
গাজা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থাপিত ‘ব্যাপক নিন্দিত’ স্থানচ্যুতি প্রস্তাব মোকাবিলায় আলোচনা করতে মঙ্গলবার কায়রোতে বৈঠকে বসেছেন আরব নেতারা। তাঁরা গাজার প্রশাসন ও পুনর্গঠনের জন্য একটি পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই।
মিশরের পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য জরুরি আরব লীগ শীর্ষ সম্মেলনের আগে সোমবার মিশরের রাজধানীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করেন।
খসড়া প্রস্তাবে গাজার জন্য ৫৩ মিলয়ন ডলার পুনর্গঠন পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে স্থানচ্যুত না করেই উপত্যকাটির পুনর্নির্মাণের লক্ষ্যে এই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এই পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) প্রথম ছয় মাস গাজা প্রশাসন কমিটির মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি তদারকিতে জড়িত থাকবে। পরিকল্পনাটি পিএর গাজায় সম্পূর্ণ প্রত্যাবর্তনকে সমর্থন করে।
ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) কার্যনির্বাহী কমিটির সেক্রেটারি হুসেন আল-শেখ সম্মেলনের ফাঁকে মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ও আরব উভয়ের পক্ষে তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা এবং বিধ্বংসী ইসরায়েলি যুদ্ধের অবসান ঘটানো।’
হুসেন আল–শেখ গাজার জন্য বিরোধ-পরবর্তী পরিকল্পনার মূল উপাদানগুলোর রূপরেখা দিয়েছেন। ‘প্রথমত, স্থিতিশীলতা ও সুরক্ষা পুনরুদ্ধারের জন্য ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার অপরিহার্য। এটি ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমিতে নিজেকে পুনরায় বসবাস ও পুনর্নির্মাণ শুরুতে সহায়তা করবে।’
তিনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) গাজায় ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন। ক্রান্তিকালীন সময় কাটিয়ে পিএ স্থিতিশীলতা ও ক্ষমতায়নে কাজ করবে।
হুসেন আল–শেখ বলেন, ‘স্বাধীন ফিলিস্তিনি ব্যক্তিত্বের একটি কমিটি এই প্রক্রিয়াটির তদারকি করবে। কমিটির প্রধানকে একজন মন্ত্রী ও উপ -প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।’
শেখ ফিলিস্তিনি ও আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সম্পর্কের গুরুত্বকে আরও জোর দিয়ে বলেন, ‘ফিলিস্তিনি-আরব সমন্বয় অবশ্যই এই খাত থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানচ্যুতি রোধ করতে সহায়ক হবে।’
হামাসকে গাজার নিয়ন্ত্রণ ত্যাগ এবং অস্ত্র ত্যাগের আহ্বান জানিয়ে হুসেন আল–শেখ বলেন, ‘হামাসকে অবশ্যই গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ত্যাগ করতে হবে। ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এটিকে একটি রাজনৈতিক দল হওয়া উচিত।’
হুসেন আরও বলেন, ‘হামাসকে অবশ্যই পিএলওর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। একটি একক কর্তৃপক্ষ, এক আইন, একই অস্ত্র ও একটি আইনকে স্বীকৃতি দিতে হবে, যতক্ষণ না এটি রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈধ অঙ্গ হয়ে যায়।’
হামাস এর আগে গাজার প্রশাসনকে ফিলিস্তিনিদের পরিচালিত কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তবে স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠীটি আরব দেশগুলোরসহ বিদেশি বাহিনীর প্রবেশ প্রত্যাখ্যান করেছে।