শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়ার আয়োজন রাষ্ট্রপতির   খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে জার্মানি থেকে আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স    বাংলাদেশে এলো তারেক রহমানের বুলেটপ্রুফ গাড়ি, দাম কত?   হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর যাবেন খালেদা, মধ্যরাতে আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স   নড়াইল-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মনিরুল ইসলাম   লাবিব গ্রুপের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আলমগীরের সঙ্গে ইউএই রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ    পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
প্রতিদিন শত শত মানুষের জন্য ফ্রি ইফতারের আয়োজন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ৫ মার্চ, ২০২৫, ১০:৫০ AM

করোনার প্রথম লকডাউন থেকে যাত্রা শুরু করা ‘মেহমানখানা’ এখন মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন অসহায়, দরিদ্র ও পথচারীদের জন্য বিনামূল্যে ইফতার আয়োজন করে আসছে এই সংগঠন। শুরুটা ছিল সংকটকালীন সময়ে, কিন্তু এখন এটি ধারাবাহিকভাবে চলছে গত তিন বছর ধরে।

মেহমানখানার একজন স্বেচ্ছাসেবী জানান, “প্রতিদিন ৩০ রোজায় ৩০ সোজা ইফতার করানো হয়। রোজার প্রথম দিন ৩০০-৪০০ মানুষ থাকলেও দ্বিতীয় দিন সেটি বেড়ে ৫০০-৬০০ হয়ে যায়। গতকাল অনেক মানুষকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে, তাই পরদিন আরও ২০০ জনের বাড়তি খাবার যোগ করা হয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৭০০ মানুষের জন্য ইফতার আয়োজন করা হচ্ছে।”

ইফতারের আয়োজনে থাকে ছোলা, মরিচ, খেজুর, লেবুর শরবত, খিচুড়ি এবং কখনো দেশীয় ফল। সামর্থ্য অনুযায়ী এই মেনুতে বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়।

মেহমানখানার স্বেচ্ছাসেবী আরো জানান, অর্থের উৎস সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো ধারণা নেই। সাধারণ মানুষের কন্ট্রিবিউশনেই এটি পরিচালিত হয়। কেউ এক বস্তা ছোলা, কেউ খেজুর, কেউ লবণ এনে দেন। এমনকি তারা নিজেরাই জানেন না কীভাবে প্রতিদিনের খাবারের ব্যবস্থা হয়।

মেহমানখানার একজন প্রতিষ্ঠাতা বলেন, “আমরা ঘুম থেকে উঠলে দেখি দরজার সামনে খাবারের উপকরণ পড়ে আছে। কখনো চাল, ডাল, কখনো নুন, তেল বা পেঁয়াজ। আমাদের ৫০-৬০ জন স্বেচ্ছাসেবী মিলে সেগুলো প্রস্তুত করে ইফতার বানাই।”

মেহমানখানার প্রতিষ্ঠাতা বলেন, “আমাদের কোনো বড় ডোনার নেই, আমরা নিজেরা শুরু করেছিলাম। কিন্তু কখনোই বিকাশ বা নগদের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করিনি। কারণ, আমি বিশ্বাস করি—সৃষ্টিকর্তা যদি এই কাজের জন্য আমাকে বেছে নিয়ে থাকেন, তবে তিনিই প্রয়োজনীয় রিজিকের ব্যবস্থা করবেন।”

এখানে শুধু খাবার দেওয়া হয় না, অনেক অনাথ ও অসহায় কিশোরী মেয়েরাও মেহমানখানার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজেদের নতুন জীবনের পথ খুঁজে পেয়েছে। “অনেক মেয়েই একসময় এখানে ইফতার নিতে আসত, এখন তারা আমাদের স্বেচ্ছাসেবক। তারা আমাকে মা বলে ডাকে, এখানে থাকে, লেখাপড়া করে। এখন আমাদের প্রায় ২৫-৩০ জন নিয়মিত স্বেচ্ছাসেবী আছে, আর রমজান মাসে স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা আরও বাড়ে,” বলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা।

মেহমানখানার প্রতিষ্ঠাতা বলেন, “এই শহরে কোটি কোটি টাকা অপচয় হয়, কিন্তু আমার মতো একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে এত বড় আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে—এটা সৃষ্টিকর্তারই ইচ্ছা। আমি চাই, এই কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক এবং আরও বেশি মানুষ যেন এখানে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে।”

এটি শুধুই একটি ইফতার আয়োজন নয়, বরং ভালোবাসা, মানবিকতা ও আত্মত্যাগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সমাজের বিত্তবানদের উচিত এই মহৎ উদ্যোগে আরও বেশি অবদান রাখা, যেন প্রতিটি অভুক্ত মানুষ অন্তত একটি পরিপূর্ণ ইফতার পেতে পারে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com