মেমো ও ইমেইল ঘেঁটে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, আটলান্টার হেডকোয়ার্টার থেকে নির্দেশনা অনুযায়ী মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যমটিতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে সিএনএনের এক কর্মী গার্ডিয়ানকে বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বেশিরভাগ খবর ইসরায়েলের প্রতি নেটওয়ার্কের  পদ্ধতিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক পক্ষপাতিত্বের দ্বারা প্রভাবিত করা হয়েছে। এটি সাংবাদিকতার অপব্যবহারের সমান। 
 
সংবাদমাধ্যমটিতে হামাসের বক্তব্য এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ রাখা হয়েছে। পক্ষপাতমূলক এই সংবাদমাধ্যমটিতে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দণ্ড পাওয়া শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কন্যা মনিকা ইউনূস।

এদিকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলা আইনি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে নানাভাবে চলছে আন্তর্জাতিক লবিং। তাকে ‘আইনি হয়রানি’ বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন হিসেবে একটি যৌথ বিবৃতি ছাপা হয়েছে, যে বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন সিনেটর। এর আগে বিচার বন্ধে এমনই বিজ্ঞাপন আকারে বিবৃতি দিয়েছেন কয়েকজন নোবেলজয়ী। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে ইউনূসের পরিচিত আছে। আর এসব লবিং, বিবৃতি ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিচার বন্ধের আহ্বানকে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর চাপ প্রয়োগ ও হস্তক্ষেপের সামিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে সবচাইতে মজাদার বিষয় হলো ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি দেয়ার জন্য বারবার এই ব্যক্তিদের দেখা গেলেও গাজায় ফিলিস্তিনদের ওপর চলা ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে এখন পর্যন্ত কোন কথাই বলেননি এই বিবৃতি দানকারী অধিকাংশ সদস্য। এমনকি এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়ে কোন বিবৃতি প্রদান করেননি তারা। তবে কি গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার থেকেও বাংলাদেশে ড. ইউনূসের মামলাকে বড় মানবাধিকার ইস্যু হিসেবে দেখছেন তারা?

সিএনএনের সাংবাদিক ক্রিস্টিন আমানপোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন এই নাগরিক তাঁর বাবার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মনিকা বলেন, অভিযোগগুলো মূলত তার কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত, যেটা সাধারণভাবে দেওয়ানি আদালতেই নিষ্পত্তি সম্ভব। কিন্তু এগুলোকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অর্থহীন। ড. ইউনূস ও তার সহকর্মীরা শতভাগ নির্দোষ। আন্তর্জাতিক আইনজ্ঞরাও বিষয়টি যাচাই করেছেন। তারাও বলেছেন, এই অভিযোগগুলো 'বানোয়াট'।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  মনিকা ইউনূস যে কথাটা বলতে চাচ্ছেন, তাতে পরোক্ষভাবে উনি স্বীকার করেই নিয়েছেন যে, এখানে শ্রম আইন লঙ্ঘন হয়েছে। শ্রম আইন ২০০৬ ও বিধিমালা ২০১৫ আইএলও কর্তৃক স্বীকৃত এবং সেখানে ফৌজদারি একটা আলাদা চ্যাপ্টার আছে।



সুতরাং এ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে, বিদেশে বসে একটি পক্ষপাতমূলক সম্প্রচার মাধ্যমে ড. ইউনূস কন্যা বাংলাদেশের বিচার বিভাগের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছেন। একজন ভিনদেশি নাগরিক হয়ে তিনি বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে হেয় করতে চেয়েছেন।  

এদিকে  ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মনিকা দাবি করলেও আসলে এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো সরকারিভাবে। ১৯৮৩ সালে রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে গ্রামীণ ব্যাংক। আর ড. ইউনূস ছিলেন এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সরকারের নিযুক্ত ও বেতনভুক্ত একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক; কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠাতা নন তিনি।
 
গ্রামীণ ব্যাংক নারীদের ঋণগ্রস্ত করে তুলছে এবং ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন, এমন অভিযোগগুলোর বিষয়ে সাক্ষাৎকারে মনিকার কাছে জানতে চাওয়া হলে জবাবে তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণ সুনির্দিষ্ট একটি মডেল, যা সঠিকভাবে অনুসরণ করা না হলে অন্য যেকোনো জিনিসের মতোই তা ব্যর্থ হতে পারে। অর্থাৎ যারা আত্মহত্যা করেছে তাঁরা নিজেদের ভুলের কারণেই করেছে বলে মত দিয়েছেন তিনি।

এদিকে সাক্ষাৎকারে একাধিকবার ড.ইউনূস কেন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিহিংসার শিকার তা জানতে চাইলেও এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি মনিকা। আর আইনের যে সকল অসঙ্গতিকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে এই মামলাকে প্রতিহিংসা পরায়ণ দাবি করা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা সহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি না দিয়ে কেনো প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি প্রদান করা হচ্ছে না এ বিষয়েও কোন ব্যাখ্যা মেলেনি ইউনূসের পক্ষে কাজ করে যাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে। 

ভোরের পাতা/আরএস

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]