শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিরোনাম: মালয়েশিয়ান শ্রমবাজারে জনশক্তি পাঠানো বন্ধ হবে না     নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের বিশ্বাস জন্মেছে : ইসি     বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী    দেশের ১৫৭টি উপজেলায় আগামী ২১ মে সাধারণ ছুটি    সিএএ আইনে ১৪ জনকে নাগরিকত্ব দিল বিজেপি সরকার    রাশিয়ার দাপটে পিছু হটছে ইউক্রেন    ১ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী    
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
তাবলীগের এক পক্ষ ফের বৈষম্যের শিকার হয়ে বিপাকে পড়েছেন
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪, ৫:১৪ এএম | অনলাইন সংস্করণ

দাওয়াত ও তাবলীগের বড় আয়োজন হলো টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা যা বাংলাদেশের ঐতিহ্য, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই বাংলাদেশের এই টঙ্গী ইজতেমার ময়দান পরিচিতি পেয়েছে দাওয়াত ও তাবলীগের টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে, কিন্তু এই ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি কার্যক্রমের মধ্যে ২০১৬ থেকে মতনৈক্য শুরু হওয়ার পরে দাওয়াত ও তাবলীগের এই মেহনতের মধ্যে দুইটি ভাগ তৈরি হয়, একটি ভাগ মাওলানা সাদ সাহেবকে আমির মেনে ভারতের বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিন মারকাদের সাথেই মেহনত করে যাচ্ছেন আরেকটি ভাগ পাকিস্তানের এবং ভারতের কয়েকজন মুরুব্বী মিলে তৈরি করা হয় নতুন শুরা কমিটি, যা বাংলাদেশে জুবায়ের পন্থী নামে পরিচিতি।

তাই তাবলীগের ভিতরে দুই মতপার্থক্য হওয়ার কারণে সরকারি হস্তক্ষেপে উভয়পক্ষ নিয়ে বসে সমঝোতা করে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমাও দুই পর্বে করা হয়।

এর পরিপেক্ষিতে চলতি বছর ২,৩,৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা প্রথম পর্ব জুবায়ের পন্থীরা করেন এবং ৯, ১০, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ দ্বিতীয় পর্ব মাওলানা সাদ সাহেবের নিজামুদ্দিনের অনুসারীরা করেন, উভয় পক্ষের ইজতেমায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লীরা অংশগ্রহণ করতে আসেন, সরকারি হিসাব মতে জুবায়ের পন্থীদের প্রথম পর্বে ৫১ দেশের ২৫৪০ জন বিদেশি নাগরিক তাদের ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেন এবং দ্বিতীয় পর্বের মাওলানা সাদ সাবের অনুসারীদের ইস্তেমায় ৬১ দেশ থেকে ৭৮৪৮ জন বিদেশি মেহমান অংশগ্রহণ করেন।

তাবলীগের ইস্তেমার অংশগ্রহণকারী উভয় পক্ষের মুসল্লিরা ৪০ দিন ৬০ দিন ১২০ দিন সময় নিয়ে নিজ দেশে চিল্লায় বের হন, তবে এর মধ্যে সব থেকে বেশি ৪০ দিনের চিল্লা দিতে বেশি মুসল্লিরা বের হন, এই ৪০ দিনের জন্য বের হওয়া তাবলীগের মেহনতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা বিশেষ করে ইজতেমার সময় বেশি বের হওয়া হয় সাধারণ মুসল্লিদের, সাধারণ মুসল্লীরা বিশ্ব ইজতেমা থেকে বের হয় ৪০ দিন পরে আবার টঙ্গী ময়দানে এসে তাদের নিয়ম অনুযায়ী, এবং এই ধারা টঙ্গী ইজতেমার শুরু থেকেই চলে আসতেছে, তাই সেই ধারাবাহিকতায় প্রথম পর্বে জুবায়ের পন্থীদের ইজতেমায় অংশগ্রহণ করে যারা ৪০ দিনের জন্য চিল্লায় বের হন তারা চিল্লা শেষ করে আবার টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে গত ১১, ১২ ও ১৩ই মার্চ ২০২৪ ফিরে আসেন ময়দানে, মুসল্লিরা কেউ সময় শেষ করে বাড়িতে ফিরে যান আবার কেউ সময় বাড়িয়ে আবার চিল্লায় বের হন।

কিন্তু টঙ্গী ইজতেমায় দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করা মুসল্লীরা যারা ৪০ দিনের জন্য বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিল্লায় বের হয়েছিলেন তারা গত ১৭ ই মার্চ থেকে টঙ্গী ময়দানে ফিরে আসতে শুরু করেন চিল্লা শেষ করে, কিন্তু মুসল্লিদের টঙ্গী ময়দানে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না, প্রথম পর্বের জুবায়ের পন্থীদের ইস্তেমা পরিচালনা কমিটির লোকজন স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করা ৪০ দিন সময় শেষ করে ফিরে আসা মুসল্লীরা টঙ্গী ময়দানে প্রবেশ করতে চাইলে তাদেরকে প্রবেশ করতে বাধা দেন।

কিন্তু দ্বিতীয় পর্বের সাদ সাহেবের নিজামুদ্দিনের ইজতেমা পরিচালনা করা মুরুব্বিরা সরকারের সাথে এই বিষয়ে পূর্ব থেকেই কথা সমাধান করা ছিল উভয় পক্ষের চিল্লা লাগানো মুসল্লিরা টঙ্গী ময়দানে ফিরে এসে তাদের চিল্লা শেষ করবেন এবং পরবর্তীতে কেউ আরো চিল্লা লাগালে এখান থেকেই বের হবেন, কারণ টঙ্গী ইজতেমা ময়দান থেকে ৪০ দিন সময় লাগানোর জন্য বের হওয়া মুসল্লিদের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার, এত বড় জমায়েত কোন মসজিদে বা এলাকায় রাখা সম্ভব হয় না তাই মুসল্লিদের চিল্লার শেষ সময় ফিরে আসা টঙ্গী ময়দানেই নির্ধারণ করা হয়ে থাকে সবসময়ের জন্য, কিন্তু জোবায়ের পন্থীরা দ্বিতীয় পর্বের মুসল্লিদের টঙ্গী ময়দানে প্রবেশ করতে বাধা সৃষ্টি করেছেন এবং ময়দানে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।

