রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

শিরোনাম: মেজর সিনহা হত্যা মামলা : হাইকোর্টে আপিল শুনানি শুরু   ইইউ তাদের ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশসহ সাতটি দেশকে যুক্ত করেছে   ৮০০ কোটি টাকা লোপাটের আসামি সালমান ও শিবলী রুবাইয়াতসহ ৩০ কর্মকর্তা   টাইমেসর ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ড. ইউনূস   তারেক রহমানের বেড়ালের ছবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড়   বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা    সারা দেশে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
সেনাপ্রধানের সাথে সাক্ষাৎ: হাসনাতের পোস্ট বনাম বাস্তবতা
রনি মজুমদার
প্রকাশ: রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫, ১:০৪ পিএম আপডেট: ২৩.০৩.২০২৫ ১:৪৯ PM

সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ, ছবি: সংগৃহীত

সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ, ছবি: সংগৃহীত

১১ মার্চ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমি (সারজিস আলম) এবং হাসনাত উপস্থিত ছিলাম। আমাদের দলের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও থাকার কথা ছিল, তবে ব্যক্তিগত কারণে তিনি শেষ মুহূর্তে যেতে পারেননি।

সম্প্রতি এই বৈঠক নিয়ে হাসনাত তার ফেসবুক পোস্টে কিছু তথ্য শেয়ার করেছেন, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে তার পোস্টের কিছু ব্যাখ্যার সাথে আমার ভিন্নমত রয়েছে, যা বাস্তব পরিস্থিতির সাথে পুরোপুরি মেলে না।

সাক্ষাতের মূল প্রতিপাদ্য

আমাদের প্রশ্নের পর সেনাপ্রধানের সামরিক উপদেষ্টা জানতে চান, আমরা এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে চাই কি না। আমরা আগ্রহ প্রকাশ করলে সেনানিবাসে আমাদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা হয়। সেখানে সেনাপ্রধান, হাসনাত এবং আমি উপস্থিত ছিলাম।

এ ধরনের সংলাপের বিভিন্ন ব্যাখ্যা হতে পারে। একজন ব্যক্তি হিসেবে সেনাপ্রধানের বক্তব্য ও ভাবনাকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা সম্ভব। হাসনাত তার অভিমত প্রকাশ করেছে, তবে আমি কিছু বিষয়ে তার সাথে দ্বিমত পোষণ করি।

আমার দৃষ্টিকোণ থেকে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে সরাসরি ‘প্রস্তাব’ হিসেবে দেখার চেয়ে ‘অভিমত প্রকাশ’ হিসেবে দেখা উচিত। অবশ্যই তার ভাষা ছিল আগের তুলনায় বেশি সরাসরি, তবে সেটি চাপ দেওয়ার পর্যায়ে পড়ে না। বিশেষ করে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ গঠনের প্রসঙ্গে বলা হয়েছিল, এটি না হলে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও স্থিতিশীলতা কীভাবে প্রভাবিত হতে পারে।

যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল

হাসনাত তার পোস্টে উল্লেখ করেছে যে, আলোচনায় উঠে এসেছিল—

* ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ গঠনের সম্ভাবনা

* সাবের হোসেন, শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সোহেল তাজের ভূমিকা

* আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকলে ও না থাকলে কী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে

* নির্বাচনে না এলে আওয়ামী লীগ কবে ও কীভাবে ফিরতে পারে

* রাজনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা ও অস্থিতিশীলতার সম্ভাবনা

এগুলো সত্য, তবে হাসনাতের পোস্টে কথোপকথনের যে টোন তুলে ধরা হয়েছে, তা কিছুটা অতিরঞ্জিত মনে হয়েছে। কথোপকথনটি ছিল সরাসরি, তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

‘তোমরা কিছু জানো না’ মন্তব্যের প্রেক্ষাপট

এক পর্যায়ে আলোচনায় হাসনাত বলেছিল- ‘যে দল এখনো ক্ষমা চায়নি, অপরাধ স্বীকার করেনি, সেই দলকে কিভাবে ক্ষমা করা সম্ভব?’ এর উত্তরে সেনাপ্রধান বলেন-

‘তোমরা কিছু জানো না। তোমাদের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞার অভাব রয়েছে। আমরা এই সার্ভিসে আছি অন্তত ৪০ বছর। তোমার বয়সের থেকেও বেশি।’

হাসনাত এই মন্তব্যটিকে সেনাপ্রধানের ‘রাগান্বিত প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে উপস্থাপন করেছে, তবে আমার মতে, এটি ছিল একজন সিনিয়র কর্মকর্তার অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ তোলার সাধারণ ভঙ্গি। এটি তীব্র ক্ষোভের প্রকাশ ছিল না, বরং অভিজ্ঞতার পার্থক্য বোঝানোর একটি কৌশল।

সেনাপ্রধানের পদত্যাগ প্রসঙ্গ

সম্প্রতি সেনাপ্রধানের পদত্যাগ নিয়ে কিছু আলোচনা শোনা যাচ্ছে, তবে এটি আমাদের বক্তব্য নয়। আমাদের লক্ষ্য হলো- নীতিগত অবস্থানে থাকা, ব্যক্তিবিশেষকে টার্গেট করা নয়।

আমাদের দলের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ করণীয়

আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সেনাবাহিনীর যোগাযোগ একটি সাধারণ বিষয়। কিন্তু এসব আলোচনা বিশ্বাসযোগ্য রাখার জন্য গোপনীয়তা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

সেনাপ্রধানের সাথে আমাদের কথোপকথনকে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে প্রকাশ করাটা ভবিষ্যতে অন্য যে কোনো সংলাপের ক্ষেত্রে আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে। এই কারণে, আমি মনে করি- এ ধরনের সংলাপ দলের অভ্যন্তরে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।

আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে

আমরা ব্যক্তিগত বন্ধন ও আদর্শের ভিত্তিতে একসাথে লড়াই করছি। হাসনাতের যে কোনো বিপদের মুখে আমরা তার পাশে দাঁড়াব। কিন্তু যখনই কোনো বক্তব্য সংশোধনের প্রয়োজন মনে করব, তখন সেটিও স্পষ্টভাবে প্রকাশ করব।

আমাদের বিবেকবোধই আমাদের পথনির্দেশ করবে। যেমনটি করেছিল যখন আমরা ৬ জুন প্রথম কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজপথে দাঁড়িয়েছিলাম, আবার যেমনটি করেছিল যখন আমরা হাসিনা শাসনামলে রক্তচক্ষুর সামনে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলাম।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘যেকোনো ভার্সনের আওয়ামী লীগ’ পুনঃপ্রবেশের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com