বাঙালির সবচেয়ে বড় লজ্জা যে আমারা বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে পারিনি। আমাদের স্বাধীনতার রুপকার, স্থপতিকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। যে বাঙালি আমাদেরকে মুক্তি দান করলেন তাকে বাঙালি রক্ষা করতে পারলো না। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অনেকেরই বিচার কাজ শেষ করা হয়েছে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। কিন্তু এখনো অনেকেই এই বিচারের বাহিরে আছে। তাই আজকের এই আগস্ট মাসে আমি অনূর্ধ্ব জানাচ্ছি সে সকল কুলাঙ্গারদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিৎ।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭৮৬তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সামরিক গবেষক মে. জে. (অব.) আব্দুর রশিদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
মে. জে. (অব.) আব্দুর রশিদ বলেন, আজকে ভোরের পাতা সংলাপের বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে আমাদের হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়। বাঙালির সবচেয়ে বড় লজ্জা যে আমরা বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে পারিনি। আমাদের স্বাধীনতার রুপকার, স্থপতিকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। যে বাঙালি আমাদেরকে মুক্তি দান করলেন তাকে বাঙালি রক্ষা করতে পারলো না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যদি আমরা খুব গভীরভাবে পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পাবো যে, এই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে নস্যাৎ করবার জন্য তাদের কিছু অনুচর প্রবেশ করিয়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সামরিক বাহিনীর মধ্যে এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে। যাদেরকে আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তীকালে চিনতে পারলাম খুনি মোশতাক, জেনারেল জিয়াদের মতো ব্যক্তিকে। এখন তারা মুক্তিযুদ্ধের ভেতর অনুপ্রবেশ করে পাকিস্তানিদের অনুচর হয়ে যে কাজটি করছিল আমরা বাঙালি হয়ে তাদেরকে চিহ্নিত করতে পারেনি। তাদেরকে যেহেতু আমরা চিহ্নিত করতে পারেনি তাদের দ্বারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা সম্ভব হয়েছে। তো আমাদের আগামী দিনের জন্য আমরা মনে করছি বাঙালি জাতি সত্তা বা বাঙালি মুক্তির জন্য যে চেতনা সেটা বুকে ধারণ করে বা যারা ধারণ করে না বা এই ধারণকারীদের মধ্যে যেসকল অনুচরকারী প্রবেশ করেছে তাদের অবস্থান চিহ্নিত করা। ১৫ই আগস্টের পূর্ববর্তী, ১৫ই আগস্ট ও এর পরবর্তী অবস্থা যদি আমরা বিশ্লেষণ করি তাহলে আমরা দেখতে পাবো যে যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল তারাই কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর্দার অন্তরালে কাজ করেছে। পর্দার অন্তরালে যারা কাজ করেছে তাদের সাথে আমরা এখনো কাজ করে যাচ্ছি এবং তারা যে পর্দার অন্তরালে থেকে আগামীতে আরও কি করবে সেটি ধারণা করা খুব দুষ্কর।