প্রকাশ: বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১:৪০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
এক বৈঠকে বিনা ভুলে পবিত্র কুরআনুল কারিমের পুরো ৩০ পারা তার উস্তাদকে শুনিয়েছেন জামিয়া কাশিফুল উলুম ঢাকার হিফজুল কোরআন বিভাগের ছাত্র হাফেজ তামিম দারী (১০) আব্দুর রহমান (১০) সাদ (১১)। এই তিনজন কিশোর হাফেজে কুরআন সহপাঠী ও বন্ধু।
ঢাকার যাত্রাবাড়ীর সাইনবোর্ডে অবস্থিত ব্যাতিক্রমী দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া কাশিফুল উলুম ঢাকায় এছর হিফজ সমাপন করছে ২১জন কৃতি শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে তামিম দারী, আব্দুর রহমান ও সাদ এই অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
জানা যায়, আরো ৫জন শিক্ষার্থী একই বৈঠকে বিনা লুকমায় পুরো কুরআনুল কারিম শুনানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরা হিফজ সমাপনের পাশাপাশি সুন্দর আরবী বাংলা হস্তাক্ষরের লেখা, ৪র্থ শ্রেণী পর্যন্ত জেনারেল শিক্ষা এবং কুরআনের বাংলা শব্দার্থ মুখস্থ বলতে পারে।
প্রিয় ছাত্রের এ অনন্য দক্ষতায় অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তাদের উস্তাদ ও জামিয়া কাশিফুল উলুম ঢাকার হিফজ শাখার বিভাগীয় প্রধান হাফেজ মাওলানা মুফতী তানভীর আহমদ বলেন বলেন, ‘নামাজের সময়টুকু আর খাবারের সংক্ষিপ্ত বিরতি ছাড়া ফজরের পর থেকে টানা ১৮ ঘন্টায় পূর্ণ কুরআনুল কারিম শুনালো হাফেজ তামিম, হাফেজ আব্দুর রহমান ও হাফেজ সাদ। হদর শুনেছি। গড়ে প্রতি পারায় ২৫ মিনিটের মতো সময় লেগেছে।
তিনি বলেন, তাদের শর্ত দেওয়া হয়েছিল, খতম শুরু করলে শেষ হবার আগ পর্যন্ত কুরআন শরীফ আর দেখতে পারবে না। আর আমি মনে মনে নিজেকে শর্ত দিয়েছিলাম, নিজের হিফজ বা মুখস্তের উপর ভিত্তি নয়; বরং হারফান হারফান দেখে দেখে তার পূর্ণ কুরআন শরিফ শুনবো। আলহামদুলিল্লাহ সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
জামিয়া কাশিফুল উলুম ঢাকার মহা পরিচালক, বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ও লেখক মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ বলেন, আমরা শুরু থেকেই বাংলাদেশে সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রমী হিফজুল কুরআন বিভাগ চালু করেছি। এখানে নিবিড় পরিচর্যায় খুব কম বয়েসে অল্প সময়ে ছাত্ররা হিফজুল কুরআন সমাপ্ত করতে পারে। খতম শুরুর আগে তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, নির্ভুল শুনাতে পারবা তো? পূর্ণ আত্মবিশ্বাস ও সাহসের সাথে সে বলছিল ‘জ্বি ইনশাআল্লাহ্’। আমরা মনে মনে ধরে নিয়েছিলাম, প্রতি দশে একটা লুকমা ক্ষমাযোগ্য। তবে ত্রিশ পারায় তিনের অধিক ভুল হলে এই খতম আর শুনা হবে না। নতুন করে আবার শুরু থেকে শুনাতে হবে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য; ওরা আমাদেরকে অবাক বিস্মিত করে দিয়েছে। পুরো কুরআন শরীফ বিনা ভুলে শুনেয়ে দিয়েছে। না কোন শব্দ ভুল, না কোন ইয়াদের ভুল! ইন্না হাযা মিন ফাদলি রাব্বি! সমস্ত প্রশংসা একমাত্র তাঁর, এই কুরআন যাঁর। যিনি তাওফিক দিয়েছেন কুরআন পড়ার, কুরআন ছুঁয়ার, কুরআন মুখস্ত করার। প্রশংসার যত শব্দ; যত বাক্য সবই তোমার তরে হে কুরআন নাযিলকারী! শব্দ ভাণ্ডারের অক্ষমতা তুমি ক্ষমা করো হে পরওয়ারদিগার!