
বেসামরিক নাগরিককে মারধর, গ্রেপ্তারকৃতদের নির্যাতন, অধীনস্থ পুলিশ সদস্যের পরিবার ভাঙার চেষ্টা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে ডিআইজি থেকে এএসপি পদমর্যাদার পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) পৃথক পাঁচটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন—রাজশাহীর সাবেক ডিআইজি আনিসুর রহমান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ শিবলী কায়সার, র্যাবের অতিরিক্ত এসপি জুয়েল চাকমা, ডিএমপির সচিবালয় নিরাপত্তা বিভাগের সাবেক এডিসি রাজীব দাস এবং বরিশাল আরআরএফের এএসপি আফজাল হোসেন।
সাবেক ডিসি মোহাম্মদ শিবলী কায়সারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রংপুরের এক ব্যবসায়ী পরিবারের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজির মামলা করতে আসা ব্যক্তিকে তিনি প্রকাশ্যে মারধর করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ১১ মার্চ ব্যবসায়ী করিম উদ্দিন ভরসার পুত্রবধূ লিপি খান ভরসা অভিযোগ করেন, শিবলী কায়সার ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। এর দুদিন পর লিপির ম্যানেজার পলাশ হাসান রংপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে শিবলী কায়সার থানায় গিয়ে তাকে মারধর করেন এবং অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বেসামরিক ব্যক্তির প্রতি এমন আক্রমণাত্মক আচরণ ও তার বিরুদ্ধে চলমান বিভাগীয় মামলার কারণে তিনি দায়িত্বে বহাল থাকলে তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়তে পারে।
অতিরিক্ত এসপি জুয়েল চাকমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৩ সালের আগস্টে পাঁচজন চিকিৎসককে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তাদের নির্যাতন করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চিকিৎসক জিল্লুর রহমানসহ কয়েকজনকে ঢাকার বাইরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়, আদালতে যথাসময়ে হাজির না করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের উদ্দেশ্যে ভয়ভীতি, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়।
তিনি সাংবাদিকদের সামনে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ চালান এবং গোপনীয় তথ্য অনলাইনে ফাঁস করেন, যা বিভাগীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থি।
বরিশালের আরআরএফে কর্মরত এএসপি আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এক কনস্টেবলের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে সংসার ভাঙার চেষ্টা করেন। তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং নানা কুপরামর্শ দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
ডিআইজি আনিসুর রহমান গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এবং এসপি পদে কর্মরত এডিসি রাজীব দাস ২০২৪ সালের ২ নভেম্বর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি না নিয়েই তারা কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগেও অনুপস্থিতির অভিযোগে আরও ২১ পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।