
রাজধানীর পল্লবীতে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যকর নতুন তথ্য জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব বলছে, কিবরিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে কাজ করেছে ‘ফোর স্টার’ গ্রুপের শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। মাত্র ৩০ হাজার টাকায় শুটার জনিকে দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের চুক্তি করা হয়।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম।
হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্তে নামে র্যাব। মঙ্গলবার গভীর রাতে আশুলিয়ার বিরুলিয়া ও টঙ্গীতে পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়, মনির হোসেন ওরফে পাতা সোহেল, সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজন।
গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক মোটিভ ও পরিকল্পনার বিস্তারিত জানতে পারে র্যাব।
র্যাব অধিনায়ক জানান, অপারেশনের নেতৃত্বে ছিল পাতা সোহেল ও বুকপোড়া সুজন। তারা শুটার জনি, কাল্লু ও রোকনকে ভাড়া করেন কিবরিয়াকে হত্যার জন্য। চুক্তিপত্র ছিল মোট ৩০ হাজার টাকা যার মধ্যে ১ হাজার টাকা অগ্রিম জনিকে দিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি অস্ত্রও সরবরাহ করে পাতা সোহেল।
অভিযানের মাঠ-পর্যায়ের নেতৃত্ব দেন ভাগিনা মাসুম নামের আরেকজন।
র্যাব জানায়, হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে কিবরিয়ার আগে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা ছিল। তবে গত ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক টানাপোড়েন, চাঁদাবাজি এবং স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক খারাপের দিকে যায়। এই সংঘাতই শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়।
গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পল্লবীর একটি হার্ডওয়্যার দোকানে ঢোকার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মুখোশ ও হেলমেট পরা কয়েকজন দুর্বৃত্ত ভেতরে ঢুকে কিবরিয়ার ওপর গুলি চালায়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দুর্বৃত্তদের একজন পাঞ্জাবি পরা, বাকিদের গায়ে শার্ট, মাথায় হেলমেট, মুখে মুখোশ, দোকানে থাকা ৯ জন আতঙ্কে ছুটে বের হয়ে যায় দুইজন কিবরিয়ার ওপর গুলি চালায়। তিনি পড়ে যাওয়ার পরও এক দুর্বৃত্ত আরও তিনটি গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
গুলির পর মোটরসাইকেলে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা ধাওয়া দেন। এক পর্যায়ে দুজন দুর্বৃত্ত একটি অটোরিকশায় ওঠে।
অন্যজন গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায় পালানোর সময় তারা অটোরিকশা দ্রুত না চালানোয় চালককেও গুলি করে। আহত চালক এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কিবরিয়াকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন কিবরিয়ার স্ত্রী পল্লবী থানায় মামলা করেন ৫ জনের নাম উল্লেখ করে। অজ্ঞাতনামা আরও ৮ জনকে আসামি করে।
র্যাব বলছে, পলাতকদের গ্রেপ্তার ও হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।