প্রকাশ: শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:০৩ পিএম

ঢাকায় ব্রিটেনের সাবেক মন্ত্রী ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গুলশানের একটি সরকারি জমিতে ফ্ল্যাট গ্রহণের ঘটনায় অভিনব জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ উঠেছে, টিউলিপের প্রভাবেই রাজউকের প্রায় দুই বিঘা জমি অবৈধভাবে দখল করে এবং নিয়ম ভেঙে প্লট বিভাজনের অনুমোদন নেয় ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড। এর বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানটি তাকে উপহার দেয় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, গুলশান-২ এর ৭১ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা রয়েছে টিউলিপ সিদ্দিকের নামে। গেল মার্চে দুদক তদন্তে ওই ফ্ল্যাটের তথ্য পেয়ে আদালতের নির্দেশে তা জব্দ করে। এরপর তদন্তে উঠে আসে বহু বছর ধরে গোপনে চলা জমি দখল ও ফ্ল্যাট বরাদ্দের একাধিক অনিয়মের চিত্র।
তথ্যমতে, ১৯৬৪ সালে তৎকালীন ঢাকা ইম্রুভমেন্ট ট্রাস্ট পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরীকে শর্তসাপেক্ষে দুই বিঘা জমি বরাদ্দ দেয়, যা হস্তান্তরের সুযোগ ছিল না। কিন্তু ১৯৭৪ সাল থেকে জমিটি একাধিক হাতবদল হয়ে যায় ইস্টার্ন হাউজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের কাছে। এরপর ২০০০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব কাজে লাগিয়ে ইস্টার্ন হাউজিংকে ওই জমিতে নির্মাণ ও ৩৬টি ফ্ল্যাটে বিভাজনের অনুমোদন করায় রাজউক। ওই সময় টিউলিপ সিদ্দিক প্লটটির একটি ফ্ল্যাট—২০১ নম্বর—গ্রহণ করেন।
এ ঘটনায় দুদক আগামী সপ্তাহে টিউলিপ সিদ্দিক ও রাজউকের সাবেক কর্মকর্তা সরদার মোশাররফ হোসেনকে আসামি করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের প্রয়াত চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম এবং রাজউকের সাবেক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ সেলিম মারা যাওয়ায় তাদের আসামি করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন বলেন, ‘রাজউকের জমি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বরাদ্দ দেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। এ অনিয়মের দায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর এড়াতে পারে না।’
উল্লেখ্য, এর আগে পূর্বাচলে শেখ পরিবারের ৬০ কাঠার প্লট নিয়ে জালিয়াতি মামলায়ও টিউলিপ সিদ্দিকের নাম উঠে এসেছিল।