
মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মধু উৎপাদন ও মৌ চাষি উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। দিনাজপুর, বাগেরহাট, বরিশাল, গাজীপুর, কুমিল্লা ও সিলেট—এই ছয়টি জেলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যেকোনো জেলার প্রার্থীরা অংশ নিতে পারবেন। প্রশিক্ষণের দরকারি তথ্য জানাচ্ছেন সাজিদ মাহমুদ
কেন এই প্রশিক্ষণ : বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) গাজীপুরের উপব্যবস্থাপক মো. আজহারুল ইসলাম ও মৌমাছি পালন কর্মসূচির সম্প্রসারণ কর্মকর্তা খন্দকার মেহেবুব জামান জানান, দেশের কর্মহীন বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও এর মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌমাছি পালন করে খাঁটি মধু উৎপাদনই এর মূল লক্ষ্য। প্রশিক্ষণ শেষে কিভাবে আধুনিক পদ্ধতিতে দেশি-বিদেশি জাতের মৌমাছি পালন করতে হয়, তা শিখে বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন করতে পারবেন উদ্যোক্তারা। একই সঙ্গে তাঁরা মধু বিপণন ও বাজারজাতকরণ পদ্ধতিগুলোও জানতে পারবেন। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের বিনামূল্যে মৌমাছি পালনের বক্স দেওয়া হবে।
প্রশিক্ষণ-পরবর্তীতে বাণিজ্যিক কাজ করতে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়লেও সহায়তা দেবে বিসিক।
উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রশিক্ষণ দেবে বিসিকপ্রশিক্ষণের যোগ্য যাঁরা : যেকোনো বয়সের বেকার পুরুষ বা নারী এই প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। তবে মৌমাছি চাষ ও খাঁটি মধু উৎপাদনে আগ্রহ আছে, এমন প্রার্থীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে অষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাস।
আগ্রহীরা নিজ নিজ জেলার বিসিক অফিস এবং বিসিকের ওয়ানস্টপ সার্ভিসের (https://ossbscic.gov.bd/training-list) মাধ্যমে প্রশিক্ষণের খোঁজখবর নিতে পারবেন। ভর্তির আবেদনও এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। প্রতি মাসেই নতুন ব্যাচে প্রার্থীদের প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
প্রশিক্ষণের মেয়াদ ও ফি : প্রশিক্ষণের মেয়াদ মোট পাঁচ দিন।
প্রশিক্ষণ নিতে প্রার্থীদের শুধু আবেদন ফির (২০০ টাকা ও ভ্যাট) টাকা জমা দিতে হবে। প্রতিটি ব্যাচে ১৫ থেকে ২০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা।যা যা শিখানো হবে : বিসিক জেলা কার্যালয় বাগেরহাটের প্রমোশন কর্মকর্তা মো. শরীফ সরদার জানান, এই প্রশিক্ষণে মৌমাছি পালনের যাবতীয় কৌশল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ কোর্সে রাখা হয়েছে—কিভাবে মৌ চাষ শুরু করতে হবে, কী কী পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করবেন, মৌমাছি রোগে আক্রান্ত হলে কোন ওষুধ দিতে হবে, মৌমাছি পরিচর্যার পদ্ধতি, কোথায় কখন কোন ধরনের মধুর উৎপাদন করা যাবে, মধুর গ্রেডিং বা পরিশোধন, বিপণন ও বাজারজাত কিভাবে করতে হবে ইত্যাদি।
বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদনের জন্য বিসিকের প্রশিক্ষকদের সঙ্গে থেকে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পাবেন প্রশিক্ষণার্থীরা।
কর্মসংস্থান ও আয়-রোজগার : প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীরা বাণিজ্যিকভাবে মৌ চাষ ও মধু উৎপাদন শুরু করতে পারবেন। স্বাধীন পেশা হিসেবে বর্তমানে অনেকেই এই পেশায় যুক্ত হচ্ছেন। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে মধুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই এর বাজারজাতকরণ নিয়ে খুব একটা ঝামেলা নেই। তা ছাড়া চাহিদা থাকায় এই খাতে আয়ও বেশ ভালো। আজকাল উদ্যোক্তারা অনলাইনে সারা দেশে মধু বিক্রি করছেন। একজন সফল মৌ চাষি বা উদ্যোক্তা চাইলে আরো অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারেন।