বঙ্গবন্ধুর আদর্শ শেখ হাসিনার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে বাস্তবায়ন হোক: ড. মো. আফজাল হোসেন
প্রকাশ: রোববার, ২৩ মে, ২০২১, ১০:৩১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে কাজ শুরু করেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তখন বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের দায়িত্ব জাতির পিতা নিজের হাতে নেন। এমন একটি সময়ে যখন কোটি খানেক নাগরিক যারা সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাদের ফিরিয়ে আনা, আর যারা সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন তাদের অস্ত্র সংগ্রহ করা এবং সে সঙ্গে আমাদের মিত্রবাহিনী দেশে ফিরে যাওয়ার যে ব্যাপারটি এইসব কিছু একেকটি অনন্য সাধারণ কাজ ছিল। এই কাজগুলো আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একের পর এক দূরদর্শিতার সহিত অতিক্রম করতে হয়েছে। ‘জুলিও কুরি’ পদকপ্রাপ্তি ছিল বাংলাদেশের জন্য প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সম্মান। এ মহান অর্জনের ফলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু থেকে হয়েছেন বিশ্ববন্ধু। সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য এ পদক ছিল বিরাট এক সাফল্য।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৩৪৮তম পর্বে রোববার (২৩ মে) আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, ইসালামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আফজাল হোসেন। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. মো. আফজাল হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তিপদক প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকী আজ। বঙ্গবন্ধুর যে এই পদক প্রাপ্তি আমরা বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাবো, তিনি শুধু বঙ্গের বন্ধু ছিলেন না, তিনি ছিলেন বিশ্ব বন্ধু। তার জীবনে যদি আমরা তাকাই তাহলে দেখতে পাবো- তিনি ছিলেন একজন মানবতাবাদী মানুষ, একজন পরোপকারী মানুষ, মানুষের কথা সব সময় তার অন্তরে ছিল। বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী ম্যারি কুরি ও পিয়েরে কুরি দম্পতি বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে যে অবদান রেখেছেন, তা চিরস্মরণীয় করে রাখতে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে, মানবতার কল্যাণে, শান্তির সপক্ষে বিশেষ অবদানের জন্য বরণীয় ব্যক্তি ও সংগঠনকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক দিয়ে আসছে। ফিদেল ক্যাস্ট্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভেদর আলেন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জওহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং, লিওনিদ ব্রেজনেভসহ বহু বিশ্ব নেতা এই পদকে ভূষিত হন। উপমহাদেশের উত্তেজনাময় পরিস্থিতিতে, যখন রনাঙ্গণ থেকে রক্তের দাগও মুছে যায়নি, আঞ্চলিক সহযোগিতা বিকাশের এই উদাত্ত আহ্বান, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের একজন রাষ্ট্রনায়কের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর পরিপক্কতার পরিচায়ক। দেশে বঙ্গবন্ধু করেছিলেন এঁকই কথার পুনরাবৃত্তি। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে সংবিধানে গ্রহণ করেছেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংঘাতময় পরিস্থিতি উত্তরণে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃক শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের ফলে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের গৌরব ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং বাংলাদেশ বিশ্বসভায় ন্যায়নীতি অনুসৃত দেশ হিসেবে মর্যাদার আসন লাভ করে। বঙ্গবন্ধুর জীবনের প্রত্যেকটি পরতে বিশেষ করে স্বাধীনতার আগে এবং স্বাধীনতার পরে বাঙালির মুক্তির জন্য জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত কাজ করে গিয়েছেন। এই দিনে আমার কামনা তাঁর আদর্শ তাঁর সুযোগ্য কন্যার মাধ্যমে এই দেশের মানুষের মধ্যে জাগ্রত হোক।