
ও বন্ধু আমার সৈয়দ রানা মুস্তফী'র বিশেষ ডেস্প্যাচ • আমার হৃদমাঝারের বন্ধুদের নিয়ে এই শিরোনামে লিখি আমি। প্রিয় বন্ধু ডনকে নিয়ে আগেও ‘ও বন্ধু আমার’ লিখেছি কয়েকবার। ডন হচ্ছে প্রকৃত নিউজ মেকার! তাই ওঁকে নিয়ে মাঝে-মধ্যেই লিখতে হয়। আগেরবার যখন ডনকে নিয়ে লিখেছিলাম দেশের একটি বিরল রেকর্ডের কৃতিত্ব ডনের সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক হিসেবে শোভা পায়নি তখনও। গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোডে আইকনিক ফোরাম বিল্ডিংয়ের পূবে ডন ও শান্তা প্রোপার্টিজের নতুন স্কাইস্ক্র্যাপার, দেশের টলেস্ট বিল্ডিং ‘দ্য পিনাকল্’ এরমধ্যেই চালু হয়ে গেছে। ৪০ তলার সুউচ্চ ‘দ্য পিনাকল্’ সর্বাধুনিক নির্মাণশৈলী, বিশ্বমানের ও গৌরব করার মত অ্যামিনিটিজ, নিরাপত্তার সর্বোচ্চ আয়োজন অর্থাৎ সব দিক থেকে এটি একটি ‘অহংকার-ভবন’ আমাদের! অভিনন্দন মো. হাবিব উল্লাহ ডনের এএম গ্রুপ ও খন্দকার মনিরউদ্দিন-এর শান্তা গ্রুপ।
ডনকে নিয়ে লেখার আবেগ ও তাগিদ আমার একটু বেশিই। তার কারণ সমাজ-অর্থনীতির দেশসেরা ম্যাগাজিন ‘অর্থকথা’ ও ডনের অটো মিউজিয়ামের প্রতিষ্ঠা মাস ও বছর সেই ১৯৯১, অর্থাৎ দীর্ঘ ৩৫ বছর আগে। ডনের প্রায় ৪ দশকের ব্যবসা জীবনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি সময় ব্যবসায়ী সমাজের নেতৃত্ব অর্জন ওঁর আরেক রেকর্ড। এই পথ পরিক্রমনে ডন ৪ বার নির্বাচিত হয়েছে বারভিডা’র প্রেসিডেন্ট পদে! দেশের রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের প্রাণের সংগঠন বারভিডা’র ইতিহাসে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি কখনোই এত বেশিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি। বারভিডা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি হিসেবেও ডন রেখে চলেছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। সারা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যর অ্যাপেক্স বডি এফবিসিসিআই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিআইএস-বিসিসিআই চেম্বারের প্রতিষ্ঠাতা ও কয়েকবারের প্রেসিডেন্ট হিসেবেও ডন উজ্জ্বল ও নাক্ষত্রিক ব্যক্তিত্ব।
প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের অসংখ্য হাজার হাজার কোটিপতি ও কতিপয় বিলিয়নিয়ারকে তাদের জীবনের শুরু থেকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ আমার হয়েছে। আমাদের জীবন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে সুদ বা ইন্টারেস্ট বেজড্ অর্থনীতিতে, ফলে সুদ নামের ফাঁদ আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে রেখেছে। সুদের জাল ছিন্ন করে হাবিব উল্লাহ ডন ওঁর বৈশিষ্টের কারণেই বিশিষ্ট। নিজেকে সুদমুক্ত করে নির্লোভ ডন প্রমাণ করেছে যে, সুদমুক্ত থাকলে সম্পদকে শতগুণ বাড়িয়ে দেন পরম করুণাময় আল্লাহ সুবহানআহু ওয়া তা’আলা!
