প্রকাশ: শুক্রবার, ২০ আগস্ট, ২০২১, ১০:১৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আগস্ট মাস ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে উৎসবের মাস। অনেক ধরণের সিজন আমাদের মধ্যে আসে কিন্তু আগস্ট মাসের যে শোক যে ষড়যন্ত্র সেটা কোনোভাবেই আমাদের কাছ থেকে সরে যাচ্ছে না। আগস্ট মাসটা এই জন্যই তারা বেছে নিয়েছিল যে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট আমাদের বন্ধু দেশ ভারতের জাতীয়তা দিবস। সুতরাং এটি তাদের একটি প্লানের অংশ ছিল। ১৫ই আগস্টে শুধু বঙ্গবন্ধুর পরিবার নয় আওয়ামী লীগকে হত্যা করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল তাইতও তারা এই আগস্ট মাসকেই বার বার বেছে নেই।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪৩৭তম পর্বে শুক্রবার (২০ আগস্ট) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক, খ্রিষ্টান এসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
নির্মল রঞ্জন গুহ বলেন, আগস্ট মাস আমাদের শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের এ মাসেই বাঙালি হারিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট কালরাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালকে। পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। আজকের এইদিনে দাঁড়িয়ে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সেদিন নিহত সকল শহীদের প্রতি। ওইদিন আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান। আল্লাহপাক সেদিন তাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল বলেই ২১ বছর নানা সংগ্রামের মাধ্যমে পুনরায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে ও দেশে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ পুনরায় ফিরিয়ে আনে। কিন্তু আগস্ট মাসের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। ১৫ই আগস্টে শুধু বঙ্গবন্ধুর পরিবার নয় আওয়ামী লীগকে হত্যা করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল তাইতও তারা এই আগস্ট মাসকেই বার বার বেছে নেই। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টে রাজধানী বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে চালানো হয় নজিরবিহীন গ্রেনেড হামলা। গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হিংসার দানবীয় সন্ত্রাস আক্রান্ত করে মানবতাকে। আক্রান্ত হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় আয়োজিত সমাবেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এসে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ওই ঘটনায় দলীয় নেতাকর্মীরা মানববর্ম রচনা করে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করলেও গ্রেনেডের আঘাতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ মোট ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। পরবর্তীতে এই ষড়যন্ত্রের নীল নকশা সবার সামনেই প্রকাশ পেয়েছিল যে খুনি জিয়ার খুনি পুত্র যার রক্তে খুনের নেশা আছে সেই তারেক জিয়াই ছিল এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল মাষ্টারমাইন্ড। ওইদিন যেভাবে গ্রেনেড হামলা হয়েছিল সেখানে গোটা আওয়ামী লীগ পরিবার সেদিন মরে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু সেদিনও আল্লাহর অশেষ রহমত আমাদের উপর ছিল কারণ আওয়ামী লীগ জনগণের দল, কর্মীবান্ধব দল। এখানে কিন্তু কর্মীরা নেতাদের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। কারণ আদর্শিক নেতাদের আদর্শিকতা কর্মীদের মধ্যেও আছে।