
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর নিয়মিত অভিযান পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
রবিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় নুরুল হক নুর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের শিল্প এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করছে।
এগুলো নিরসনের জন্য নিয়মিত যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। অভিযান পরিচালনা করলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে দেশ ও সাধারণ মানুষ রেহাই পাবে। চিহ্নিত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে অভিযান পরিচালিত করতে হবে। কারখানায় হামলা-ভাঙচুরের পেছনে আসলে দেশি-বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্র রয়েছে। দিন দিন হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা বাড়ছে। দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে যৌথ বাহিনীর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা জরুরি।’
নুরুল হক নুরু বলেন, ‘হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। অথচ কিছু ব্যক্তি রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে সারা দেশে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশকে আবারও গণ-অভ্যুত্থান পূর্ববর্তী পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘গণ অধিকার পরিষদ একটি অর্গানিক দল। গণ আন্দোলনের মধ্যে এ দলটি গঠন করা হয়েছে। দ্বি কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষে একশত নারী সংরক্ষিতসহ ৪০০ আসনের আগের নির্বাচনী পদ্ধতিতে এবং উচ্চ কক্ষ ‘পি আর’ পদ্ধতি ব্যবস্থায় সদস্য নির্বাচনের বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদের প্রস্তাব রয়েছে। তবে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কে এমপি হবে সেটা আগে জানার সুযোগ নেই। যার ফলে বাংলাদেশের পেশীশক্তি, কালো টাকার প্রভাব রাজনীতিতে আর থাকবে না।
কেন্দ্র দখল করতে যে ভায়োলেন্স হয় সেটাও থাকবে না। জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি স্থানীয় পর্যায়ের সবগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলেও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন আগে হওয়া উচিত। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচন। এতে করে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর চরিত্র দেখতে পেতাম। প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে কিনা সেটাও বুঝবার সুযোগ হতো।’
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করা সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, প্রশাসন কোথাও অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না। রাজধানীসহ দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কারা অপরাধ করছে, রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে সরকারকে আবারও নতুন করে জনরোষের মুখোমুখি হতে হবে।’
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব মো. জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও বৈশাখী টিভির ব্যুরো চিফ গোলাম মওলা মুরাদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন সিএমইউজের সাবেক সভাপতি এনটিভির ব্যুরো প্রধান সামশুল হক হায়দারী, দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি মুস্তফা নঈম, সিএমইউজের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, গণ অধিকার পরিষদের নাসির উদ্দিন, ডাক্তার এয়াকুব ও নেত্রী নাসরীন আকতার। অনুষ্ঠানে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় এবং চট্টগ্রামের নেতারা ছাড়াও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমের সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।