
আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র ব্রাশফায়ার করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। চট্টগ্রামে গুলি করে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এবার সিএমপি কমিশনার এ নির্দেশ দিলেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে ওয়্যারলেস সেটে সিএমপির সব সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক মৌখিক আদেশে তিনি টহল ও থানা পুলিশকে একযোগে তিনি এ নির্দেশনা দেন। তবে ব্রাশফায়ার নিরস্ত্র জনসাধারণের জন্য নয় উল্লেখ করে কমিশনার তা অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসীদের জন্য বলে নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ নভেম্বর নগরের বায়োজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগ চলাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান তালিকাভুক্ত আরেক সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। গুলিতে আহত হন এরশাদ উল্লাহ নিজেও। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগরীর অক্সিজেন-হাটহাজারীর পশ্চিম কুয়াইশ এলাকায় মো. মাসুদ ও মো. আনিছকে গুলি করে হত্যা, ২১ সেপ্টেম্বর চান্দগাঁওয়ে ইট-বালুর ব্যবসায়ী মো. তাহসীন হত্যা, এ বছর ২২ এপ্রিল রাউজানের গাজীপাড়ায় যুবদলকর্মী ইব্রাহিমকে গুলি করে হত্যা, ৩০ মার্চ বাকলিয়া এক্সেস রোডে প্রাইভেট কারে গুলি করে দুজনকে হত্যা করা হয়। গত ২৩ মে চট্টগ্রাম মহানগীর পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে আরেক সন্ত্রাসী আকবর আলীকে (ঢাকাইয়া আকবর) প্রকাশ্যে গুলি করলে দুইদিন পর তিনি মারা যান।
গত ৭ অক্টোবর মদুনাঘাটে বিএনপি কর্মী হাকীম চৌধুরী এবং ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের রাউজানে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবদল কর্মী মুহাম্মদ আলমগীর আলমকে।
পুলিশ বলছে, পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রধারীরা এসে নগরে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। এসব হত্যার ঘটনার মূল আসামিদের কেউ এখনো ধরা পড়েননি। সন্ত্রাসীরা সক্রিয় থাকলেও পুলিশ ঘটনা রোধে আগাম কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
কাজে আসছে না গোয়েন্দা নজরদারি। এর মধ্যেই সিএমপি কমিশনার নতুন আদেশ দিলেন।
‘ব্রাশফায়ারের’ আদেশের সিএমপি কমিশনার বলেছেন, ‘শটগান হবে না, চায়না রাইফেলও বাদ, এখন এসএমজি ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে।’ বেতারবার্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘দেখামাত্র ব্রাশফায়ার নিরস্ত্র জনসাধারণের জন্য নয়। যার হাতে অস্ত্র নেই, তার ওপর তো আর এসএমজি ইউজ করব না।
সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী যারা তাদের জন্য এই নির্দেশনা। আমার এলাকায় ঢুকে প্রকাশ্য দিবালোকে একটা খুন করে গেল। এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে তারা যেন আর সাহস না পায়। এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে চট্টগ্রাম নগরে ঢোকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। তারা যেন স্বপ্নেও এটি কল্পনা করতে না পারে, সেজন্যই এই ব্যবস্থা।’
বার্তায় পুলিশ সদস্যদের দণ্ডবিধি ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত, আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার সব পুলিশ অফিসারের আছে বলে আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়ে সব দায় কমিশনার বহন করার ঘোষণা দেন। যেকোনো পরিস্থিতি এবং নাশকতা এড়াতে টহল টিমগুলোকে এসএমজি ছাড়াও শিশা শটগান, দুইটি গ্যাস গান এবং টিম ইনচার্জকে নাইন এমএম পিস্তল বহন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া স্থায়ী চেকপোস্ট ৭টি থেকে বাড়িয়ে ১৩টি করতে আদেশ দিয়েছেন কমিশনার।