সুদ নির্ভর ব্যাংকিংয়ে চূড়ান্ত অনিচ্ছুক ডনের যত বড় অংকের টাকাই ইন্টারেস্ট হিসেবে ওঁর অ্যাকাউন্টে আসুক না কেন সে অর্থের প্রতিটি টাকা দুঃস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রত্যাশাহীন দান হিসেবে বুঝিয়ে দিয়ে ভারমুক্ত হয় বন্ধু ডন। যাকাতের অর্থ ডন দেয় তাঁর শতভাগ হালাল উপার্জন থেকে। ডনকে জিজ্ঞাসা করি, দোস্ত, এরকম কঠিন সুদমুক্ত জীবন যাপন করো, সেই মানুষ তুমি এক্সিম ব্যাংকের স্পন্সর ডিরেক্টর হিসেবে কিভাবে তোমার কাজ সম্ভব করে তোলো? স্মিত হেসে ডন উত্তর দেয়ঃ দোয়া করো দোস্ত।
একসময় আমরা খানা-খাদ্যের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করতাম। দুখী মানুষের কথা চিন্তা আমরা সবাই করি কিন্তু তাদের প্রতি আমাদের মায়া-মমতা কাজে প্রমাণে প্রায়শই আমরা তেমন উদ্যোগী হই না। ডন বলতে শুরু করলোঃ বন্ধু, আসো, ফেসবুকে খাওয়া-দাওয়ার ছবি পোস্ট করা বন্ধ করি। ধীরে ধীরে ডন ফেসবুকে খানা-খাদ্যের ছবি পোস্ট করা বিরোধী একটি মানবিক আন্দোলন গড়ে তুললো! আমরা বন্ধুবান্ধবরা মিলে ফেসবুকে খাদ্যসামগ্রীর ছবি/ভিডিও পোস্ট করা বন্ধ করে দিলাম। আমাদের বন্ধু কমিউনিটিকেও আহ্বান জানাতে থাকলাম, ফলাফল-সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের বন্ধুদের অসংখ্য প্রোফাইলের নিউজফিড খাদদ্রব্যের ছবি বর্জিত হয়ে গেল! একান্তে চিন্তা করে দেখেছি, দেশের গাড়ি মার্কেটিং ও সেলসের প্রবাদপ্রতিম ডনের হৃদয়ে এমন মানবিক উদ্যোগের পটভূমি কী হতে পারে? আমার মানসপটে ভেসে উঠলো ডনের ধর্মীয় জীবনযাপনের ধারাবাহিকতা। অসংখ্যবার উমরাহ্, কয়েকবার হজ্জ, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রোজা, সুদমুক্ত ও অ্যালকোহল-বর্জিত দানশীল ডনের পরিচ্ছন্ন জীবনে তো এমন মানসিকতাই বাসা বাঁধার কথা!
৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের জিমে আমি, ডন ও আমাদের আরো কিছু বন্ধু ওয়ার্কআউট করতাম। ভয়াবহ ট্রাফিকের কারণে ডন এখন গুলশান ক্লাবের জিমে থিতু হয়েছে। বাড়ীতেও প্যারালাল জিম অ্যারেঞ্জমেন্ট করা আছে ওঁর। আমিও বাসগৃহে ওয়ার্কআউট ব্যবস্থা করতে বাধ্য হয়েছি। ওয়ার্কআউটের প্রতি ডনের গভীর মমতা ও লয়াল্টি এখন সর্বজনবিদিত।বিশ্বখ্যাত সুপার জিম ব্র্যান্ড টেকনোজিম ডনের হাতেই তুলে দিয়েছে তাদের বাংলাদেশ অপারেশনস-এর দায়িত্ব। ব্যবসা সাফল্য ও জিমপ্রেম ডনকে দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে আইকনে পরিণত করেছে। আমার দর্শন হচ্ছে-লেগে থাকলে চূড়ান্ত সফলতা করায়ত্ব হতে বাধ্য। ডনের ক্ষেত্রে এই দার্শনিক সত্য অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত হয়েছে। টেক জায়ান্ট নেশন চিনের অপূর্ব সুন্দর এসইউভি গাড়ি জিট্যুর-এর এক্সক্লুসিভ এজেন্সি ও চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের জিএসএ-এর গর্বিত চেয়ারম্যান বন্ধু হাবিব উল্লাহ ডন!
সবদিক থেকে সফলতার প্রবল স্রোতে ভেসে যাবার যাত্রী আমার এই প্রিয় বন্ধুটি। ওঁকে নিয়ে লিখতে থাকলে রীতিমত সাতকাহন হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং আজকের মত এখানেই ইতি টানছি ডন ও ওঁর প্রেমময় পরিবারের জন্যে দোয়া ও ভালোবাসা জানিয়ে।
(লেখাটি অর্থকথার সম্পাদক সৈয়দ রানা মুস্তফী'র ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেওয়া হয়েছে)