শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর আশালতা মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কতৃক আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সদ্য বিদ্যালয় ছেড়ে কলেজ পড়ুয়া এক হিন্দু ছাত্রীকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার প্রতিবাদে সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার বিকাল ৪টায় নুরনগর আশালতা মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে চরিত্রহীন প্রধান শিক্ষক শামিম আহমেদ কে স্থায়ী বহিস্কার করার দাবী সহ তার উপযুক্ত শাস্তির ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বক্তরা বলেন, এই চরিত্রহীন শিক্ষক নুরনগর গ্রামের সন্যাসী অধিকারীর নাবালিকা মেয়ে তনুশ্রী অধিকারীকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করেছে, শুধু তাই নয় চরিত্রহীন এই শিক্ষক এর আগেও অত্র বিদ্যালয়ের অগনিত শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে ধরা পড়ে, বিশেষ মহলের ছত্রছায়ায় মোটা অংকের টাকায় মিটমাট করে। এবং এর মধ্যে তিন জনকে বিয়ে করে পরে টাকার বিনিময় ছেড়ে দিয়েছে।
মানববন্ধনে অভিভাবকগন বলেন, এই বিদ্যালয় থেকে যদি নারীলোভী দুশচরিত্র প্রধান শিক্ষক শামিম কে স্থায়ী বহিস্কার করা না হয় তাহলে আমরা আমাদের সন্তানদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করবো। মানববন্ধনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে প্রধান শিক্ষক লম্পট শামিমের ছবিতে জুতার মালা পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। এসময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন নুরনগর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক এস এম সোহেল রানা বাবু, অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সদস্য ডি এম মঈনুদ্দিন লাভলু, উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু কৃষ্ণপদ মন্ডল, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মজিদ, ইউপি সদস্য মীর আলী মোল্যা, নুরনগর নবীন সংঘ আহবায়ক এস এম সাইফুল্যাহ আল মামুন, আদর্শ সংস্থার পরিচালক হাবিবুল আলম হবি, সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম আলমগীর, পুরোহীত কল্যান ট্রাষ্ট কমিটির সভাপতি অরুন মুখার্জী, ইউনিয়ন পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুন দাস সহ এলাকার হাজার হাজার সাধারন জনগন। মানববন্ধনে একত্রতা প্রকাশ করেন অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ,বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকবৃন্দ, রাজনৈতিকবৃন্দ, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ্য খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, হিন্দু মহাজোট, স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ ও সুশিল সমাজ।
উল্লেখ্য, হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার অভিযোগে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সাথে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না তা জানতে চেয়ে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১১টায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই শিক্ষকের আরো তিনটি স্ত্রী রয়েছে বলে জানা গেছে।
ওই ছাত্রীর বাবা জানান, ২০১৯ সালে তার মেয়ে নূরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করে। ওই বিদালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদ (৪৮) তাকে বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক খাতার কাজে সহযোগিতা করতেন। পরে তার মেয়ে কার্টুনিয়া রাজবাড়ি ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়। তার মেয়ে পার্শ্ববর্তী এক গ্রামের একজন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় শিক্ষক শামীম তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। গত ২ এপ্রিল ভোরে প্রাইভেট পড়ে কলেজে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে কলেজছাত্রী। দুপুর ২টার দিকে বাড়ি না ফিরলে তাকে খুঁজতে থাকে পরিবারের সদস্যরা। খুঁজে না পেয়ে পরদিন তিনি শ্যামনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
গত বুধবার (৭ এপ্রিল) ফেসবুকে তার মেয়ে ও প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদ খুলনার এক নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে বসে ধর্মান্তরিত হওয়া ও বিয়েসংক্রান্ত এক নন-জুডিশিয়াল স্টাম্পে স্বাক্ষর করছেন এমন ছবি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা তাকে জানান। একপর্যায়ে ওই রাতেই তিনি শামীম আহমেদ এর বিরুদ্ধে থানায় মেয়েকে অপহরণ ও ধর্মান্তরিত করার অভিযোগে একটি এজাহার দাখিল করেন।