প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্থানীয় প্রশাসন এই বিষয় বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক সরাসরি লিখিত কোন কাগজ পেলে তারা টঙ্গী ময়দানে দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করা মুসল্লিদের ময়দানে প্রবেশ করতে দিবেন, প্রশাসনের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় যে প্রথম পর্বের মুসল্লিদের ময়দানে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কর্তৃক এরকম কোন লিখিত চিঠি আছে কিনা? যদি লিখিত চিঠি না থাকে তবে কেন প্রথম পর্বের জুবায়ের পন্থীদের অনুসারীরা ৪০ দিন শেষ করে টঙ্গী ময়দানে প্রবেশ করতে পারলে দ্বিতীয় পর্বে মুসল্লিদের ময়দানে কেন প্রবেশ করতে পারবে না বা এই বিষয়ে আইনি কোন বাধা আছে কিনা? তবে স্থানীয় প্রশাসন এই প্রশ্নের কোন উত্তর দেননি।



প্রথম পক্ষের জুবাইয়ের পন্থীদের পরিচালনা কমিটির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন তাদের মুরুব্বিরা দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করা মাওলানা সাদ সাহেবের নিজামুদ্দিনের অনুসারী মুসল্লিদের টঙ্গী ময়দানে প্রবেশ করতে দিতে নিষেধ করেছেন তাই আমরা দ্বিতীয় পর্বে অনুসরণ করা মুসল্লিদের টঙ্গী ময়দানে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না।

এ বিষয়ে দ্বিতীয় পর্বের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীদের ইজতেমা পরিচালনা করা মুরুব্বিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানা যায় উভয় পর্বের অংশগ্রহণ করা মুসল্লিরা তাদের চিল্লা শেষ করে টঙ্গী ময়দানে অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য পূর্ব থেকে সরকারের সাথে সমাধান হয়েছিল বিষয়টা, তারপরেও কত সপ্তাহে সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে মৌখিকভাবে এই বিষয়ে নির্ধারণ করা ছিল দ্বিতীয় পর্বের মুসল্লিরা টঙ্গী ময়দানে তাদের চিল্লা শেষ করবেন, কিন্তু গতকাল ১৮ই মার্চ প্রশাসনের বাধার প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে দ্বিতীয় পর্বের মুরুব্বীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন, তাই দ্বিতীয় পর্ব থেকে চিল্লায় বের হওয়া সাধারণ মুসল্লিদের এত বড় সংখ্যার জমায়েত কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে অত্যন্ত সমস্যায় পড়েছেন দ্বিতীয় পর্বের পরিচালনা করা মুরুব্বীরা।

মাওলানা সাদ সাহেবের নিজামুদ্দিন মারকাজের অনুসারীরা বলেন বিগত দিনেও তারা দাওয়াত ও তাবলীগ পরিচালনার ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এবং এখনো হচ্ছেন, তারা বলেন গত ৭,৮ বছর এই বিষয়টা স্পষ্ট এবং প্রকাশ্য যে বাংলাদেশে দাওয়াত ও তাবলীগ দুই ভাগে পরিচালনা হচ্ছে, এক পক্ষ মাওলানা সাদ সাহেবের নিজামুদ্দিনের অনুসারী এবং আর এক পক্ষ বাংলাদেশের জোবায়ের পন্থী নামে পরিচিত, কিন্তু তারপরেও সরকারের বিশেষ সুবিধা গোষ্ঠী ইজতেমার প্রথম পর্ব পরিচালনার ক্ষেত্রে সব সময় জুবায়ের পন্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন, বছরের বারো মাস টঙ্গী ময়দান জুবায়ের পন্থীদের দখলে দিয়ে থাকেন, কাকরাইল মারকাজ প্রতি ৪২ দিনের মধ্যে ২৮ দিন জুবায়ের পন্থীদের দখলে থাকে এবং মাত্র ১৪ দিন নিজামুদ্দিনের অনুসারীদের থাকেন, বিশেষ ওই জনগোষ্ঠীর সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যপক্ষ মাওলানা সাদ সাহেবের নিজামুদ্দিনের অনুসারীরা এমন অনেকগুলো বিষয়ের কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, অথচ টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার ময়দান এবং কাকরাইল মারকাজ বাংলাদেশে দাওয়াত ও তাবলীগ পরিচালনা করার জন্য নিজামুদ্দিনের নামে দেওয়া হয়েছে, এখন সেই নিজামুদ্দিনের অনুসারীরা বৈষম্য শিকার হচ্ছে কোন এক বিশেষ গুষ্টির কারণে।

তাই মাওলানা সাদ সাহেবের নিজামুদ্দিনের অনুসারীরা দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী এই বিষয় সরাসরি হস্তক্ষেপ করে একটি সমন্বয় কমিটি বানিয়ে দিবেন যারা নিরপেক্ষভাবে কাউকে ব্যক্তিগত স্বার্থের বাইরে রেখে উভয়কে সমানভাবে বাংলাদেশে দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সমানভাবে সমন্বয় করে দিবেন, যেন কোন পক্ষই বৈষম্যের শিকার না হন।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]