আ. লীগের নেতাকর্মীরা আগামি ১০ ডিসেম্বর ঢাকা দখল করবে: কাদের

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা প্রস্তুত হন, খেলা হবে। এই ডিসেম্বরে খেলা হবে, আগামি নির্বাচনে খেলা হবে, আন্দোলনে খেলা হবে, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে, টাকা চুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে, দু:শাসনের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
মীর্জা ফখরুল সাহেব, আমি বলতে চাই, আমাদের নেতাকর্মীরা মহানগর, পাড়া-মহল্লা, অলি-গলি, জেলা উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, শহর, গ্রাম সব জায়গায় সতর্ক পাহারায় থাকবে। বিএনপি বিআরটিসির গাড়ি পুুড়িয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শেখ হাসিনার ভিত্তি প্রস্তর রাতের অন্ধকারে পুড়িয়েছে। তারা আগুন, লাঠি নিয়ে আসবে। এজন্য তারা পার্টি অফিসে সমাবেশ করতে চায়। বিশাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ফখরুল বলে খাাঁচা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আগামি ১০ ডিসেম্বর ঢাকা দখল করবে, রাজপথ দখল করবে।
খেলা হবে, এই স্লোগান মির্জা ফখরুলের পছন্দ নয়, আরো কারও কারও পছন্দ নয়, কিন্তু জনগণ এই সেøাগান পছন্দ করেছে, গ্রহণ করেছে। এই স্লোগান আমি বারবার দিয়েই যাবো। চট্রগ্রাম, দিনাজপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, টাঙ্গাইল ও ব্রাক্ষনবাড়িয়ায় গিয়েছি, দেখেছি জনগণ এই সেøাগান গ্রহণ করেছে ও দিয়েছে।
পলাশির যুদ্ধের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, নবাব সিরাজুদ্দৌলার ৪৫ হাজার সৈন্য নিয়ে পরাজিত হয়, পরাজিত হবার তো কথা নয়, লর্ড ক্লাইভের সৈন্য সংখ্যা ছিলো সাড়ে ৩ হাজার। অথচ দেখুন, বিজয় যখন অবশ্যাম্ভাবী, তখন প্রধান সেনাপতি মীরজাফর আলী খান তার সৈন্যদলকে নিরব করে রাখে। সাড়ে ৩ হাজার ইংরেজ বাহিনী ৪৫ হাজার সিরাজুদ্দৌলার বাহিনীকে পরাজিত করলো। বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হলো। মীরজাফরের পুত্র মিরনের নির্দেশে নবাব সিরাজুদ্দৌলাকে মোহাম্মদ আলী বেগ নৃশংসভাবে হত্যা করে। এটা হচ্ছে বাংলার ইতিহাস। পঁচাত্তরে দেখুন, সোয়া দুই শ বছর পর একই ষড়যন্ত্রের পূণরাবৃত্তি ঘটলো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই বাংলার ইতিহাস বিরত্বের ইতিহাস, এই বাংলার ইতিহাস বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস, এই বাংলার ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস, এই বাংলার ইতিহাস ষড়যন্ত্রের ইতিহাস। বারেবারে এখানে বিশ্বাসঘাতকতা, ষড়যন্ত্রে গণতন্ত্রের স্বাদ শিশু বলি হয়, প্রগতির মেষশাবক নিহত হয়, বারেবারে এখানে অবাঞ্চিত সত্যের পূণরাবৃত্তি ঘটে।
পলাশিতে মীরজাফর, এখানে খন্দকার মোস্তাক, খুনি, ওখানে সেনাপতি ইয়ার লতিফ, এখানে সেনাপতি জিয়াউর রহমান। বিশ্বাসঘাতক। জিয়াউর রহমান ১৫ আগষ্টে বাংলার ইতিহাসে নৃশংসতম হত্যাকান্ডের ছিলেন মাস্টারমাইন্ড। এসময় তিনি জিয়াউর রহমানকে জাতীয় চার নেতা হত্যাকান্ডেরও মাস্টারমাইন্ড বলে উল্লেখ করেন।
তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন,আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই।আমি কারো অন্ধ সমর্থক নই। কাজ করে যারা আমি তাদের পক্ষে বলি। আমি নোয়াখালীর স্বার্থে, রাজনীতির স্বার্থে আমার ভাই আব্দুল কাদের মির্জা ও একরামুল করিম চৌধুরী এমপি কে ক্ষমা করে দিয়েছি। নোয়াখালীতে আমি কোন কলহ রাখতে চাইনা। আমি কলহমুক্ত নোয়াখালী আওয়ামী লীগ চাই।
ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে কাদের আরও বলেন,আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপি নাকি রাজপথ ও ঢাকা দখল করবে। ফখরুল সাহেব আমি বলতে চাই আমাদের নেতাকর্মিরা নগর,মহানগর,জেলা,উপজেলা,ওয়ার্ড, পাড়া মহল্লায় পাহারায় থাকবে। বিশাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ফখরুল বলে খাঁচা।
লোডশেডিং হচ্ছে বলে স্বীকার করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এখন একটু লোডশেডিং হচ্ছে। মানুষ কষ্টে আছে। নেত্রীর চোখে ঘুম নেই।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন স্লোগান যদি দিতে হয় তাহলে বঙ্গবন্ধু ও প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে স্লোগান দিন। তিনি বলেন অনেক অত্যাচার নির্যাতনের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছি।আজকের সা¤প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধ লড়াই করে উন্নয়নের সড়ক বেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে দেশ।
সম্মেলনে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ এএইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে সভাপতি হিসেবে নাম ঘোষণা করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় আগামী ১৭ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে কাউন্সিলরদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, দলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রান ও সমাজকণ্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।