শুক্রবার ৩ মে ২০২৪ ২০ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোনাম: রেলের ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সিপিবি    দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলো ডামি নির্বাচন : রিজভী    তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নিহত আট বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে    টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ    কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে : ইসি রাশেদা    ১০ টাকার টিকিট কিনে নিজের চোখ পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা    গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ভিক্ষার টাকা নিয়েও ভাতা কার্ড দেয়নি মেম্বার
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: রোববার, ২৫ জুলাই, ২০২১, ৭:৩৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

শৈশব টা ভালই কাটছিল। বাবা-মার আদরের একটুও কমতি ছিলনা রাবেয়ার। পরিবারের পছন্দ মত বিয়েও হয় তার। স্বামীর সংসারে অভাব অনটন থাকলেও দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল। এরই মধ্যে একটি পুত্র ও কন্যা সন্তানের মা হন তিনি। 

একসময় স্বামী সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে (নাইওর) আসেন। এরপরই বিপত্তি ঘটে তার জীবনে। বাবার বাড়ি থেকে স্বামী সন্তান নিয়ে দিনাজপুরে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে স্বামী খাজি মোল্লা ৭ বছর বয়সী পুত্র সন্তান আলী হোসেনকে নিয়ে লাপাত্তা হন। অনেক খোঁজাখুজির পর আজও তাদের সন্ধান পাননি রাবেয়া বেগম। এখনও পথের পানে চেয়ে থাকেন নাড়ী ছেড়া ধন আলী হোসেনের জন্য। 

রাবেয়া বেগম (৬৭) কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ভেলুর খামারের আব্দুল্লাহর মেয়ে। কয়েক বছর আগে একমাত্র মেয়ে রাশেদা বেগম বিয়ে করে শ্বশুর বাড়ি চলে যায়। বাবা মা মারা যাওয়ার পর ভাইদের অভাবের সংসার ছাড়তে বাধ্য হন রাবেয়া। এরপর ঠাই হয় একই গ্রামের জনৈক আবুল কালামের বাঁশঝাড়ে। এলাকাবাসীর সহায়তায় কয়েকটি টিনের একটি ছোট ঘরে প্রায় ৮ বছর ধরে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তার। বয়সের ভারে ঠিকমত চলতেও পারেননা। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার উলিপুর উপজেলা শতভাগ ভাতা নিশ্চিত করলেও রাবেয়া বেগমকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় আনতে চার হাজার টাকা দাবি করেন ৭ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম। গত এক বছর পূর্বে ভিক্ষা করে দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করলেও ভাতার কার্ড পাননি তিনি।

এসময় কথা হয় রাবেয়া বেগমের সাথে। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, মোর ভাতা আর কখন হইবে, বাচি থাকতে যদি না হয়, তা হইলে মরার পর হইবে, মোর কাইও নাই বা। ২৫ বছর আগে মোর বাপক (সন্তান) নিয়ে মোর স্বামী পলাইছে। কত খুঁজিছং, তবুও মোর বাপক (সন্তান) পাং নাই। আল্লাহ্ যদি মোর ছাওয়াটাক ফিরি দিলে হয়। 

অশ্রুসজল চোখে তিনি আরো বলেন, আগে শরীলত (শরীরে) বল (শক্তি) আছিল (ছিল) মানষের বাড়িত যায়া খুঁজি খাছনু (খাইছিলাম)। এখন হাটপেরও পাংনা, খাবারও পাংনা। কাইও দয়া করি দিলে খাং, না দিলে অনাহারি(অভুক্ত) থাকং। মোর বাপ (সন্তান) থাকলে সে খাওয়াইল হয়। আজ তোমরা গুলা আনছেন, তোমরায় মোর বাপ হন। মুই দোয়া করং আল্লাহ্ তোমাক মেলা (দিন) বাঁচে থুউক। এভাবে বলতে বলতে অঝোড়ে কেঁদে ফেলেন রাবেয়া বেগম। এসময় সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, তার ভাতা এখনো হয়নি।  



উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মশিউর রহমান বলেন, ভাতা কার্ড করতে কোন টাকা লাগে না। রাবেয়া বেগমের কাছ থেকে যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে, তাহলে সেটি নিতান্তই ঘৃণিত। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যতদ্রুত সম্ভব তাকে ভাতা কার্ডের আওতায় আনা হবে।



ভোরের পাতা/কে 

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


আরও সংবাদ   বিষয়:  ভাতা কার্ড  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]